পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : জিএমসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় রূপালী ব্যাংকের পাঁচ সিবিএ নেতাকে বরখাস্ত করায় স্বস্তি ফিরেছে ব্যাংকিং খাতে। এই শাস্তির ঘটনাকে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ উল্লেখ করে বিশ্লেষকরা বলেছেন, এতে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরবে। এই পদক্ষেপে সিবিএ নেতাদের কাছে একটা বার্তা যাবে যে, অন্যায় করলে শাস্তি পেতে হবে। এতে তারা সামনের দিনে উশৃঙ্খল কর্মকান্ড থেকে বিরত হবে।
তবে এদের দৌরাত্ব থেকে মুক্তি পেতে সিবিএ’র নেতৃত্বে ভালো লোকদের বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, এই শাস্তির ফলে সিবিএ একটা ‘কঠোর’ বার্তা পাবে যা পুরো আর্থিক খাতের জন্য মঙ্গলজনক। তবে এই ‘সিবিএ সিস্টেম’ চেঞ্চ না করলে দীর্ঘমেয়াদে কোন লাভ হবে না।
সিবিএ নেতাদের শাস্তির ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন রূপালী ব্যাংকের কয়েকজন উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা। তবে ‘সিবিএ আতঙ্কে’ তারা নাম প্রকাশ করতে চান নি। ব্যাংকটির একজন মহাব্যবস্থাপক বলেন, প্রতি বছরই সিবিএ নেতাদের হাতে কোন না কোন কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হচ্ছেন। গতবছরও ৯ কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে সিবিএ। তবে এদের বিরুদ্ধে কখনোই কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে তারা আরও উশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। গত ৫ ডিসেম্বর মহাব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনার পর আমরা আতঙ্কেই ছিলাম। বিষয়টি নিয়ে আমরা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাদের আস্বস্ত করেছিলেন, তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেবেন। তিনি কথা রেখেছেন। দোষী সিবিএ নেতাদের কঠোর শাস্তি দেয়ায় আমরা কর্মকর্তারা স্বস্তি পাচ্ছি।
“ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান স্যারের সাহসী ভূমিকার কারণে তাঁর প্রতি আমাদের আস্থা শতগুণ বেড়ে গেছে”, বলেন ওই মহাব্যবস্থাপক। “তিনি যে কর্মকর্তাদের সত্যিকারের অবিভাবক, সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোতে কর্মচারীদের সংগঠন সিবিএ’র নেতাদের নানা অপকর্মে কর্মকর্তারা সবসময়ই অতিষ্ট। শীর্ষ কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা থেকে শুরু করে এমন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করে নি। তবে ২০০৩ সালের পর থেকে কখনোই সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর ফখরুদ্দিন আহমেদ ১০ সিবিএ নেতাকে চাকরিচ্যুত করেছিলেন। এরপর রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান ৫ সিবিএ নেতাকে সাময়িক বরখাস্ত করলেন।
বরখাস্ত হওয়া সিবিএ নেতারা হলেন, রূপালী ব্যাংকের অফিস সহকারী ও সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মো. কাবিল হোসেন কাজী, অফিস সহকারী মো. আরমান মোল্লা, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আহসান হাবিব ও গাড়িচালক মো. আবুল কালাম আজাদ।
কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্তের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ৫ সিবিএ নেতাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে এলে এদের বিরুদ্ধে স্থায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মানবসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা।
গত ৫ ডিসেম্বর এক অফিস সহকারীর কাজে যোগদান নিয়ে লোকাল অফিসে সিবিএ সাধারণ সম্পাদক কাবিল হোসেন কাজীর নেতৃত্বে এ বিশৃঙ্খল কা- ঘটানো হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা।
রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে দেয়া ওই লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মহিউদ্দিন নামে এক অফিস সহকারীকে সম্প্রতি ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বদলি করা হয়। এ বদলি আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন মহিউদ্দিন। রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ওই কার্যালয়ে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন আদালত। এ নির্দেশ অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে ব্যাংকের রেজিস্টার খাতায় সই করে কাজে যোগদান করেন মহিউদ্দিন। এর কিছুক্ষণ পরই রূপালী ব্যাংকের সিবিএ সভাপতি মোস্তাক আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক কাবিল হোসেন কাজীর নেতৃত্বে একদল সিবিএ নেতা ব্যাংকের লোকাল অফিসে ঢুকে হট্টগোল শুরু করেন। এ সময় তারা লোকাল অফিসের জিএম নুরুজ্জামান, এজিএম সাখাওয়াত হোসেন ও ডিজিএম শওকত আলী খানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে জিএম নুরুজ্জামানের কক্ষে প্রবেশ করে তাকে চেয়ার থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে, হাজিরা খাতা থেকে মহিউদ্দিনের কাজে যোগ দেয়ার তথ্য সাদা কালি দিয়ে মুছে দেয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, একই সঙ্গে জিএম নুরুজ্জামানকে জিম্মি করে জোরপূর্বক ওই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন অভিযুক্তরা। এ কর্মকা-ে সিবিএ নেতাদের সঙ্গে ছিলেন অফিস সহকারী আনোয়ার মোল্লা, আহসান হাবিব, আল আমিন (গাড়িচালক), আরমান মোল্লা, জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কালাম আজাদ (গাড়িচালক), সাব্বির হোসেন ও মাহবুবুর রহমান।
ওই ঘটনায় পরদিন (৬ ডিসেম্বর) ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা হিসেবে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপর প্রশাসনিক পদ্ধতিতে তাদের বিচার করা হবে। বিচারে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও কাবিলের নেতৃত্বে ব্যাংকে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের জানুয়ারিতে অফিসার্স কাউন্সিল গঠনকে কেন্দ্র করে কাবিলের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ওই সময়ে এক সাংবাদিককেও শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।