পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘গণরুম স্পষ্টতই একটি মেধা বিধ্বংসী ব্যবস্থা। সতেজ, সজীব, নবীন শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ডকে ভেঙ্গে ফেলার উদ্দেশ্যেই এই গণরুম। রাজনৈতিক কর্মী সাপ্লাইয়ের কারণেই এই গণরুম ব্যবস্থা জিইয়ে রাখে প্রশাসন।’ এই সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে প্রথম বর্ষেই বৈধ সিট নিশ্চিতের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা আগামী ১ মার্চের মধ্যে গণরুম বন্ধের আল্টিমেটাম দেন। নতুবা প্রশাসনিক ভবন অবরোধের হুশিয়ার দেন।
এসময় তারা চার দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- অবিলম্বে গণরুম সংস্কৃতি বিলোপ করে শিক্ষার্থীদের বৈধ সিট নিশ্চিত করা, শিক্ষাজীবন শেষ করেও হলে অবস্থানরতদের অবিলম্বে হল থেকে বহিস্কার করা, নতুন সব হল চালু করে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিয়ে ডাইনিংগুলোকে মানসম্মত করা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘হলগুলোতে রুম ফাঁকা রেখে কৃত্রিম সিট সংকট দেখিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। ফলে প্রজন্মের পর প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক দাস হিসেবে অনুগত কিছু উচ্ছৃঙ্খল গুন্ডা ও সন্ত্রাসীগোষ্ঠী।’
সমাবেশে ১ম বর্ষের (৫১তম ব্যাচ) দর্শন বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সজীব বলেন, ‘প্রায় দুই সপ্তাহ হলো আমরা গণরুমে থাকছি। আমাদেরকে ২য় বর্ষের সিনিয়ররা প্রায় প্রতিদিনই রাত ৩টায় ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে এবং বাইরে মিছিল করতে বাধ্য করে। তারা সব জায়গায় আমাদেরকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। তারা আমাদেরকে হলের ডাইনিং, ক্যান্টিনে খেতে দেয় না। এমনকি ক্যাম্পাসের সব জায়গায় যেতেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা যেন তাদের হাতের খেলনায় পরিণত হয়েছি। আমরা এই গণরুম সংস্কৃতির বিলোপ করে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি জানাই।’
সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি সৌমিক বাগচি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বপ্নের জায়গা। এখান থেকেই আমাদের জীবনের পথটা তৈরি হয়। কিন্তু সে জায়গাটায় যদি এমন অমানবিক, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকে তাহলে কোনভাবেই ভালো কিছুর প্রত্যাশা করা যায় না। গণরুম চালু রেখে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি ময়লার ভাগারে পরিনত করা হচ্ছে। উন্নয়নের মুলা ঝুলিয়ে শিক্ষার্থীদের বস্তির মত পরিবেশে রাখা হচ্ছে। হলগুলোতে প্রশাসনের দায়িত্বশীল খুঁজে পাওয়া যায়না, হল নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ থেকে প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা নিজেদের দায়িত্বটা বুঝে নিন, গণরুম সংস্কৃতি বিলোপ করুন।’
শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া আবাসিকের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারাটা নোংরামি। অবৈধ শিক্ষার্থীরা হলগুলোতে আরাম করে থাকছে আর বৈধ শিক্ষার্থীরা সিট পাচ্ছে না। ফলে বৈধ শিক্ষার্থীদের সুন্দর স্বপ্নগুলোকে হত্যা করতে হচ্ছে। আগামী ১লা মার্চের মধ্যে আমরা চাই নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্য সিটে উঠে যাবে। প্রশাসন কর্তৃক অবৈধদের পা চাটার ইতিহাসকে ভেঙে ফেলতে চাই।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন প্রথম রাতেই ভেঙে যায়। প্রশাসন আমাদেরকে প্রতি বছর গণরুম বন্ধের আশ্বাস দিয়ে জিম্মি করে রাখে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রশাসন যদি নতুন হলগুলো উদ্বোধন না করে তাহলে আমরা রেজিস্ট্রার ভবন অবরোধে যাব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।