Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সুরমা নদী খনন ২০ থেকে ১৫ ফুট গভীরতা বাড়বে

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বর্ষায় সুরমার আগ্রাসী রূপে ভয়াবহতা ছড়ায় সিলেটজুড়ে। উজানের দস্যুদের ঢলে দীর্ঘ দিনে ভরে গেছে সুরমার তলদেশ। বর্ষায় বন্যা, শীতে জীর্ণ-শীর্ণ কংকালসার হয়ে যায় সুরমার রূপ। সেকারনে অপরিহার্য হয়ে উঠে সুরমা খনন। বহুল প্রত্যাশিত সুরমা নদীর খনন কার্যক্রম অবশেষে শুরু হলো সিলেটে। খননের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে এ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সিলেটের সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় সুরমা নদীতে এ খনন কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, মানুষের দুর্গতি নিরসনে সুরমা নদী খনন শুরু হয়েছে। সুরমা নদীর খনন কাজ বন্যা মোকাবেলা ও ভাঙন রোধে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ড. আব্দুল মোমেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুরমা খননেই বন্যার ভয়াবহতা থেকে নগরবাসী রক্ষার যে একমাত্র উপায় প্রত্যশা অযৌক্তিক। তাদের মতে, নগরীর ড্রেনেজ সিস্টেমে যে নয়টি বড় খাল আছে, তা যদি খনন ও পরিষ্কার না করা যায় তবে বন্যার সময় অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার ঝুঁকি উড়িয়ে দেয়া যায় না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০২১ সালে মে ও জুনে বন্যায় স্মরনকালের ভয়াবহতা দেখেছে সিলেটের মানুষ। সুরমা নদীর পানি কোথাও তীর উপচে আবার কোথাও নগরীর পয়ঃনিষ্কাশনের যে নয়টি বড় খাল রয়েছে, তা বেয়েই পানি ঢুকতে শুরু করে নগরীতে। নগরীর এক-তৃতীয়াংশ এলাকার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে পড়ে। প্রবল এই বন্যার সময় বেশকিছু কারণ খুঁজে বের করেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে প্রধান কারণ ছিল সুরমানদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পানির ধারণ ক্ষমতা হ্রাস, নদীর দুই তীরে শহর রক্ষা বাঁধ না থাকা, নগরীর ভেতর দিয়ে বয়ে চলা নয়টি খাল ময়লা-আবর্জনা আর পাহাড়ি বালিতে ভরাট হয়ে যাওয়া। বন্যার ভয়াবহতায় করণীয় ঠিক করতে গত বছরের ২২ জুন সিলেট সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় সিলেট সার্কিট হাউজে এসব বিষয়ই তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুই তীরে শহর রক্ষাবাঁধ ও খালগুলোয় সুইচ গেট নির্মাণের প্রস্তাবনা তুলে ধরে বরাদ্দ চাওয়া হয়। বন্যার পর পেরিয়েছে ৫ মাস। আরও ৫ মাস পর বন্যার মৌসুম ঘুরে আসবে আবারও।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এলকার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহীদুল ইসলাম বলেন, সুরমা নদী কানাইঘাট থেকে ছাতক পর্যন্ত খননের জন্য তারা আগেই একটি ডিপিপি জমা দিয়েছিলেন। সেটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। তবে গত বন্যার পর শুধু নগরীর পাশ দিয়ে বয়ে চলা সুরমার ১৮ কিলোমিটার খননের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে কুচাই থেকে লামাকাজি পর্যন্ত কোথাও ২০ ফুট আবার কোথাও ১৫ ফুট খননের ডিজাইনসহ দেওয়া হয়েছে কার্যাদেশ। এরই প্রেক্ষিতে সুরমায় শুরু হচ্ছে খনন কার্যক্রম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ