Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশু আইন সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার

৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

উচ্চ আদালতে আইনের খড়সা পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়
মালেক মল্লিক : শিশু আইন সংশোধন করছে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে শিশু আইন নিয়ে যে অস্পষ্টতা ছিল, তা নিরসনে একটি খড়সা প্রস্তুত করে উচ্চ আদালতে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছে- এই আইনের অধীন সব মামলা ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হলে আরো এক মাস সময় অতিরিক্ত বৃদ্ধি করতে পারবে। তবে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হলে অভিযুক্ত শিশুকে জামিন প্রদান করতে পারবেন আদালত। শিশু আইনে অপরাধী প্রাপ্তবয়স্ক হলে বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে। আর শাস্তি হবে প্রচলিত আইনে।
এদিকে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শিশুর অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। তবে তাদের দাবি অস্পষ্টতার নিরসনের পাশাপাশি আইন বাস্তবায়ণ করতে কঠোর হতে হবে। গত ২৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনের স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা জারি করেন। সেখানে সংশোধিত শিশু আইন ২০১৩ বিধানবলি অনুসরণ করতে কঠোর নির্দেশনা জারি করা হয়। এর আগে শিশু আইনের অস্পষ্টতা নিরসনে আইন সংশোধনের সুপারিশ করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
সম্প্রতি হাইকোর্টে এই অস্পষ্টতার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর শিশু আইনে প্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীদের বিচারে শুনানিকালে অস্পষ্টতার বিষয়ে দুই সচিবের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এক সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও ড্রাফটিং বিভাগের সচিব এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে আদালতে ব্যাখ্যা দাখিল করতে হবে। এসময় আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইনের এই অস্পষ্টতা দূর করতে শিশু আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। আর সাংবিধানিক আদালত হিসেবে হাইকোর্ট আইনটি সংশোধনের জন্য আইন, স্বরাষ্ট্র ও জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিতে পারে।  হাইকোর্ট শিশু আইনের অস্পষ্টতা নিরসনে সরকারকে নির্দেশ দেয়। শিশুকে ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকা ও রংপুরে দায়েরকৃত পৃথক চারটি মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন শিশু আদালত। আসামি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও শিশু আদালত কেন জামিন আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে, এই মর্মে নিন্ম আদালতের চার বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিল।  এরপর গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ শিশু আইনের অস্পষ্টতা নিরসনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবগণের কাছে ব্যাখ্যা তলব করে।
সূত্রে জানা যায়, শিশু আইনের ১৫ ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, তদন্তকালে শিশুর জন্য শিশু আইন এবং প্রাপ্তবয়স্কের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধিসহ অন্য প্রযোজ্য আইনের বিধান অনুসরণ করতে হবে।  ৪ এ বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ১৮ বৎসরের নিচের বয়সী সব ব্যক্তি শিশু হিসেবে গণ্য হবে।  সংশোধনীর বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন সব মামলা ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। বিদ্যমান আইনে সময়সীমা বেঁধে দেয়া ছিল না। এই সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হলে আরো এক মাস সময় অতিরিক্ত বৃদ্ধি করতে পারবে। তবে ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন না হলে অভিযুক্ত শিশুকে জামিন প্রদান করতে পারবে আদালত। প্রস্তাব করে শিশুর বয়স নির্ধারণ সঠিকভাবে করা হচ্ছে কিনা এ বিষয়ে দলিলাদিকে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। আগে জন্ম নিবন্ধন সনদ বা বিশ্বাসযোগ্য দলিলের কথা বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ইনকিলাবকে বলেন, ৯০ দিনরে মধ্যে তদন্ত করতে এটা নিশ্চিই ভালো উদ্যোগ। তবে  আমি মনে করি, শিশু আইনে অনেক অস্পষ্টতা রয়েছে- সেসব নিরসণে সরকারকে উদ্যোগ নেয়া উচিত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ