Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে পুলিশ সোর্স খুনে আরেক সোর্সসহ গ্রেফতার ৬

নেপথ্যে মাদকের বিরোধ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

মাদকের কারবারে বিরোধের জের ধরে খুন করা হয় পুলিশ সোর্স মো. কায়েসকে। আর এ ঘটনায় জড়িত পুলিশেরই আরেক সোর্স হুমায়ুন কবির। তাকেসহ আলোচিত খুনের ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে তাদের গ্রেফতারের পর গতকাল মঙ্গলবার এ হত্যাকাÐের রহস্য উদঘাটনের কথা জানান নগর পুলিশের কর্মকর্তারা।

গ্রেফতার ছয়জন হলেন- হুমায়ুন কবির ওরফে মাসুদ তালুকদার (৪৫), মো. খোকন ওরফে সোনা মিয়া (৩১), রফিকুজ্জামান সানি ওরফে আফরান (২২), নজরুল ইসলাম (২৩), মো. রায়হান (২১) ও আব্দুল কাদের জীবন (২২)। গত ২১ জানুয়ারি কর্ণফুলী থানার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে সিডিএ আবাসিক এলাকায় সড়ক থেকে পাশে মোহাম্মদ কায়েসের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে লাশ সেখানে ফেলে যাওয়া হয়। তার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ কিছুই খোয়া যায়নি। এ অবস্থায় এটি পরিকল্পিত হত্যাকাÐ ধরে নিয়ে তদন্তে নামে ডিবি।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর-পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন সাংবাদিকদের জানান, নিহত কায়েস ও গ্রেফতার হুমায়ুন কবির দুইজনই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সোর্স (তথ্যদাতা) হিসেবে কাজ করতেন। চার মাস আগে তারা আইস (মাদক) কিনতে রাঙামাটিতে পাহাড়ি এক ব্যক্তির কাছে যায়। পরবর্তীতে ওই মাদক কারবারিদের হাতে মারধরের শিকার হয় হুমায়ুন। সেখান থেকেই মূলত তাদের দ্ব›দ্ব শুরু হয়। এ দ্ব›েদ্বর জেরে হুমায়ুন তিন মাস ধরে কায়েসকে খুন করার পরিকল্পনা করছিল। অবশেষে গত ২০ জানুয়ারি পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে খুন করা হয় কায়েসকে।

ডিবির কর্মকর্তারা জানান, কায়েস ও হুমায়ুন রাঙামাটিতে মাদক কিনতে যাওয়ার দুই-একদিন পর সেই মাদক কারবারীরা হুমায়ুনকে মাদক দেখতে আবার রাঙামাটিতে যেতে বলে। ওইদিন হুমায়ুনকে তারা পুলিশের সোর্স সন্দেহে বেদম মারধর করে। যেখান থেকে সে প্রাণে বেঁচে যায়। কায়েস মাদক কারবারিদের কাছে হুমায়ুনকে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল বলে সন্দেহ ছিল তার। তখন থেকেই মূলত সে কায়েসকে খুন করার পরিকল্পনা করে। তিন মাস ধরে হুমায়ুন কায়েসের সাথে সখ্য বাড়িয়ে দিয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে তাকে ডেকে এনে খুন করার পরিকল্পনা করলেও কায়েস কখনও একা তার সঙ্গে দেখা করতেন না। যার কারণে কয়েকবার পরিকল্পনা করেও হুমায়ুন কায়েসকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়। যার কারণে হুমায়ুন তার অন্য এক বন্ধুর সঙ্গে কায়েসকে খুন করার বিষয়ে পরামর্শ করে এবং এক লাখ টাকার চুক্তি করে।

হুমায়ুনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তারা জানান, গত ২০ জানুয়ারি বিকেলে কায়েসকে ফোন করে বাসা থেকে ডেকে আনে। কিছুক্ষণ একসঙ্গে এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করে সন্ধ্যা নামার পর দুইজন একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ে সিডিএ আবাসিক এলাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। এ সময় কায়েসকে অটোরিকশায় রেখে হুমায়ুন মইজ্জ্যারটেক এলাকায় যায়। আরেকটি সিএনজি অটোরিকশা করে সে তার অন্য বন্ধু ও সহযোগীদের নিয়ে আবার কায়েস যে স্থানে ছিলেন সেখানে যায়। তারা ছুরি ও ভোমর দিয়ে অটোরিকশার দুই পাশ থেকে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে কায়েস নিজের জীবন রক্ষা করতে আবাসিক এলাকার ড্রেনের দিকে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। হামলাকারীরা সেখানে গিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ