আজ রোববার প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা রাজশাহী আসছেন। দুপুরে ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানের জনসভায় ভাষণ দেবেন। এর আগে সফরসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টায় রাজশাহীর চারঘাটের সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীতে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন। সেখানে তিনি অভিবাদন গ্রহণ ও প্যারেড পরিদর্শণ করবেন। একই সময়ে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মধ্যে পদক বিতরণ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সফল করতে সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ। পাঁচ বছর পর রাজশাহীর এই জনসভাকে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশে পরিনত হবে এমন প্রত্যাশা আয়োজকদের। রাজশাহী বিভাগের প্রত্যেক জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ আসবে। এজন্য প্রয়োজনীয় বাস, ট্রেনসহ বিভিন্ন যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাবেশ মাদরাসা ময়দান ছাড়াও প্রায় তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানুষ অবস্থান নেবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় মাইকের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

আয়োজকদের প্রত্যাশা সাতলাখ লোকের সমাগম ঘটবে। ফলে পুরো নগরীজুড়ে হবে সমাবেশ। নগরীর বারোটি স্থানে ডিজিট্যাল মনিটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বিতরন করা হবে খাবার পানির বোতল। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ও স্মার্ট বাংলাদেশের কথা শুনতে রাজশাহীর এ জনসভায় মানুষের ঢল নামবে। তিনি ৩৩ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করবেন। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে ২৮টির কাজ আর পাঁচটি চলমান রয়েছে।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীতে যেসব উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন ও স্থাপনা উদ্বোধন করবেন তারমধ্যে রয়েছে রাজশাহী তথ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ, রাজশাহী আঞ্চলিক পিএসসি ভবন নির্মাণ কাজ, শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে ১০তলা বিশিষ্ট ভবনের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন, বিকেএসপি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শহীদ জননী জাহানার ইমাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০তলা বিশিষ্ট একাডেমী ভবন, রাজশাহী ওয়াসা ভবন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম তলা পর্যন্ত সম্প্রসারন নির্মাণ কাজ, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়ার্টার নির্মাণ, রাজশাহী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ভবন উদ্বোধন, মোহনপুর উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন, রাজশাহী সরকারি শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উদ্বোধন। এছাড়াও শেখ রাসেল শিশুপার্ক, মোহনপুর রেলক্রসিংয়ে ফ্লাইওভার, নগরীর বন্ধগেট-সিটি বাইপাস পর্যন্ত অযান্ত্রিক যানবাহন লেনসহ ফোরলেন সড়ক নির্মাণ কাজ, নগরীর কল্পনা সিনেমা হল থেকে তালাইমারী সড়ক প্রশস্তকরন ও সম্প্রসারণ কাজ, ভদ্রা রেলক্রসিং থেকে পারিজাত লেক হয়ে নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত ফোরলেন সড়ক উদ্বোধন, হাইটেক পার্ক থেকে ঢালুর মোড় পর্যন্ত কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ, পুঠিয়া-বাগমারা মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ, রাজশাহী সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ, চারঘাট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ভবন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাল্টিপারপাস ভবন, রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের ৬তলা বিশিষ্ট ছাত্রী নিবাস, রাজশাহী সদর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন, বাগমারার ভবানীগঞ্জ-কেশরহাট সড়ক, পদ্মা নদীর ড্রেজিং প্রকল্প, রাজশাহী পিটিআইয়ের বহুমুখি অডিটোরিয়াম নির্মাণ, চারঘাট ও বাঘায় পদ্মানদীর বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প।

ইতোমধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা রাজশাহীতে অবস্থান করে সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষন করছেন। পুরো নগরজুড়ে ছেয়ে গেছে ব্যানার ফেষ্টুন আর তোরনে। নগরীকে দৃষ্টিনন্দন করে উপস্থাপনের জন্য পরিষ্কার করা হয়েছে। সড়ককে শোভা পাচ্ছে রং-বেরংয়ের পতাকা। নতুন করে লাগানো হয়েছে রাজকীয় ঝাড়বাতি। গ্রীন সিটি, ক্লিন সিটি হিসাবে নগরীকে উপস্থানের জন্য চেষ্টার কমতি নেই। জনসমাবেশকে ঘিরে পুরো নগরীকে মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। যানবাহন চলাচল ঠিক রাখতে আরএমপির ট্রাফিক বিভাগ নিয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।