পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশ-বিদেশ থেকে দলে দলে আসছেন জামাতবন্দি মুসল্লিরা
টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব আজ ২০ জানুয়ারি শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইজতেমা মাঠের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই দেশ-বিদেশের জামাতবন্দি মুসল্লিরা ময়দানে দলে দলে আসছেন। প্রথম পর্বের ন্যায় দ্বিতীয় পর্বেও বিপুল সংখ্যক মুসল্লির জমায়েত হবেন বলে আশা করছেন ইজতেমা আয়োজক কমিটি।
আগামী ২২ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৩ সালের বিশ্ব ইজতেমা। গতকাল বৃহস্পতিবার ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, পায়ে হেঁটে, ট্রাকে, পিকআপ গাড়ি নিয়ে যে যেভাবে পারছেন দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় যোগ দিতে আসছেন। মুসল্লিরা তাদের প্রয়োজনীয় মালছামানা নিয়ে নিজ নিজ জেলার জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন।
মাওলানা সাদ অনুসারী তাবলিগ জামাতের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম জানান, ইজতেমায় বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশ থেকেই তাবলীগ জামাতের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেন। এখানে তারা শীর্ষ আলেমদের বয়ান শোনেন এবং ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
তিনি বলেন, দেশের সব জেলা থেকে ৮৫ খিত্তার নজমের জামাত ইতোমধ্যে ময়দানে চলে এসেছেন। প্রতি খিত্তার জামাত, সেন্ট্রাল জামাতসহ দুই জামাতের প্রায় ২০ হাজার সাথি ময়দানে অবস্থান করছেন। তাদের নিয়ে সকাল থেকে ময়দানের বিভিন্ন বিষয়ে বয়ান হয়েছে। নিজামউদ্দিনের ৫০ জনের একটি জামাত বুধবারই ময়দানে চলে এসেছে। পাকিস্তানের জামাত ও নিজামউদ্দিনের জামাত থেকে মেহমানরা আসছেন। তাদের উপস্থিতিতে রাতে মাসওয়ারা হবে।
ইজতেমার আয়োজক কমিটির সহযোগী মো. মিজান জানান, বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুক্রবার থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বুধবার থেকেই দলে দলে তাবলীগ মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে এসে অবস্থান নিয়েছেন। তারা মাঠের ভেতরে ঢুকে নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। লাখ লাখ মুসল্লির উপস্থিতিতে ইজতেমা ময়দান প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। বাস, ট্রাক, ট্রেন পায়ে হেঁটে টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত মুসল্লিরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসছেন। রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত তাদের এ আগমন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের সুবিধার্থে আগামী ২২ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উত্তরা থেকে আগারগাঁ মেট্রোরেল ৯ ঘণ্টা চালানো হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২২ জানুয়ারি বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্টেশন দুটিতে এমআরটি পাস বিক্রি বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এর আগে ইজতেমার প্রথম পর্বে ঢাকার মেট্রোরেলে যাত্রী সমাগম ছিল ব্যাপক।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে গাড়ি পার্কিং সংক্রান্ত ডিএমপি ও জিএমপির নির্দেশনা: বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এর পক্ষ থেকে গাড়ি পার্কিং সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
১. খিলক্ষেত থেকে আদুল্লাহপুর হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে কোনো যানবাহন পার্কিং করা যাবে না।
২. ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যানবাহন যেসব স্থানে পার্কিং করা যাবে- ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ: ১৬ নং সেক্টরের বিজিএমইএ ভবন, ১০, ১১ ও ৫নং ব্রিজের ঢালে। সিলেট বিভাগ: উত্তরা ১৫নং সেক্টরের ২নং ব্রিজের ঢাল থেকে উলোদাহা মাঠ পর্যন্ত। খুলনা বিভাগ: উত্তরা ১৭ এবং ১৮নং সেক্টরের খালি জায়গা (বউবাজার মাঠ)। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ: প্রত্যাশা হাউজিং।
বরিশাল বিভাগ: ধউর ব্রিজ ক্রসিং সংলগ্ন বিআইডবিøউটিএ ল্যান্ডিং স্টেশন। ঢাকা মহানগরী: ৩০০ ফিট রাস্তা এলাকায় খালি জায়গা।
৩. নির্ধারিত পার্কিং স্থানে মুসল্লিবাহী যানবাহন পার্কিংয়ের সময় অবশ্যই গাড়ির চালক/হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন। মালিক ও চালক একে অপরের মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখবেন। যাতে বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা যায়।
দ্বিতীয় পর্বেও নিরাপত্তা চাদরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান : বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে টঙ্গী শহীদ আহসানুল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোলরুমে ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন তিনি।
জিএমপি কমিশনার বলেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরইমধ্যে পুরো বিশ্ব ইজতেমাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ইজতেমাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথম পর্বে যেসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল এবারও ঠিক আগের মতোই নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট থাকবে। আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো ইজতেমা ময়দানকে কয়েকটি সেক্টরে ভাগ করে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ উপলক্ষে ময়দানের আশপাশে ৭ হাজার ৫৩৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।