Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে

বিবিসির তথ্যচিত্রে মোদির নিষেধাজ্ঞা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনাকারী একটি বিবিসি তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করায় ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু গণমাধ্যম পর্যবেক্ষক। তারা বলেছে যে, ভারত সরকার ২০২১ আইটি নিয়মের অধীনে একটি বিবিসির ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোশ্চেন’ শীর্ষক তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী আটকে দিয়ে তার জরুরি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। বিবিসির এই তথ্যচিত্রটি ২০০২ সালে মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে দাঙ্গার সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তার নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, যেখন প্রায় ১ হাজার লোক নিহত হয়েছিল, এবং যাদের অধিকাংশই মুসলিম ছিল। মানবাধিকার কর্মীরা আসল নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার বলে জানিয়েছেন।

ইন্টারন্যাশনাল প্রেস ইনস্টিটিউট (আইপিআই) বুধবার তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষের জরুরি আইন আরোপের বিষয়ে তার শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে যে, দেশের ২০২১ আইটি বিধিগুলি অনলাইন এবং সংবাদ সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ এবং সংযত করার জন্য সরকারকে বিস্তৃত এবং অবাধ ক্ষমতা দিয়েছে। আইপিআই ডিরেক্টর অফ অ্যাডভোকেসি অ্যামি ব্রæইলেট বলেছেন, ‹মোদি সরকার তার নীতিগুলির যে কোনও এবং সমস্ত সমালোচনাকে শাস্তি দিতে এবং সীমাবদ্ধ করতে স্পষ্টতই আইটি নিয়মের অধীনে জরুরি ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। আমরা বেসরকারী মাধ্যমগুলিকে মোদি সরকারের অত্যধিক বিস্তৃত এবং অযৌক্তিক নিয়ন্ত্রণের দাবির বিরুদ্ধতা করার জন্য অনুরোধ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‹অনলাইন মাধ্যমগুলিকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, এই ধরনের পদক্ষেপের প্রতি তাদের সম্মতি ভারতে সমালোচক, সাংবাদিক এবং কর্মীদের নীরব করার জন্য সরকারের চলমান প্রচারণায় সহায়তা করবে না।›

ভারতের এনডিটিভি জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় বিবিসির তথ্যচিত্রটির নির্ধারিত প্রদর্শনীর আগে অননুমোদিত ছাত্র সমাবেশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা একটি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। এর সম্প্রচারকারীররা বলেছে যে, পুলিশ প্রদর্শনীর প্রায় এক ঘন্টা আগে সেখানে এক ডজনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে আটক করে। অন্যদিকে, দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে যে, ২৬ জানুয়ারির প্রদর্শনী এবং ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কারণে পুলিশ মোতায়েনটি আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ছিল।

তবে, একটি ব্যতিক্রমভাবে টুইটার গত গ্রীষ্মের প্রচারিত বিষয়বস্তু অপসারণের আদেশ পাওয়ার পর ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কিন্তুসাম্প্রতিক নতুন মালিকানার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি তার মামলাটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদে আগ্রহ ধরে রাখবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে, ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে এবং বিরোধীদের ভয় দেখিয়ে তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনী ব্যাহত করার একদিন পর সারা দেশের শিক্ষার্থীরা ভারতের প্রতিটি রাজ্যে তথ্যচিত্রটি প্রদর্শনীর প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (এসএফআই) সাধারণ সম্পাদক ময়‚খ বিশ্বাস বলেছেন, ‘তারা ভিন্নমতের কণ্ঠ রুদ্ধ করবে না।’ সূত্র: আলজাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ