Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকার আইয়ুব খানের গণতন্ত্র প্রবর্তন করতে চাচ্ছে -ব্যারিস্টার মওদুদ

| প্রকাশের সময় : ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জেলা পরিষদ নির্বাচন সংবিধান পরিপন্থী
স্টাফ রিপোর্টার : পরোক্ষ ভোটে জেলা পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার আইয়ুব খানের ‘বুনিয়াদি গণতন্ত্র’ প্রবর্তন করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এই অভিযোগ করেন। এই নির্বাচনকে সম্পূর্ণ সংবিধান পরিপন্থী বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এখন যে জেলা পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে, এটা সম্পূর্ণভাবে সংবিধান পরিপন্থী। কারণ জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সেই জেলা পরিষদে যদি নির্বাচন করতেই হয়, তাহলে সব মানুষকে ভোটাধিকার দিতে হবে সেই জেলার তাদের জেলা পরিষদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার জন্য। এখন যেটা তারা (সরকার) করেছে, যে সিলেক্টিভ- ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান- মেম্বাররা মিলে। মানে আইয়ুব খানের ওই যে, বেসিক ডেমোক্র্যাসি যার একটা খানদানি নাম হলো- বুনিয়াদি গণতন্ত্র। এখন সেই আইয়ুব খানের বুনিয়াদি গণতন্ত্র এই সরকার আনতে চাচ্ছে।
সাবেক আইনমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এজ এ মেটার অব ফেক্ট, এই জেলা পরিষদ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরো ধ্বংস করবে। কারণ এটা সংবিধান পরিপন্থী এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কোনো ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে না। এই জেলা পরিষদের নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে, মনমানসিকতা প্রতিফলন ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচনে এভাবে জেতার পরে আবার ইনডাইরেক্ট লাগে নাকি জিততে? তারা তো সরাসরি নির্বাচন দিয়ে দিলে পারতেন। তাহলে আমরা বুঝতেন কেমন লাগে তাদের এই নির্বাচনে, তাদের কতটুকু সমর্থন আছে, না আছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি ‘চেতনায় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে ‘মেজর জিয়া ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
সারাদেশে অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কে মওদুদ আহমদ বলেন, এখানে নির্বাচন হচ্ছে না, আপনারা সবাই জানেন। এটা একদলীয় একটা নির্বাচন। তারা নিজেদের মধ্যে নিজেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচন একটি তামাশা ছাড়া আর কিছু নয়।
সংবিধানের ব্যাখ্যা দিয়ে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংবিধানের আর্টিক্যাল ৫৯ ও ৬০ তে আছে, বাংলাদেশের সমস্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচিত, জনগণের ভোটের দ্বারা নির্বাচিত হতে হবে। তারা (আওয়ামী লীগ) যথন একদলীয় শাসন করলেন, তখন এই দুইটি আর্টিক্যাল ডিলিট করে দিলেন, সংবিধান থেকে তুলে দিলেন যাতে ওই আর করতে না হয়। নিজেরাই যাতে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভায় সব নির্বাচন করতে পারেন। এখন সেই আর্টিক্যালগুলো আবার ফিরে এসেছে। এই আর্টিক্যালগুলো আমরা চতুর্থ সংশোধনীতে আমরা সংযুক্ত করে দিয়েছিলাম। যখন আমরা সংসদীয় গণতন্ত্র করলাম ১৯৯১ সালে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াই আবার সংসদীয় গণতন্ত্র বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনলেন। শহীদ জিয়া বহুদলীয় গণতেন্ত্র এনেছিলেন, তখন প্রেসিডেন্সিয়াল সরকার ছিল। এটাকে আরো উন্নত গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক চর্চা করার জন্য নেত্রী সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করলেন দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। সেই সংশোধনীতে আর্টিকেল ৫৯ ও ৬০ আবার রেস্ট্রোড করলাম।
নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের ফলাফল বিষয়ে মওদুদ আহমদ বলেন, এই নির্বাচনের ফলাফলে সরকার খুব খুশি। তারা বলতে চায় যে, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, এতে প্রমাণ হয়েছে, তাদের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছেÑ ভালো কথা। তাহলে এখনি নির্বাচন দিয়ে দেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়ে যাক। আপনারা এতো জনপ্রিয়তা আর ক্ষমতায় থাকার দরকার নেই। এই সরকারের উচিৎ হবে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং নির্বাচন দিয়ে দেয়া। তাহলে বুঝা যাবে, এই  যে জনপ্রিয়তার কথা বলছেন, সেটা সত্যিকার অর্থে জাতীয় পর্যায়ে এটা প্রতিফলন ঘটবে কি ঘটবে না, তখন দেশের মানুষ দেখবে।
সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সদস্য সচিব শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকীর পরিচালনায় আলোচনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক আলী নুর, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ