পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাইকোর্টের আদেশে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : মুক্তিযোদ্ধা সন্তান হয়েও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষিত শূন্য পদে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন চাকরি প্রত্যাশী সন্তানরা। সম্প্রতি অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগে সন্তানদেরকে বঞ্চিত করে নাতি-নাতনীদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ ওঠে। যদিও পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশে অগ্রণী ব্যাংকের ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।
সূত্র মতে, গত বছরের ১ এপ্রিল অগ্রণী ব্যাংক মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সংরক্ষিত শূন্য পদে বিশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। একই বছরের ৮ মে সিনিয়র অফিসার পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও প্রশ্নপত্র সরবরাহের ঘাটতি থাকায় পরীক্ষা বাতিল করা হয়। যথানিয়মে পুনরায় ৩ আগস্ট পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় প্রায় ছয় হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এ বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে এক হাজার ৩৮৪ জন উত্তীর্ণ হয়। উত্তীর্ণদের কাছ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এক হাজার ১৫৮ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য মনোনীত করা হয়।
সূত্র মতে, অগ্রণী ব্যাংক স্বাভাবিক নিয়মে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করলেও ফলাফল প্রকাশ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জনবল নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গঠিত ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি সচিবালয়। এ বছরের ২২ মে থেকে শুরু হয়ে ১৯ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষায় এক হাজার ২৬ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দীর্ঘ দেড় বছর শেষে গত ২৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে। এতে প্রাথমিকভাবে ৬৫৫ জনকে নির্বাচিত করা হয়। এদিকে শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও রহস্যজনকভাবে অধিক সংখ্যক পদ শূন্য রাখা হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ মুক্তিযোদ্ধা কোটার নীতিমালা অনুসারে সন্তানদের প্রাধান্য দেয়ার কথা থাকলেও সন্তানদের বাদ দিয়ে অধিক সংখ্যক নাতি-নাতনী নেয়া হয়ে। যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের পরিপন্থী। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক গঠিত ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি বিধিবহির্ভূত জেলা কোটা প্রয়োগ করে সন্তানদের বাদ দেয়ার কৌশল নেয়। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালা ও প্রজ্ঞাপন সঠিকভাবে অনুসরণ করলে সন্তানরা কোনোভাবেই বাদ পড়ে না। যদিও এসব বিষয় নিয়ে ভূক্তভোগী সন্তানরা গত ১১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
সূত্র মতে, নিয়োগ বঞ্চিত সন্তানদের একটি অংশ আদালতের আশ্রয় নিয়ে রিট পিটিশন দাখিল করেছে। রিট পিটিশন নম্বর ১৩৮৮৯/২০১৬। গত ১৫ নভেম্বর ১৯ নম্বর বেঞ্চে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও কৃষ্ণা দেবনাথ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট পিটিশনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রিট পিটিশনাদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি, ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ ও অ্যাডভোকেট মো: মোসাদ্দেক বিল্লাহ। শুনানি শেষে আদালত অগ্রণী ব্যাংকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সিনিয়র অফিসার পদে চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ প্রদান করেন এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রীকে সন্তান বাদ দিয়ে নাতি নাতনীদের নিয়োগ বিষয়ে প্রদত্ত ডিও লেটার নিষ্পত্তি করার জন্য বলেছে।
প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশের পর নাতি-নাতনীদের বিষয় নিয়ে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটিসহ অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান, এমডি ও মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপিকে অবহিত করা হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী বিষয়টি অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভরকে ডিও লেটারের মাধ্যমে খতিয়ে দেখে সন্তানদের নিয়োগ প্রদানের জন্য অনুরোধ করেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নিয়োগের পূর্বে একজনও নাতি-নাতনীর নিয়োগের সুযোগ নেই। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধা/শহীদদের সন্তানদের নিয়োগ না দিয়ে নাতি-নাতনীর নিয়োগদান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তের পরিপন্থী। ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি ডিও লেটারের দায়সারা জবাব প্রদান করে। পাশপাশি বঞ্চিত সন্তানদের নিয়োগের বিষয়টি উপেক্ষা করে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে সরকারের বিভিন্ন সরকারি-আধা সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত-আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা করপোরেশনের চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনীদের নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করে মন্ত্রিপরিষদ। পরে ২০১১ সালের ১৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ‘মুক্তিযোদ্ধা এবং উপযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা প্রার্থী না পাওয়া গেলে মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে পুত্র-কন্যার পুত্র-কন্যা’ নিয়োগের বিষয় উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা যখন থাকবেন না, তাদের সন্তানরা ও সন্তানদের সন্তানরা (নাতি-নাতনী) সরকারের বিভিন্ন দফতরের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। তারা ওই কোটায় চাকরি করার সুযোগ পাবেন। এ কারণেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রদত্ত নীতিমালা ও অগ্রণী ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি শর্ত মোতাবেকÑ মুক্তিযোদ্ধা সংরক্ষিত পদে সন্তান না পাওয়া গেলে নাতি-নাতনীদের দরখাস্ত জমা দেয়ার সুযোগ পাবে বলে উল্লেখ ছিল। অথচ অধিক সংখ্যক সন্তান প্রার্থী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও নীতিমালার অপব্যাখ্যা প্রদান করে কৌশলে সন্তানদের বঞ্চিত করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।