পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লাখ লাখ জাকেরান-আশেকান ও মুসুল্লিয়ানের বুকফাঁটা কান্না আর আহাজারী নিয়ে আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে উরশ শরিফ সম্পন্ন হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার সকালে। গত শুক্রবার জুমার নামাজ বাদ মিলাদ ও ফাতেহা শরিফ পাঠসহ পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু.ছে.আ.) ছাহেবের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে এ পবিত্র উরশ শরিফের সূচনা হয়। এবারে ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ বিশে^র অন্তত ২৫টি দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মুসুল্লি এবং জাকেরান ও অশেকান বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের উরশ শরিফে অংশ নেন। এছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিপুল ভক্তও আলাদা স্থান ও ব্যবস্থাপনায় ভিন্নভাবে এ উরশে অংশ নেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতের শেষ প্রহরে রহমতের সময়ে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ এবং মোরাকাবাসহ জিকিরের মাধ্যমে দিনের কার্যক্রমের সূচনা হয়। বিশাল জামাতে লাখ লাখ মুসুল্লি ফজরের নামাজ আদায়ন্তে ফাতেহা শরিফ পাঠন্তে দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন। পরে খতম শরিফ আদায়ন্তে পীর ছাহেবের কবর জিয়ারতের নিয়তে পুনরায় ফাতেহা শরিফ পাঠ শেষে আখেরি মোনাজাতেরর মাধ্যমে গত কয়েকদিনের এ বিশাল ধর্মীয় মিলন মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। প্রায় ২৮ মিনিটের এ মোনাজাতে লাখ লাখ মুসুল্লি চোখের পানি আর আহাজারী নিয়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের দরবার পানাহ চাবার পাশাপাশি নিজ ও পরিবারের কষ্টের কথা তুলে ধরে তা থেকে পরিত্রাণ কামনা করেন। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুর আল আমীনের রহমত কামনা করা হয়। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ার হতাহতদের জন্যও বিশেষ দোয়া করা হয়। তবে মঙ্গলবারও আসর নামাজ পর্যন্ত বিশ^ জাকের মঞ্জিলে ওয়াজ নসিহতসহ তরিকায়ে নকসবন্দিয়া মোজাদ্দেদিয়ার নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন আমল ও ফয়েজ অনুসরণ করা হচ্ছে।
আজ বুধবার পুনরায় সম্মিলিতভাবে এ দরবার শরিফে মাজার শরিফ সমূহ জিয়ারত করা হবে। গত কয়েকদিনই লাখ লাখ জাকেরান ও আশেকানসহ মুসুল্লিয়ানদের আল্লাহ-আল্লাহ জিকিরে প্রকম্পিত ছিল বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত বিশাল এলাকা।
গত কয়েকদিনই দেশ-বিদেশের লাখ লাখ জাকেরান ও আশেকানসহ মুসল্লিয়ানবৃন্দ এ দরবার শরিফে ওয়াক্তিয়া নামাজ থেকে শুরু করে মোরাকাবা-মোশাহেদা, জিকির এবং ফাতেহা শরিফ এবং খতম শরিফসহ দরুদ, মিলাদ ও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দিন রাত ইবাদত বন্দেগীতে সময় কাটিয়েছেন। মহাপবিত্র উরশ শরিফ উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের খাদেম বৃন্দসহ দেশের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরামগণ ওয়াজ করছেন। এমনকি দিন রাত ২৪ ঘণ্টাই লাখ লাখ জাকেরান ও আশেকান সহ মুসুল্লিয়ানবৃন্দ বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেবের কবর জিয়ারত করছেন। এ উরশে সমবেত সবার জন্য অজু-গোসল ও আহারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা পরে আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে উরশ শরিফের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার পরে লাখ লাখ অংশগ্রহণকারী ঘরে ফিরতে শুরু করলে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল থেকে ১০ কিলোমিটার দুরের বরিশাল-ফরিদুপর ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক পর্যন্ত শুধু জনস্রোতই লক্ষ্য করা গেছে। দুপরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ^ জাকের মঞ্জিলের সন্নিহিত বিশাল এলাকায় হাজার হাজার যানবাহন আটকে ছিল। বিশ^ জাকের মঞ্জিল থেকে বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক ও ঢাকাÑখুলনা মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েমুখি ৩টি সড়কেই ব্যাপক যানযট সামলাতে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথেষ্ঠ বিব্রত্রকর পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছিল। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও দরবার শরিফের অগনিত স্বেচ্ছাসবক যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা এবং দরবার শরিফ ও সন্নিহিত এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।