পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাজারের পণ্যমূল্যের আগুন যেন নিভছেই না। ভরা মৌসুমে ৮০ টাকা কেজি দরে সিম কিনে খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের। অথচ গত বছর এ সময় সিমের কেজি ছিল ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা। মাঘ মাস চলছে। ভরা শীতের মৌসুমে রাজধানীর বাজারে মিলছে না স্বস্তি। সরবরাহ ভালো থাকার পরও এক সপ্তাহের ব্যবধানে শাক-সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দামও। কমতির দিকে কোনো পণ্যমূল্য নেই।
মাছ ও গোশতের বাজারও অন্যান্য সময়ের মতো এখনও চড়া। বাজারের এমন চড়া অবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। প্রচুর সরবরাহ তারপরও সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার কোনো কারণই খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, পরিবহন খরচ আগের চেয়ে বেশি দিতে হচ্ছে। ঘাটে ঘাটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, পরিবহণ সংগঠন ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে চাঁদা দিতে হয়। তাই দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরিবহন খরচ বেড়েছে অথচ আগে সড়কে চাঁদা দিতে হতো কিনা জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেননি কেউ। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় পেশাজীবী ও কর্মজীবী মানুষ সাপ্তাহিক বাজার করে থাকেন। সে কারণে অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার বাজারে সব ধরণের পণ্যের সরবরাহ বেশি। সরবরাহ বেশি হলে দাম কিছুটা হলেও কম হওয়ার কথা। উল্টো সব পণ্যের দাম বেশি।
রাজধানীর শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ি, ক্যাপ্তান বাজার, ফকিরের পুল বাজার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিমের কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে মান অনুযায়ী ৫০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গেল সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১০০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১২০ টাকা। ১০ টাকা বেড়ে গোল ও লম্বা বেগুন কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল,এমনিভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়ে বরবটি প্রতিকেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা, করলা প্রতিকেজি ১২০ টাকা, উচ্ছের প্রতিকেজি ৮০ টাকা, মুলা প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতিকেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা, নতুন আলুর প্রতিকেজি ৩০ টাকা, বগুড়ার আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পটল প্রতিকেজি ১২০ টাকা, টমেটো প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিকেজি ৪০ টাকা, গাজর প্রতিকেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মাঝারি আকারের লাউ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গেল সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। যে ফুলকপি ও পাতাকপি গেল সপ্তাহে ২০ টাকা ছিল তা এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায় দাম আগের মতোই চড়া আছে। রুই মাছ প্রতিকেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, পাবদা প্রতিকেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ প্রতিকেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট টেংরা প্রতিকেজি ৪০০ টাকা, দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙাশ ৬০০ টাকা, ছোট বোয়াল প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ছোট কাতল প্রতিকেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, ছোট পাঙ্গাশের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ছোট কাঁচকি প্রতিকেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, টাকি মাছের প্রতিকেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শোল মাছ প্রতিকেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া প্রতিকেজি ২২০ টাকা, ছোট চিংড়ি প্রতিকেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। প্রতিকেজি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি মুরগি ২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা ও গরুর গোশত প্রতি কেজি ৭০০ টাকা এবং খাসির গোশত ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম গেল সপ্তাহের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এক হালি ডিম ৪০ থেকে ৪২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল সপ্তাহে ডজন ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। তবে হাঁসের ডিম প্রতিটি ১৮ টাকা, হালি ৭০ টাকা এবং ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল এই দামেই বিক্রি হয়েছে হাঁসের ডিম। মান ভেদে সরু মিনিকেট চালের কেজি ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া আমদানি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি নতুন পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আদা কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, রসুন কেজিপ্রতি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যাত্রাবাড়ি বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে সবজির দাম খুব বেড়েছে, শীতকালীন সব ধরনের সবজির দাম অন্য সময় কম থাকলেও এখন দেখছি অনেক বেশি। সেই সঙ্গে মাছের দামও আগের চেয়ে বেড়েছে। আজকের বাজারে সব দোকান থেকেই সবজি আর মাছের দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। তুলনামূলক কম দাম হওয়ার কারণে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বাজারে সবচেয়ে বেশি কিনে পাঙাশ, চাষের কই, তেলাপিয়া আর রুই মাছ। কিন্তু বাজারে এসব মাছের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতারা বাজারে এসে এত দাম বৃদ্ধি দেখে অস্বস্তিতে পড়েছেন। শনিরআখড়া কাঁচাবাজারে বাজারে কথা হয় আবদুল আজিজের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি। মাছ, গোশত, শাক-সবজিসহ সব কিছুরই দাম বেড়েছে। শীতে কম দামে সবজি খেতে পাড়ছি না। বরং অতিরিক্ত বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। ভরা মৌসুমে এতো দাম কল্পনাও করিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।