পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : কে এই ইমতিয়াজ। এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। বিবিসি বাংলাকে বাড়ির মালিকের মেয়ে জোনাকি রাসেল বলেছেন, শ্যামবর্ণ, দীর্ঘদেহী, স্বাস্থ্যবান, শ্মশ্রুমন্ডিত মুখমন্ডল এবং চশমা পড়া এক ব্যক্তি মোহাম্মদ ইমতিয়াজ।
তিনিই গত সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার আশকোনায় সূর্য ভিলা নামক নবনির্মিত ত্রিতল ভবনটির নিচতলার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। জোনাকি রাসেল মোহাম্মদ ইমতিয়াজের চেহারার এই বর্ণনা দিলেন এবং বলেন, ইমতিয়াজের স্ত্রী, চল্লিশ দিন বয়সী সন্তান এবং আরেক মহিলাসহ মোট চারজন থাকার কথা ফ্ল্যাটটিতে। বাড়িওয়ালার মেয়ে জোনাকি রাসেল তার কাছে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দেন। তিনিই বাড়িটির দেখভাল করেন। তার পিতা প্রবাসী। জোনাকি রাসেল নিজে অবশ্য ওই বাড়িতে থাকেন না, তিনি থাকেন পাশেই তার শ্বশুরালয়ে। সূর্য ভিলার তিন তলায় থাকেন তার মা এবং এক বোন। বাসা ভাড়া নেয়ার শর্ত হিসেবে সবার জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করেন ইমতিয়াজ, বলেন মিসেস রাসেল।
এসব কাগজপত্র ও তাদের পূরণ করা ভাড়াটিয়া ফর্ম যথারীতি থানায় জমাও দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মিসেস রাসেল। বাড়ি ভাড়া নেয়ার পর তারা যথাসময়ে বাসায় ওঠেন। কিন্তু কখনো খুব একটা বাইরে বের হতেন না। আমরা বলতাম, আপনি বের হন না কেন? উনারা হিজড়ার অজুহাত দিত সবসময়। বলতো ছোট বাচ্চা আছে, হিজড়ারা অনেক বিরক্ত করে। সামনের বাসা থেকেও নাকি তারা ১০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে বলেন জোনাকি রাসেল। ‘আমি যতবার গেছি, তখন ছোট বেবি আর ওয়াইফটাই ছিল।’
যে কিশোরটি পুলিশি অভিযানে বাসার মধ্যে নিহত হয়েছে, তাকে কখনো দেখেননি বলে জানান মিসেস রাসেল, এমনকি যে মহিলা আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে তাকেও তিনি দেখেননি।
তবে মোহাম্মদ ইমতিয়াজের সঙ্গে অনেকবারই দেখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ‘অনেক সময় ভাড়া নেয়ার জন্য যেতাম, তখন উনি দরজা খুলত। ভাড়াটা দিত। অনেক সময় পানি না থাকলে বলত, পানি নাই।’
কিন্তু শনিবারের অভিযানের পর ওই ভবনটিতে মারা যাওয়া বা গ্রেফতার হওয়া কারো মধ্যে জোনাকি রাসেলের বর্ণনা করা এই মোহাম্মদ ইমতিয়াজ নেই।
বোঝাই যাচ্ছে, সে ভাড়াটিয়া হিসেবে যে পরিচয়পত্র সরবরাহ করেছে, সেটি জাল ছিল। আর ওই ফ্ল্যাটটিকে বিভিন্ন সময় নিহত অভিযুক্ত জঙ্গিদের স্ত্রী ও সন্তানদের একটি আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করা হতো, যেটির ব্যবস্থাপনায় ছিল এই কথিত মোহাম্মদ ইমতিয়াজ। কিন্তু সে আসলে কে? আর কোথায়ই বা গেল?
পুলিশ বলছে, সে পলাতক, তাকে খোঁজা হচ্ছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মহিবুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, গতকাল শনিবার যে দু’জন মহিলাকে আটক করা হয়েছে আশকোনার ওই বাড়িটি থেকে, তাদের নিয়েই এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
‘আমরা যাকে খুঁজছি, নব্য জেএমবির আরেকজন নেতা মুসা, সেই ইমতিয়াজ নাম নিয়ে বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল বলে জানান মহিবুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে কিছু গোয়েন্দা তথ্যও পুলিশের কাছে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই তথ্যের ভিত্তিতেই এখন অভিযান চালানো হচ্ছে।
গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শুরু হয়ে ১৬ ঘণ্টা ধরে ওই বাড়ি ঘিরে অভিযান চলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। ‘অপারেশন রিপল ২৪’ নামে ওই অভিযানে নিহত হন দুই ‘জঙ্গি’। তাদের মধ্যে এক নারী ‘জঙ্গি’ আত্মঘাতী হন। আত্মসমর্পণ করেন দুই শিশুসহ দুই নারী। আহত এক শিশু ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।