Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদেশিদের ফরমায়েশে গণতন্ত্র নয়

শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক আসতে বাধা নেই

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০২ এএম

‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে নির্বাচন নির্বাচনে যত পর্যবেক্ষক আসুক বাধা নেই, তবে বিদেশিদের ফরমায়েশে দেশের গণতন্ত্র চলবে না’ মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্র নষ্টকারী বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের বুলি শোভা পায় না। আমাদের নিজ দেশের গণতন্ত্র আমরাই চালাবো। বিদেশি কারো ফরমায়েশে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় প্রধান কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে বিদেশিরাও কিছু বলেননি। কারণ, তাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। শত বাধা বিপত্তির মধ্যেও শেখ হাসিনা গণতন্ত্র বিকাশে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে তৃতীয় দফায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। দলের সাংগঠনিক স্থরে সভাপতি শেখ হাসিনার পরই তিনি দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

নির্বাচন ব্যবস্থায় বিদেশিদের ভূমিকা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা নির্বাচন করি, কেমন নির্বাচন করি তা দেথকে পর্যবেক্ষক হিসেবে বিদেশিদের শেখ হাসিনা স্বাগত জানিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে বিদেশিরাও কিছু বলেননি। কারণ, তাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। বাংলাদেশে অহেতুক কেন তত্ত্বাবধায়কের নামে বিএনপির চক্রান্তমূলক রাজনীতি? আসলে বিএনপি সরকারের উন্নয়ন অর্জনে হেরে যাবে, তারা আজকে দিশেহারা। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে সেই বিদেশিরাও বিএনপির পক্ষে কিছুই বলে না। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী ডোনাল্ড লু ঢাকায় এসেও তাদের (বিএনপি) সঙ্গে বৈঠক হয়নি। তারা যার সঙ্গে ইচ্ছা বৈঠক করুক। কিন্তু আমাদের এখানের গণতন্ত্র আমরাই চালাবো। কারও ফরমায়েসে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না। আমরা নির্বাচন করি, কেমন নির্বাচন করি পর্যবেক্ষক হিসেবে শেখ হাসিনা স্বাগত জানিয়েছে। সে আমেরিকা থেকে আসুক, ইউরোপ থেকে আসুক, যেখান থেকে ইচ্ছা পর্যবেক্ষক আসুক এখানে কোন বাধা নেই। এখানে কারো জন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে মৃত ইস্যু জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশীদারিত্বমূলক। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। সরকারের পরিবর্তন চাইলে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণমানুষের দল। যেকোনও দুর্যোগে মানুষের পাশে থাকা আওয়ামী লীগের সাত দশকের ইতিহাস। এটাই আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য।
বিএনপির আমলে ভোটচুরির রেকর্ড হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে না দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না। তবে বিভিন্ন সময় ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। কিন্তু বারবার হত্যা রাজনীতির শিকার হয়। এটাই বাস্তবতা। ২১ আগস্ট জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। বিএনপির নেতাদের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির ঘরেই গণতন্ত্র নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বিএনপি কখন যে কী বলে নিজেদের ঘরটাতে তাদের গণতন্ত্র নেই। ফখরুল সাহেব নিজেরও হয়তো মনে নেই কবে তার সম্মেলন হয়েছে। আমি তিন তিনবার সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেলাম, কিন্তু বিএনপি? ঢাকা থেকে তৃণমূলে, আমাদের কয়েক হাজার সম্মেলন হয়ে গেছে, কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড ইউনিট পর্যন্ত। অথচ তাদের (বিএনপি) নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি নেই। সেই সুযোগ তাদের দলে নেই, সহযোগিদের সম্মেলন নেই, ঘরে বসে কমিটি দিচ্ছে। এই দল আবার আওয়ামী লীগকে গণতন্ত্র শেখাতে আসে। ফখরুল সাহেবদের লজ্জা পাওয়া উচিৎ। তাদের আমলেই গণতন্ত্রের উপর আঘাত এসেছে সবচেয়ে বেশি। তাদের আমলে প্রহসনমূলক ১৫ ফেব্রুয়ারি মাগুরা মার্কা নির্বাচন, হ্যাঁ/না ভোট। যেখানে হ্যাঁ ভোটের পার্সেন্টেজ ১১৪ পার্সেন্টও হয়েছে। জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ/না ভোট। তাদের আমলে ভোট চুরির রেকর্ড হয়েছে, সকাল ১১টার মধ্যে ভোট শেষ, তাদের আমেলে ১ কেটি ২৩ লাখ ভোয়া ভোটার হয়েছে, যেজন্য ওয়ান ইলেভেন হয়েছে, এটা অন্যতম কারণ।

আওয়ামী লীগের গঠিত উপকমিটিতে সর্বোচ্চ একশ’ জন রাখার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে উপ-কমিটির চেয়ারম্যন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন সেই প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন করবো। উপ-কমিটি গঠনে, খুব বড় কমিটি করলে বসতেও সমস্যা হয়। এটা একশ’ জনের মধ্যে রাখলে ভালো হয়। সর্বাধিক একশ জনের মধ্যে, ৯১ বা ১০১ সর্বাধিক রাখতে হবে। আমাদের তিন চারশ’ কর্মী বছরে পার্টি অফিসে ঘুরছে। কাজেই উপ কমিটিটা স্বান্ত¡না। ওরা যাবে কোথায়, একটা পরিচয় না থাকলে যাবে কোথায়।

অন্য বক্তারা বলেন, যেকোনও দুর্যোগ, দুর্বিপাক কিংবা বিপদ-আপদ সবসময়ই মানুষের পাশে থাকে আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থাকলেও পাশে থাকে। এ জন্য বাংলার মানুষ আওয়ামী লীগকে নিজেদের দল মনে করে।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রোকেয়া সুলতানাসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।



 

Show all comments
  • মর্মভেদী ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৩৭ এএম says : 0
    রাইট স্যার
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৪১ এএম says : 0
    আপনাদের তে এখন দেশে কোনো জনসমর্থন নেই। যার কারণে কোন সময় কির কন সেটা আপনারাই তো জানেন না
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৪০ এএম says : 0
    বিদেশিরা তো এদেশে কোনো ফরমায়েশি করতো না। এটা তো স্যার আপনারাই দেখিয়েছেন কীভাবে ভারতের থেকে পরামর্শ শুনে নির্বাচন করতে হয়। যার কারণে এখন অন্য দেশের লোকেরা ফরমায়েশির করার সাহস পায়। এখন তো আপনারা বিপদে আছেন। যার ফলে কি করবেন সেটা এখন বুঝে পান না
    Total Reply(0) Reply
  • Rezaul ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৪২ এএম says : 0
    এখন কি আপনারা বিরোধী কোনো মত সহ্য করেন স্যার। এর দ্বারাই তো বুঝা যায় আপনারা চান এখন জোড় করে ক্ষমতায় থাকতে
    Total Reply(0) Reply
  • arbi ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৮:৪৪ এএম says : 0
    আমাদের নিজ দেশের গণতন্ত্র আমরাই চালাবো। বিদেশি কারো ফরমায়েশে বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • শওকত আকবর ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:০০ এএম says : 0
    বিদেশীরা আমাদের মডেল সরবারহ করতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ২১ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:১৯ পিএম says : 0
    আমরা মুসলিম আমরা কাফের গণতন্ত্র চাই না আমরা চাই কোরআনের শাসন তাহলে দেশের মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে এবং দেশটাকে আমরা করতে পারবো কোন গরিব লোক থাকবে না এদেশে>>>>ইন্ডিয়ার গোলামী করে আমাদের দেশ থেকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ