পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করতে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রস্তাবও দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কথা তোলেন। তিনি স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে আগামীতে নির্বাচন আরো সুষ্ঠু করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন। স্মার্টকার্ডকে সেভাবে ব্যবহার উপযোগী করার কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণপূর্ত মন্ত্রীর কথার প্রসঙ্গ ধরে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ হয়, ভোটাররা যাতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঠিকমতো ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনার সময় এ বিষয়ে আমরা প্রেসিডেন্টের কাছে আমাদের প্রস্তাব তুলে ধরব।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আলোচনার সময় কোন কোন বিষয় নিয়ে কথা বলা হবে, আওয়ামী লীগের প্রস্তাব কী কী হবে তা তৈরি করতে দলের দায়িত্বশীল নেতা যারা মন্ত্রিসভায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তাদের নির্দেশ দেন। তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রস্তাব কী কী হবে তা প্রস্তাব করেন, কাগজপত্র তৈরি করেন।
সূত্র আরো জানায়, এ সময় প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা করা প্রয়োজন, সরকার তার সবকিছুই করবে। তিনি সদ্য সমাপ্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার কারণেই সেখানে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়েছে। এ নির্বাচনে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে দলীয় সরকারের অধীনেও যে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব- নাসিক নির্বাচনে তা প্রমাণ হয়েছে।
তবে এই নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আসলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় বিএনপি তো এখন আর কথা বলার কিছু পাচ্ছে না। এখন কী বলবে, তাই যা ইচ্ছা তাই বলছে।
আশুলিয়ায় গার্মেন্টস খোলায় মন্ত্রিসভার সন্তোষ
শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে বন্ধ করে দেয়া আশুলিয়ায় সব পোশাক কারখানা পাঁচ দিন পর খুলে দেয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, পোশাক কারখানাগুলো খুলে দেয়ার উদ্যোগকে মন্ত্রিসভা স্বাগত জানিয়েছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর সময় এখনো আসেনি বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করেন তিনি।
বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবিতে সপ্তাহখানেক বিক্ষোভের পর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাইপাইল, জামগড়া, নরসিংহপুর ও এর আশপাশ এলাকার ২৫টি কারখানার শ্রমিকরা গত সোমবার কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর কয়েকজন মন্ত্রী শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলেও পরদিন ৫৫টি কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে যোগ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা ভালো উদ্যোগ। ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ থাকলে আমাদের দেশের শত শত কোটি টাকার ক্ষতি এবং শ্রমিক-মালিকদের সমস্যা হতো। কারখানাগুলোর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, বেতন বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে বিধান আছে, তা হালনাগাদ করারও সুযোগ আছে। বেতন বাড়ানোর যে সিস্টেমটা আইনে দেয়া আছে এখনো স্টেজটা আসেনি, বলেন তিনি।
বৈঠক সূত্র জানায়, অনির্ধারিত আলোচনায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু জানান, সব খারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন, শুধু দুইটি কারখানার শ্রমিকরা যায়নি। তবে তারাও কাজে যোগ দেবে বলে তিনি জানান। প্রতিমন্ত্রীর কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ¤্রমিকরা কাজে যোগ দিচ্ছে কি না, কোথায় কী সমস্যা রয়েছে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে, নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে যাতে আর কোনো সমস্যা না হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযান ও জঙ্গি তৎপরতার বিষয় নিয়ে কথা বলেন। পুলিশের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী নারী ও কিশোরদের জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রসঙ্গে বলেন, মানুষ জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। এই পথে অন্যদের নিতে না পেরে, লোক না পেয়ে এখন জঙ্গিরা নিজেদের স্ত্রী ও সন্তানদের এই পথে নিয়ে আসছে। তারা স্ত্রী, সন্তানদের জঙ্গি তৎপরতায় ব্যবহার করছে।
আফটা দ্বিতীয় সংশোধনীর খসড়ায় অনুমোদন
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য চুক্তির (আফটা) দ্বিতীয় সংশোধনীর খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক একটি বাণিজ্য চুক্তি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো এই চুক্তির সংশোধনীর মধ্যে রয়েছে এতে মঙ্গোলিয়াকে যুক্ত করা এবং শুল্ক ব্যবহার পুনর্বিন্যাস।
১৯৭৫ সালে স্বাক্ষরিত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাণিজ্য চুক্তি (আপটা) আগে ব্যাংকক চুক্তি নামে পরিচিত ছিল। পরে ২০০৫ সালে এর নাম হয় আফটা।
বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা ও লাওস এ চুক্তির সদস্য। মঙ্গোলিয়ার সদস্যপদের বিষয় ২০১৭ সালের ১৩ জানুয়ারি ব্যাংককে অনুষ্ঠিতব্য মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে চূড়ান্ত হতে পারে। খসড়ায় এ চুক্তির আওতায় শুল্কায়নের চূড়ান্ত নতুন তালিকা রয়েছে।
এতে বাংলাদেশ সাধারণত আফটা দেশগুলোকে ৫৯৮টি পণ্যে ১০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে আরো ৪টি পণ্যে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়। চুক্তি অনুযায়ী চীন ৯১টি এবং ভারত ৩৩৩৪টি পণ্যে ৫ থেকে ১শ’ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।