পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার সুবিধা নিতে এবার জাপান থেকে প্রায় ৬৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে এক কার্গো এলএনজি বা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস কেনা হচ্ছে। এতে ইতোপূর্বে যে দামে কেনা হয়েছে তার চেয়ে প্রতি ইউনিটে সাশ্রয় হবে ৩ দশমিক ২৪ ডলার। বর্তমান প্রতি ইউনিট এলএনজি ১৬ দশমিক ৫০ ডলারে কিনতে যাচ্ছে সরকার। বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে জাপানি একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রমজান সামনে রেখে সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির জন্য ১ কোটি ১০ লিটার সয়াবিন ও ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হবে। এতে খরচ হবে প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা। এছাড়া ৪৫ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসফেট কেনা হবে। দ্রুত স্পট মার্কেট এলএনজি আমদানি করার ফলে জ্বালানি সঙ্কট দূর হবে বলে আশা করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে এবং বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ বৃদ্ধি পাবে বলে করা হচ্ছে।
গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন পায়। বৈঠকে কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ায় সরকার এবার ৩ দশমিক ২৪ ডলার কমে প্রতি ইউনিট এলএনজি গ্যাস কিনতে যাচ্ছে। প্রতি এমএমবিটিইউর জন্য ১৬ দশমিক ৫০ ডলার খরচ ধরে এক কার্গো এলএনজির জন্য খরচ হবে মোট ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা। এর আগে সর্বশেষ এলএনজি কেনা হয়েছে ১৯ দশমিক ৭৪ ডলারে। তিনি বলেন, মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) স্বাক্ষর করা প্রতিষ্ঠান থেকে কোটেশন সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় এ এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে এই এলএনজি আমদানি করা হবে জাপানের এমএম জেরা করপোরেশন কাছ থেকে। দাম কমতে থাকলে এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখা হবে। এরফলে আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সঙ্কট অনেকটাই কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় আট মাস যাবত খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ রেখেছিল সরকার। এতে করে দেশে তীব্র গ্যাস সঙ্কট তৈরি হয়। শিল্প কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। চিনি ও ভোজ্যতেলের মতো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন মিলমালিকরা। আর এ কারণ হিসেবে তারা বলছেন গ্যাসের চাপ কম থাকায় তাদের উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এদিকে, বাসাবাড়িতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় গৃহিনীরা রান্না-বান্নায় সমস্যার মধ্যে আছেন। একইভাবে গ্যাস চালিত পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে গেছে। এই অবস্থায় সম্প্রতি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই থেকে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবি করে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। তাদের সেই প্রস্তাব অনুযায়ী ইতোমধ্যে গ্যাসের দাম একদফা বাড়িয়েছে সরকার। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ায় এবার দেশেও এলএনজি গ্যাসের আমদানি বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে দাম কিছুটা কমে আসায় দেশের চাহিদার কথা মাথায় রেখে গত ১ ফেব্রুয়ারি এক কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা তখন জানিয়েছিলেন, ফরাসি কোম্পানি টোটালএনার্জিস থেকে এক কার্গো (৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি কেনা হচ্ছে, যা ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ দেশে পৌঁছাবে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম পড়বে ২০ ডলারের কাছাকাছি। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে জ্বালানিখাতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর আগে সিঙ্গাপুরের ভিটল এনার্জির কাছ থেকে ২০২২ সালের মে মাসের শেষ দিকে সর্বশেষ এক কার্গো এলএনজি কিনেছিল সরকার, যেখানে প্রতি ইউনিটের দাম পড়েছিল ২৫ দশমিক ৭৫ ডলার। দেশে নতুন শিল্প কারখানা বাড়তে থাকায় গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে আন্তর্জাতিক খোলা বাজার থেকে নয় কার্গো এলএনজি আমদানি করেছিল সরকার। পরে একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দেশে একই সঙ্গে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট দেখা দেয়। গত জুলাই থেকে ফিরে আসে লোডশেডিং, গ্যাসের অভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। তবে ডিসেম্বরে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসে, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।
রমজান সামনে রেখে টিসিবির জন্য ২৬৫ কোটি টাকার তেল-ডাল কেনা হচ্ছে : আগামী রমজান মাস সামনে রেখে সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ও ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনা হচ্ছে। এতে খরচ হবে ২৬৫ কোটি ৪০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ১৯১ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম পড়বে ১৭৪ টাকা ৫০ পয়সা। আগের ক্রয় মূল্য ছিল ১৭৬ টাকা ৮০ পয়সা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তুরস্কের আরবিল বাকলিয়াত হুবুবাত সান্কিক কোম্পানি থেকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৮ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওযা হয়েছে। এ ডাল আমদানি করতে খরচ হবে ৭৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। প্রতিটন মসুর ডালের দাম পড়বে ৮৫৮ মার্কিন ডলার। এছাড়া ৪৫ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড ও রক ফসফেট কিনছে সরকার। এর মধ্যে ২০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড এবং ২৫ হাজার টন রক ফসফেট রয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ২০৭ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ১৩৮ টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের মাধ্যমে এ সার কেনা হবে। এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।