Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পরীযায়ী পাখির কলকাকলীতে মুখর ফেনীর জাম্বারা দিঘী

সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় এসব পাখি থাকবে নিরাপদে

মো. ওমর ফারুক, ফেনী থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:২৩ এএম

প্রতিবছর শীতে ভিনদেশি পাখিদের আগমন ঘটে বাংলাদেশে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নদী, দিঘী, ঝিল, বিল, হাওর, বাওর ও বনাঞ্চল মুখর করে রাখে অতিথি পাখির ঝাঁক। অতিথি পাখির আগমনে প্রকৃতি সাজে এক অপরূপ সাজে। বিচিত্র সব পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ মোহিত করে তোলে চারপাশের পরিবেশ। পাখিপ্রেমী দর্শনার্থীরা অতিথি পাখিদের কলতানে মুগ্ধ থাকেন সবসময়। এসব ভিনদেশি অতিথি পাখি শীতপ্রধান চীন, রাশিয়া, সাইবেরিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের তীব্র শীতের প্রকোপ থেকে একটু উষ্ণতার খোঁজে আমাদের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে পাড়ি জমায়। কয়েক মাস পর শীত কমে গেলে পাখিগুলো ফিরে যায় নিজ দেশে।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের জাহানপুর এলাকায় অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জাম্বারা দিঘীতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ডিসেম্বরের শেষের দিকে অতিথি পাখিদের আগমন ঘটেছে। পুরো দিঘী পাখিদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ভিনদেশি পাখির মধুময় কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে ওই এলাকা। পাখিদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন দিঘীপাড়ে ভিড় করছেন অনেক দর্শনার্থী।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর ৪ একর আয়তনের ঐতিহ্যবাহী জাম্বারা দিঘীতে এসব পাখি অতিথি হয়ে এসে অবস্থান করেন ৩ মাস। মার্চের শুরুর দিকে শীত কমলে এরা আবার নিজ গন্তব্যে চলে যায়। এসব পাখি যাতে কেউ শিকার করতে না পারে সে জন্য বাড়তি সতর্কতা রয়েছে এখানে। চলতি শীত মৌসুমে এই দিঘীতে ১০ থেকে ১২ প্রজাতির পাখির আগমন ঘটেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বুনোহাঁস, গোলাপি রাজহাঁস, বিদেশি পানকৌড়ি, জলপিপি, সরালি, মানিকজোড়, ধূসর, বড়সারস, ছোট সারস, গুলিন্দা, গাঙচিল, বালিহাঁসসহ বিভিন্ন রংয়ের অতিথি পাখি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়া উদ্দিন মোল্লা বলেন, দিঘীতে প্রতিবছরের মতো এবারও হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। এ পাখিগুলোর সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি টিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসীও এদের রক্ষায় কাজ করছেন। পাখিগুলো তাদের আবাসস্থলকে নিরাপদ মনে করায় প্রতিবছর এখানে এসে অবস্থান নেয়। দিঘীতে অতিথি পাখির সৌন্দর্য দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষের সমাগম ঘটছে।
পাখিদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, অতিথি পাখিরা আমাদের দেশের মেহমান, আমাদের বন্ধু। সারাদিন এদের কিচিরমিচির ডাক, মুক্ত আকাশে ওড়াউড়ি দেখতে খুবই ভালো লাগে। আমরা চাই এসব অতিথি পাখির কেউ যেন ক্ষতি না করে। এরা অল্প কিছুদিনের জন্য আমাদের দেশে এসেছে। এরাতো কারো ক্ষতি করছে না। সবাইকে আনন্দ দিচ্ছে। পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল নিশ্চিত করতে তারা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
ফেনী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, শীত প্রধান দেশ সাইবেরিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথির পাখির আগমন ঘটে। এরা ডিসেম্বর মাসে দেশের বিভিন্ন নদী-দিঘী ও বনাঞ্চলে অবস্থান করেন। পরে শীত কমার সাথে সাথে তারা আপন নীড়ে ফিরে যায়। এসব অতিথি পাখি শিকার না করতে আইন করা হয়েছে। এ আইনের আওতায় বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি ও পাখির আবাস্থলের আশপাশের ব্যক্তিদের সচেতন করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমাদের সকলের উচিত সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় এসব পাখি যাতে রক্ষা পায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ