পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : এবার রায়পুরার এমপি, সাবেক মন্ত্রী খোদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুই জেলা প্রশাসন জারিকৃত নিলক্ষার চরের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। লঙ্ঘন করেছেন জেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধি। পরপর দুইবার এমপি রাজু সমর্থিত তার দলীয় লাঠিয়াল বাহিনী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে টেঁটাযুদ্ধে লিপ্ত হবার পর এবার এমপি রাজু তার দলীয় নেতাদের নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের এটা তৃতীয় ঘটনা। আর এ ঘটনা নিয়ে এমপি রাজুর উপস্থিতিতেই রায়পুরার নিলক্ষার চরে নতুন করে দাঙ্গা সৃষ্টি হয়েছে। নিলক্ষার চরের ৭-৮টি গ্রামে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই দল লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে সৃষ্ট এ দাঙ্গায় কম-বেশি ১০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ১০টি বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। টেঁটাযুদ্ধ চলাকালে এমপি রাজুকে স্থানীয় ছক্কার মোড়ে ঘণ্টাকালব্যাপী অবরুদ্ধ থাকতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে রায়পুরার নিলক্ষার চরে এমপি রাজুর সমর্থক বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক সরকারের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কলহ চলে আসছে। দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট অন্তত ৮টি সংঘর্ষে ২ ব্যক্তি নিহত হবার পর গত ১২, ১৩ ও ১৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের এই দুই লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে ৩ দিনব্যাপী এক ভয়াবহ দাঙ্গা সংঘটিত হয়। এই গ্রাম্য দাঙ্গায় গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ৪ ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার পর পুলিশ সুপারের অনুরোধে নরসিংদী জেলা প্রশাসক রায়পুরার নিলক্ষার চরের দাঙ্গা উপদ্রুত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। এই ১৪৪ ধারা জারি অবস্থায়ই গত ৯ ও ১৮ ডিসেম্বর দুই লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে ২টি টেঁটাযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই টেঁটাযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয় এমপি রাজুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী লাঠিয়াল সর্দার রাজীব। এই বহু বিতর্কিত রাজীবই এখন জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য পদপ্রার্থী। আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নরসিংদী জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রায়পুরার নিলক্ষার চরের ভোট সংগ্রহের জন্য রাজীব, এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুকে তার বাড়িতে দাওয়াত করেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাজীব তার বাড়িতে গরু জবাই করে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করে। দুপুর ১২টার দিকে এমপি রাজু নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক চেয়ারম্যান, আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, হাইরমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক বাবলাকে নিয়ে বিতর্কিত লাঠিয়াল সর্দার ও জেলা পরিষদের সদস্য পদপ্রার্থী রাজীব আহমেদের জন্য ভোট চাইতে চরাঞ্চলের দাঙ্গা উপদ্রুত বিধ্বস্ত এলাকা নিলক্ষার চরে যান। এমপি রাজু তার গাড়ি ও মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে সরাসরি চলে যান হক চেয়ারম্যানের সমর্থক সহিদ মেম্বারের বাড়িতে। এই বহরের পেছনে সমর্থক হিসেবে থাকে বাঁশগাড়ি ও চরমধুয়ার দু’দল ভাড়াটে লাঠিয়াল বাহিনী। এমপি রাজুর গাড়ির বহর শহীদ মেম্বারের বাড়িতে পৌঁছার সাথে সাথেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় হক চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে যে, এমপির নেতৃত্বে তাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। পক্ষান্তরে রাজীবের সমর্থকরা এলাকায় রটিয়ে দেয় যে, হক চেয়ারম্যানের লোকেরা এমপির গাড়িবহরে হামলা করতে আসছে। দু’পক্ষের গুজবে উভয় লাঠিয়াল বাহিনীর মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। চার দিক থেকে টেঁটা-বলম, লাঠিসোটা এবং ককটেল নিয়ে লাঠিয়ালরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দাঙ্গার শুরুতেই লাঠিয়ালরা কাউয়া বাড়ির ৫টি ঘরে, শহিদ বাড়ির ৩টি ঘরে এবং আমিরাবাদ গ্রামের ২টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় এমপি রাজু ও তার দলীয় নেতারা দড়িগাঁও ছক্কার মোড়ে গিয়ে আশ্রয় নেন। এমপি রাজুর নিরাপত্তার জন্য পুলিশ তাকে কর্ডন করে রাখে। দীর্ঘ ঘণ্টাকাল সেখানে অবস্থান করার পর এমপি রাজু পুলিশ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় নিলক্ষার চর থেকে রায়পুরায় ফিরে আসেন। এমপি রাজু ফিরে আসার পর সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পূর্বে বড় বাড়ির কয়েকটি বাড়িতে নতুন করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে খবর পাওয়া যায়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।