Inqilab Logo

রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাবাকে হত্যা করে ডাকাতির নাটক সাজায় ছেলে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

দুই মেয়েকে সম্পত্তির ভাগ দেয়ার কথা শুনেই বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে একমাত্র ছেলে এইচ এম মাসুদ (৪২)। এজন্য পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিতে অটো ড্রাইভার মো. রুবেলকে যুক্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্বাসরোধ করে বাবাকে হত্যাও করে। তবে সেই হত্যাকাÐকে ডাকাতির নাটক সাজায় ছেলে মাসুদ। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমের (৭২) দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অটোচালক রুবেলকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এর পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাÐের মূল রহস্য বেরিয়ে আসে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর গত শনিবার যাত্রাবাড়ী এলাকায় তার বোনের বাসা থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় জড়িত অপর আসামি মাসুদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা সেটাও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। গতকাল রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিমের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ টাকা তোলেন তিনি। সেই টাকা থেকে দুই মেয়েকে ১০ লাখ টাকা দেয়ার কথা ছেলেকে জানান হালিম। এছাড়া হালিম তার সম্পত্তির ভাগও দিতে চান দুই মেয়েকে। এতেই বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাসুদ। এই পরিকল্পনায় যুক্ত করে পরিবারের পূর্বপরিচিত অটো ড্রাইভার মো. রুবেলকে। রুবেল হালিমের পরিবারের পূর্বপরিচিত। তিনি পরিবারটির বিভিন্ন কাজকর্ম করে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। ঘটনার দিন মাসুদ রুবেলকে ফোন দিয়ে দ্রæত তাদের বাড়িতে যেতে বলেন।। গত ৩১ জানুয়ারি রাতে ফোন পেয়ে রুবেল বাসায় প্রবেশ করে। বাসার ২য় তলায় যেখানে মাসুদ এবং তার বাবা বসবাস করে সেখানে গিয়ে পূর্ব থেকেই অবস্থান নেয়। রাতে মাসুদের বাবা হালিম ঘুমিয়ে পড়লে তারা উভয়ই তার রুমে প্রবেশ করে।

তিনি আরও বলেন, তারা প্রথমে বিছানার মশারি খুলে, ছেলে মাসুদ তার বাবার হাত পা চেপে ধরে এবং রুবেল তার দুই হাত দিয়ে হালিমের গলা চেপে ধরে। এতে হালিম চিৎকার দিলে রুবেল বালিশ দিয়ে তার মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। মারা যাওয়ার পর তার ছেলে মাসুদ তার ঘরে থাকা ডিজিটাল বøাড প্রেসার মাপার যন্ত্র দিয়ে বøাড প্রেসার মেপে মৃত্যু হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হন। পরে আলমারি থেকে ৫ লাখ টাকা এবং তাদের বাসার সিসি টিভি ক্যামেরার ডিবিআর বক্স বাইরে ফেলে দেয়ার জন্য রুবেলকে দেন তিনি।

পিবিআই জানায়, তারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যাকাÐের ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ডাকাতির নাটক সাজাতে আসামি রুবেল নিহতের ছেলে মাসুদাকে পাটের রশি দিয়ে হাত-পা এবং গামছা দিয়ে মুখ বেধে ফ্লোরে ফেলে রাখে। আর বাসা থেকে টাকা এবং সিসি টিভি ক্যামেরার ডিবিআর বক্স নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই ঘটনার পর আশপাশের মানুষকে ডাকাতরা তাকে বেঁধে তার বাবাকে হত্যা করেছে বলে জানায় মাসুদ। পরদিন রুবেলকে পলাতক থাকার কথাও বলে মাসুদ। ঘটনার পর পলাতক থাকেন মো. রুবেল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ