Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মামলা পরিচালনায় নতুন-পুরাতন পদ্ধতি সমস্যা সৃষ্টি করছে

পারিবারিক আইন বিষয়ক সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ব্যবহারিক প্রয়োগের প্রশ্নে পারিবারিক আদালত ও আইন অনেক পুরাতন। মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে পুরাতন প্রথা ও পদ্ধতি ব্যবহৃত হওয়ায় বিচারক এবং আইনজীবীদের নানা ধরণের সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে। তাই আইনটি সরকারের প্রয়োজন। এ অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞগণ।

গত শনিবার বনানী ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘পারিবারিক আদালত ও আইনের সংস্কার’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফ্লাড) সেমিনারটির আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার। তিনি বলেন, পারিবারিক আদালতে সব ধরণের সেক্টর রয়েছে, যেমন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, যৌতুক নিরোধ আইন, পারিবারিক সহিংসতা আইনসহ পারিবারিক মামলাগুলো বিচারের জন্য একই ছাদের নিচে আনার ব্যবস্থা করা দরকার। যেন আইনটি আরও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, চাইল্ড পেরেন্টাল অ্যাবডাকশন যেন না হয় সে জন্য বাচ্চাদের পাসপোর্ট ও জন্ম নিবন্ধন পুলিশ অথবা আদালতের কাছে দিযে তারপর অভিভাবকত্ব বিষয়ক পারিবারিক মামলা পরিচালনা করা প্রয়োজন। বাচ্চাদের পৃথক কক্ষে নিয়ে শান্তভাবে এবং কমফোর্টেবল রেখে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে জবানবন্দী নেয়া উচিৎ।

সেমিনারে পারিবারিক মামলার আপিলের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, একটি দেনমোহরের আপিল শুনানি কিভাবে সম্ভব, যেখানে দেনমোহরের পরিমাণ বিয়ের সময়ই দুই পক্ষের সম্মতিতে ঠিক হয়।

একটি পারিবারিক মামলা দীর্ঘকালীন পরিচালনার জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাবালক শিশু। তিনি পারিবারিক মামলা আইনে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দেন।
পারিবারিক আদালতের বিচারক ফারিহা নোশীন বর্ণী বলেন, পারিবারিক আদালতের ডিজিটাল এভিডেন্স আমলে নেয়ার জন্য আদালতের কোর্ট কক্ষগুলোকে আরও ডিজিটালাইজড করা অর্থাৎ কম্পিউটার বা পাওয়ার পয়েন্ট স্ক্রিন লাগানোর ব্যবস্থা করা দরকার।

পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান বলেন, ফ্যামিলি কোর্টে কিভাবে প্রাকটিস করা দরকার বা পারিবারিক মামলাগুলো কিভাবে পরিচালনা করা দরকার তার জন্য আইনজীবীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া প্রয়োজন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক অ্যাডভোকেট মলয় সাহা তার প্রবন্ধে বলেন, পারিবারিক আইন অনেক সনাতন আইন এবং তা সংস্কার হিসেবে সময়ের সাথে এগিয়ে আমাদের হিন্দু পারিবারিক আইন এ তালাকের বিধান আনা অতীব জরুরি। আর ফ্যামিলি কোর্টে ডিক্রি জারির পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে।
ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ আলম বলেন, বাবা মাকে একটি এডভার্সারিয়াল সিস্টেমে পারিবারিক আইন ঠেলে দিচ্ছে। এটি তাদের শিশুদের মঙ্গল কামনার চিন্তা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। এ সমস্যা মোকাবিলার জন্য তিনি একটি আইনি পদ্ধতির প্রস্তাব দেন। যেখানে আর্জি দাখিলের দিনই বাধ্যতামূলক আপোষের জন্যে আদালত দুই পক্ষকে পাঠাবেন এবং সেই আপোষে যদি কোন ব্যক্তি না যেতে চান তবে তাদের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মামলা পরিচালনা করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ফ্লাড সভাপতি অ্যাডভোকেট ফাউজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, দেনমোহর ও ভরণ-পোষণের মামলার প্রথমেই রিটেন স্টেটমেন্টে ছেলে কতটুকু দেনমোহর দিয়েছেন, কত পরিশোধ করেছে তা উল্লেখ করার দরকার এবং ততটুকু পরিমাণ পরিশোধের পরেই মামলা পরিচালনা শুরু করা উচিৎ।

সেমিনার সঞ্চালনা করেন ফ্লাডের লিগ্যাল এইড সেক্টরের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম। এতে ফ্লাড সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হাসিনা রশিদসহ অন্যান্য আইনজীবী, মানবাধিকার সংগঠন বøাস্ট, লাইটহাউজ, আওয়াজ ফাউন্ডেশন, সাইকিউর, মমস ফর মম, ইশরাত ফাউন্ডেশন, ইউএস এম্বাসির প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ