Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বান্দরবানে নিরাপত্তা বাহিনী ও কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সংঘর্ষ

গোলাগুলিতে নিহত ৩, আহত বেশ কয়েকজন

মো. সাদাত উল্লাহ, বান্দরবান থেকে | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গমাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলিতে ৩ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দফায় দফায় দু‘পক্ষের গোলাগুলিতে বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত আহত হয়েছে। তবে লাশ পাওয়া গেছে একজন সন্ত্রাসীর। রুমা থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বলে ওসি মোহাম্মদ আলমগীর জানিয়েছেন।

এদিকে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের নির্যাতনের ভয়ে আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে শিশুসহ বম ও মারমা জনগোষ্ঠীর ৪০ জন রুমার পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খাদ্য দ্রব্য ওষুধসহ প্রয়োজনীয় রসদ সামগ্রী দেয়া হচ্ছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের টেবিল পাহাড়ের অদূরে দুর্গামাঞ্চলে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় থেমে থেমে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) মধ্যে। এতে ৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হলেও বাকী লাশ দুটি পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় অনেকে নাম না প্রকাশের শর্তে অভিযোগ করে বলেন, সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের সদস্যরা পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়াপ্রধান কার্বারী সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নিয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লা মং মারমা বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে পাহাড়ে জুমে উৎপাদিত ফসল আদা-হলুদ এবং বিভিন্ন ফলন তুলতে পারছে না গ্রামবাসী। পাড়াবাসীদের জিম্মি করে খাদ্য সংগ্রহের কারণে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনা অং মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। তাদের বর্তমানে মারমা এসোসিয়েশনের ক্লাবঘরে আশ্রয় দিয়েছি। পালিয়ে আসাদের মধ্যে মারমা এবং বম জনগোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে। কয়েকদিন আগে এক পাড়াবাসীকে পিটিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী বলেন, কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুমা থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গোলাগুলিতে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন শিবলী বলেন, পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের সাথে নিরাপত্তার বাহিনীর গোলাগুলি হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে আতঙ্কে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুয়ালপিপাড়া থেকে পাড়া প্রধান কার্বারী সাকনাও মারমার নেতৃত্বে শিশুসহ ৪০ জন গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসে। পরে সেখান থেকে তাদের রুমা সদরে নিয়ে এসে ক্লাবঘরে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। সেখানে খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ