Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

গবেষণায় ফেলোশিপ দেয়ার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত আলোচনা সভা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বাঙালিকে ধ্বংস করার জন্য ভাষার ওপর আঘাত হানা হয়েছিলো মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি রক্ত দিয়ে ভাষার অধিকার আদায় করেছিলো। তাই যারা ভাষা নিয়ে দৈন্যতায় ভুগছেন, তাদের বাংলা ভাষার ইতিহাস জানা প্রয়োজন। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকার সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
বাংলা ভাষার জন্য পাকিস্তানিরা একের পর এক অত্যাচার করেছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই দিনে রক্তের অক্ষরে মাকে মা ডাকার অধিকার অর্জন করেছি। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উজানে নাও ঠেলেই আমাদের যেতে হয়েছে। আর সেভাবেই আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। আর সেভাবেই আমরা এগিয়ে যাবো। আমরা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক উন্নতি, সবকিছু মিলিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়াবে।

মাতৃভাষায় শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ভাষা ছাড়া কখনও নিজের মনের কথা প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। জাতির পিতা একথা বলেছেন, অন্য ভাষা শেখায় তার আপত্তি নেই। মাতৃভাষায় শিক্ষা হলে কোনো কিছু জানা বোঝা বা প্রকাশ করবার সুবিধা অনেক বেশি। পাশাপাশি অন্যান্য ভাষা শিক্ষা নেয়াও ভালো।

সহজে ভাষা শেখার জন্য একটি অ্যাপস চালু করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেয়েছি। এই স্বীকৃতি পাওয়ার পর আমার মনে হলো আমাদের ওপর অনেক বড় দায়িত্ব এসেছে। পৃথিবীর অনেক দেশের মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নিজের ভাষার পাশাপাশি এক-দুইটা ভাষা আমাদের ছেলেমেয়েরা শিখতে পারে। এখন ডিজিটাল যুগ অনেক সহজেই এগুলো শেখার সুযোগ আছে। ২০০১ সালে মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম, সেবছর আমি সরকার আসতে পারিনি। সেসময় যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা এই কাজ বন্ধ করে দেয়। কেন বন্ধ করেছিল জানি না। তারা অবশ্য ভালোই করেছিল একাজ করে। আমি আবার ক্ষমতায় এসে নিজের মতো করে মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি, এটারও ইতিহাস আছে। আমাদের ওপর উর্দু চাপিয়ে দেয়া হলো এবং বলা হলো উর্দু নাকি মুসলমানদের ভাষা। আর বাংলা যেখান থেকে এসেছে এটা নাকি হিন্দু ভাষা। ভাষার উৎপত্তি কোথায় যুগের সঙ্গে সেটা পরিবর্তন হয়। এজন্য আমরা মনে করি সেভাবে একটা ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
আন্তজার্তিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে গবেষণার জন্য সমস্ত কিছু করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য কিছু ফান্ড লাগলেও আমি দেবো। গবেষণা ছাড়া কোনো বিষয়ই উৎকর্ষ সাধন করা যায় না। আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পেরেছি গবেষণার ফলেই। সুতরাং এই ইন্সটিটিউটের দরকার সারা বিশ্বে যতগুলো ভাষা আছে সবকিছু নিয়ে সংরক্ষণ করা, গবেষণা করা ও ভাষার ইতিহাস জানা।

আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের কাজের সুবিধার জন্য আমরা ৯টি ভাষার একটি অ্যাপ করে দিয়েছি। ডিজিটাল সিস্টেমে যে কেউ যেন ভাষা শিখতে পারে আমরা সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শিশুরা তাড়াতাড়ি ভাষা শিখতে পারে। তারা একসঙ্গে দুই-তিনটা ভাষা দ্রুত শিখে নেয়। তবে কোনটা ধারণ করবে সেটা আসে পরে। মাতৃভাষায় শিক্ষাটা হলে সবকিছু জানা, বোঝা ও উপলব্ধি প্রকাশ করার উপকার অনেক বেশি।

এখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের যুগ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং করে টাকা উপার্জন করতে পারছে। আমরা তাদের লার্নিং এবং আর্নিংয়ের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারা এখন একেবারে ইউনিয়নে বসে বিদেশে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারছে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ