পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে ৩৫তম জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হবে আগামী ১ ফেব্রæয়ারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে হবে এ আয়োজন। এতে দেশি-বিদেশি প্রায় ১০ হাজার কবিতাপ্রেমীর সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩০০ কবি কবিতা পাঠের জন্য নাম নিবন্ধন করেছেন। এ বছর জাতীয় কবিতা উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’। গতকাল সোমবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে ‘বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা’ সেøাগানে জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষে। এবার ১০ হাজার কবিতাপ্রেমীর মিলনমেলায় হবে ‘স্মার্ট জাতীয় কবিতা উৎসব’। উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে ‘স্মাট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলে সরকারের মন্ত্রী-এমপি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, দলদাস বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শিক্ষাজীবী, সংস্কৃতি সেবী সবার মুখে ‘স্মাট’ শব্দটি ব্যপকভাবে উচ্চারিত হতে থাকে। এখন সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন দলদাস সুবিধাভোগী কবিরা।
ফুল-পাখি-প্রকৃতি-প্রেস নিয়ে কবিতা লিখলেও কবিরা সব সময় মানুষের পক্ষে। ’৫২ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে দেশের কবিদের ভুমিকা ছিল উজ্বলতম। তিন যুগ আগে স্বৈরশাসক এরশাদের পক্ষে-বিপক্ষে বিভক্ত ছিলেন দেশের কবিরাও দেশের কবিরা ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ’ গঠন করলে এইচ এম এরশাদ ‘এশীয় কবিতা কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরশাদের কবিতাকেন্দ্র ১৯৮৭ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত এশীয় কবিতা উৎসবের আয়োজন করেছিল ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। তার বিপরীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি তথা হামিক চত্বরে জাতীয় কবিতা পরিষদ ‘স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃংখল মুক্তির ডাক দিয়ে কবিতা উৎসব করেন ১৯৮৭ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে। পরের বছর ১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রæয়ারি একই স্থানে জাতীয় কবিতা উৎসবের দ্বিতীয় আসর বসে। সেখানে কবিতা আবৃতি চলার সময় একজন কবির কবিতার ডায়েরিটিতে সবুজ পেন্সিল দিয়ে কিছু একটা আঁকছিলেন পটুয়া কামরুল হাসান। পেন্সিলের প্রতিটি টানে কী যেন এক আবিষ্কারের চিন্তায় মগ্ন তখন শিল্পী। পেন্সিলের শেষ টানটি সমাপ্ত হতেই দেখা গেল স্বৈরশাসক এরশাদের অবয়ব। কিছুক্ষণ পরই স্কেচটি উদ্ভাসিত হলো ‘দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে’ শিরোনামে। সেই স্কেচ পরদিন পোস্টার করে ছাপিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে দেন দেশের কবিরা। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নতুন ঢেউ উঠে। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে শৃংখল মুক্তির ডাক দিয়ে কবিতা উৎসবের কালের পরিক্রমায় এই উৎসব সাড়ে তিন দশক পর জনতার পক্ষ থেকে ৯০ ডিগ্রী মোড় ঘুরিয়ে সকারের তোষামোদী পথ ধরে কবিতার নামে যেন দালাল উৎসব করা হচ্ছে। দেশের কিছু কবি যেন ক্ষমতাসীনদের উচ্ছিষ্টের কাছে বিক্রি হয়ে গেছেন। সংবাদ সম্মেলনে কবিদের বক্তব্যে পরিস্কার তারা প্রগতির পক্ষে কিন্তু গণমানুষের ভোট ও ভাতের অধিকারের পক্ষ্যে নন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি তারিক সুজাত লিখিত বক্তব্যে জানান, জাতীয় কবিতা উৎসব ২০২৩-এর উদ্বোধন করবেন দেশের অন্যতম প্রধান কবি আসাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বিগত ৩৪টি আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ভাষার সংগ্রামী কবিরা এ উৎসবে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্যাতিত মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন। এ উৎসবকে আমরা কবিতার মিলনমেলায় পরিণত করতে পেরেছি।
দুই দিনব্যাপী কবিতাপাঠ, নিবেদিত কবিতা, সেমিনার, আবৃত্তি ও সংগীতের মধ্য দিয়ে উৎসবে জমে ওঠবে। এ বছরের উৎসব সেøাগান ও উৎসব সংগীত রচনা করেছেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ। ঘোষণাপত্র লিখেছেন কবি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ৩৫তম কবিতা উৎসবের আহŸায়ক শিহাব সরকার, পরিষদের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কবি আসলাম সানী ও আমিনুর রহমান সুলতান প্রমূখ।
জাতীয় কবিতা পরিষদের এই ‘স্মাট আয়োজন’ আয়োজন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। নেটিজেনদের বেশির ভাগই লিখছেন, এই কবিতার সরকারি দলের শীর্ষ ব্যাক্তিকে খুশি করতে কবিতায় এখন ‘স্মাট শব্দটি’ ব্যবহারের প্রতিযোগিতায় নামবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।