পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামবিরোধী সিলেবাসে প্রজন্মকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ানো ঈমানী দায়িত্ব। ইসলামবিরোধী বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেছেন। কোরআন, হাদিস বিরোধী শিক্ষা পাঠ্যপুস্তক থেকে বাতিলের দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা কামরাঙ্গীরচর নূরিয়া মাদরাসা ময়দান থেকে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার কামরাঙ্গীর চর জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় শিক্ষাকদের জরুরি বৈঠকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের আমীর আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ : দেশের শিক্ষানীতি নিয়ে ষড়যন্ত্র ও আলেম-ওলামাদের ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে কোর্টে হাজির করার বিষয়ে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহাম্মাদ ইয়াহহিয়া ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানের সন্তানদের ইমান আকিদা ও দেশপ্রেম ধ্বংসের জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়নের দায়িত্ব ইসলাম বিরোধী শক্তির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা মুসলমানের সন্তানদের নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদী মানসিকতা তৈরি করার জন্য শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে। শিক্ষা সিলেবাসের পরতে পরতে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ডারউইনের কুখ্যাত নাস্তিক্যবাদ ও আরএসএস-এর হিন্দুত্ববাদ দিয়ে ভরে ফেলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস। বানর থেকে মানুষ সৃষ্টির কুরআন-হাদীস বিরোধী মতবাদ পাঠ্যবইয়ে সংযোজন করা হয়েছে। হিজাব থেকে শুরু করে দাড়ি, ইসলামের এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার বিষয়ে ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে।
তারা বলেন, আমাদেরকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছিল, পাঠ্য বইয়ে ইসলাম বিরোধী কিছু থাকবে না। কিন্তু সেই কথা রাখা হয়নি। সর্বোচ্চ মহলের কাছে দাবি জানানোর পরেও ইসলামবিরোধী মতবাদগুলো কেন পাঠ্যবইয়ে থাকলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়।
হেফাজত নেতারা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি শিক্ষার্থীদের হাতে ইসলামবিদ্বেষী এসব বই-পুস্তক তুলে দেওয়া হয়েছে। এতে স্পষ্ট যে, পুরো একটা জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আমরা জানতে চাই, কারা এহেন গুরুতর অপকর্ম করেছে? তাদের সামনে আনা হোক। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। একই সাথে এই শিক্ষা সিলেবাসে থাকা ইসলামবিরোধী বিষয়গুলোসহ অসঙ্গতিপূর্ণ সকল বিষয় বাতিল করে নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। এ সিলেবাসে একদিনও পাঠদান আমরা মেনে নিতে পারি না।
তারা বলেন, হেফাজতে ইসলামের মামলায় কারাবন্দী আলেম-ওলামাদের আদালতে হাজির করার সময় সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ডান্ডাবেড়ি পরানো হচ্ছে। এ ঘটনা শুধু অমানবিক যে তা নয়, বেআইনিও। এইভাবে আলেমদের লাঞ্ছিত করা কারো জন্য শুভ হবে না। আলেমরা দেশের শত্রæ বা সন্ত্রাসী না। তাদের এভাবে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে তোলা চরম অমানবিক।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী কোরআন-হাদীস বিরোধী বিতর্কিত সিলেবাসে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে-এর নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ডারউইন তত্ব ও ইসলাম বিরোধী সিলেবাসের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে নাস্তিক ও পৌত্তলিক বানানোর ষড়যন্ত্র এদেশের তওহিদী জনতা রুখে দিবে। মাদরাসার ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বিভিন্ন বই এ নগ্ন ছবি, মূর্তিসহ বিতর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে ডারউইনের বিবর্তনবাদ ও হিন্দুত্ববাদ সংযোজন করে হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষ্টি কালচার বিরোধী বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিপথগামী করার চক্রান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে। ৯২ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে ইসলামপ্রিয় তাওহিদী জনতা এ জঘন্য সিদ্ধান্ত কিছুতেই মেনে নিবে না।
তিনি বলেন, পবিত্র কোরআন-হাদিসে স্পষ্ট লেখা আছে আদি পিতা হযরত আদম (আ.) থেকেই মানব জাতির বংশ বিস্তার হচ্ছে। ডারউইনের বিবর্তনবাদ তত্ত¡ সম্পূর্ন কোরআন বিরোধী। কোনো বিবেকবান মানুষ নিজেকে বানরের জাতি পরিচয় দিতে পারে না।
মনে হয় সরকারের সকল অর্জনকে বিনষ্ট করতেই একটি কুচক্রীমহল ব্রাহ্মণ্যবাদী ভিনদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে। বিগত কয়েক মাস যাবৎ বিতর্কিত এ সিলেবাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন, আলেম-উলামা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সরকারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান ও সভা-সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানানোর পরও জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কোনো কর্ণপাত করেনি। এসসিটিবির সূত্রে জানা গেছে (২০২৩- ২০২৭)-এর মধ্যে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিতর্কিত পাঠ্যপুস্তকে শিক্ষাক্রম চালুর সময় সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আপত্তিকর ও উলঙ্গ ছবিযুক্ত কোরআন-হাদীস বিরোধী, বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস বাতিল করে সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানের শিক্ষা সংস্কৃতির সাথে বর্তমান চাহিদাকে মিলিয়ে শিক্ষা কমিশনে আলেমদের সমন্বয়ে যুগোপযোগী সিলেবাস তৈরি করার জন্য সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরস্থ জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষকদের এক বৈঠকে সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দলের মহাসচিব ও জামিয়ার শিক্ষা সচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি, প্রধান মুফতি ও সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা সাঈদুর রহমান, মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, মাওলানা ইলিয়াস মাদারীপুরী, মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মুফতি আ ফ ম আকরাম হোসাইন, মুফতি রায়হান, মাওলানা কামরুল ইসলাম, মুফতি আবুল হাসান কাসেমী, মাওলানা জসিম উদ্দীনসহ জামিয়ার সকল শিক্ষকবৃন্দ। তিনি বলেন, বিজ্ঞান বইয়ের ১১ জন উলঙ্গ নারী পুরুষের ছবি, হিন্দুদের দেব-দেবীর নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবি, হিন্দু মহিলার শাঁখা পরা ছবি রয়েছে। এছাড়াও দুর্গাপূজা, গীতাঞ্জলিসহ মূর্তিপূজার সংস্কৃতিচর্চা শিক্ষা দেয়া হয়েছে। নবী ও সাহাবীদের নাম বাদ দিয়ে মন্দিরা, প্রিয়াংকা, মিসেল, ডেবিট, প্লাবন চাকমার মতো অমুসলিম নাম সংযোজন করা হয়েছে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঃ শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়নি বরং আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার জন্য অস্ত্র তুলে দেয়া হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে রক্ষার জন্য এ পাঠ্যক্রম বাংলাদেশে পড়তে দেয়া উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ ।
শিক্ষাক্রম ২৩ সংস্কার, বিতর্কিত পাঠ্যক্রম বাতিল ও ইসলামবিরোধী পাঠ্যক্রম প্রণয়নে জড়িতদের তদন্তপূর্বক শাস্তির দাবিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিলে রিয়াদ এসব কথা বলেন । কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ আরো বলেন, শিক্ষকরা হচ্ছে জাতির বিবেক। কিন্তু শিক্ষাক্রম প্রণয়নে জাতির বিবেকরা যখন চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নেয় তখন তা জাতির জন্য লজ্জার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বকীয়তা নষ্ট করতে এবং আগামী প্রজন্মকে নৈতিকতা বিবর্জিত জাতিতে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্র নিয়ে শিক্ষা সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। দেশীয় বোধ-বিশ্বাস বিরোধী সেক্যুলার শিক্ষাক্রম দেশের সর্বস্তরের শিক্ষার্থী অভিভাবক বুদ্ধিজীবীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিতর্কিত পাঠ্যক্রম বাতিল ও পাঠ্যক্রম প্রণয়নে জড়িতদের তদন্ত পূর্বক শাস্তি দিতে হবে অন্যথায় দেশব্যাপী সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সেক্রেটারি জেনারেল ইউসুফ আহমাদ মানসুর বলেন , শিক্ষা সিলেবাসকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের নীলনকশা অঙ্কন করা হচ্ছে। পাঠ্যপুস্তকে ইসলামের অন্যতম বিধান পর্দার বিরুদ্ধে নানা কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ডারউইনের মতবাদের মাধ্যমে আমাদের পুর্বপুরুষদেরকে বানর হিসেবে সাব্যস্ত করার চক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, বিতর্কিত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে সচেতন শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসতে বাধ্য হবে।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিতর্কিত শিক্ষাক্রম বাতিলের দাবিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ কতিপয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ২৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী থানা পর্যায়ে মানববন্ধন এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর স্মারকলিপি পেশ।
আগামী ২৯ জানুয়ারি সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে দেশব্যাপী মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট চিঠি প্রেরণ ।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী বলেছেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিরোধী লেখা সহ্য করা যায় না। শিক্ষার্থীদেরকে ধর্মহীন এবং নাস্তিক বানানোর চক্রান্ত বন্ধ করুন। অবিলম্ব পাঠ্যক্রমে ইসলামী শিক্ষাও সংস্কৃতি বিরোধী লেখা সম্বলিত পুস্তক বাতিল করুন। অন্যথায় ছাত্র সমাজ-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরম সঙ্কটাপন্ন। মানুষ চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্য অতিমূল্যের কারণে ক্রয় করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্প‚র্ণ ব্যর্থ। তিনি সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের দ্রæত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহŸান জানান। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। খেলাফত মজলিসের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
মহানগর সভাপতি মুহাম্মদ ফরিদ আহমেদের সভাপতিত্বে জেলা সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকীর পরিচালনায় সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ খেলাফত নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ খালেদ সাইফুল্লাহ, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মুফতি নুর মোহাম্মদ আজিজী, মাওলানা হারুনুর রশীদ ভ‚ইয়া, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ মজলিস মুহাম্মদ আশিকুর রহমান, বায়তুলমাল সম্পাদক মুহাম্মদ দেলোয়ার হুসাইন, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি সাকিব সাইফী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিলেট জেলা সভাপতি মাওলানা ইকবাল হোসাইন, মহানগর সভাপতি মাওলানা গাজী রহমতুল্লাহ, মাওলানা উদ্দীন চৌধুরী, সাবেক জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব, মাওলানা শিহাব উদ্দীন।
পীর সাহেব চরমোনাই : খুলনা ব্যুরো জানায়, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, ইসলামী ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবে মানুষ বিপদগামী হচ্ছে। ধর্মীয় শিক্ষার অভাবে অনেক মানুষ অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। ইসলামী ও নৈতিক শিক্ষার অভাবে সামাজিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। সামাজিক অবক্ষয়ের মারাত্মক অবনতির ফলে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে যুব সমাজ। এতে দিন দিন বেড়েই চলেছে অবাধ মেলামেশা। মানবিকতা, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ধর্মীয় শিক্ষা, পারিবারিক শিক্ষার অভাবে এমন অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। পীর সাহেব বলেন, আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যবোধ চর্চার কোনো ব্যবস্থা নেই। ব্যক্তি জীবনে যতটুকুু ইসলাম আছে তাও ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কোথাও মূল্যবোধ চর্চার কোনো ব্যবস্থা নেই। ধর্মের পাশাপাশি মূল্যবোধ জাগ্রত করার জন্য সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে মূল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বাংলাদেশে মুসলিম তরুণ-তরুণীদের আজ ধর্মীয় বিধি-নিষেধ যেভাবে মানার কথা ছিল সে ভাবে মানছে না। উল্টো বিজাতীয় কৃষ্টি-সভ্যতার উন্মাদনায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। ধর্মীয় অনুশাসন নেই বলেই আজ নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন ভীষণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা এখন মহামারির রূপ ধারণ করায় বর্তমানে সন্তানেরা পিতা-মাতার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। পরিত্রাণ চাইলে সর্বক্ষেত্রে ধর্মশিক্ষা ও ধর্মচর্চা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
পীর সাহেব বলেন, ধর্মীয় অনুশাসন না মানার কারণেই দেশে ধর্ষণ ও জিনা-ব্যভিচার বেড়ে চলেছে। বিবাহ বহিভর্‚ত যৌন সম্পর্ক ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। নারী-পুরুষদের অবাধ মেলামেশা বন্ধ না হলে ধর্ষণের মতো অনৈতিক কর্মকাÐ বন্ধ করা সম্ভব হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর খুলনা খালিশপুর গোয়ালখালী মাদরাসা মাঠে চরমোনাই মাহফিলের নমুনায় তিন দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিল ও হালকায়ে জিকিরের প্রথম দিনের উদ্বোধনী আলোচনায় পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন। তিনদিনের মাহফিলে আরো বয়ান করবেন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীসহ বরেণ্য ওলামায়ে কেরাম। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (একাংশ) : বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা আবু জাফর কাশেমী ও কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন আকন্দ এক বিবৃতিতে বলেন, ইসলাম শিক্ষা নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামবিরোধী শিক্ষা সিলেবাস চালু করে মুসলমানদের সন্তানদের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ও হিন্দুত্ববাদের অনুসারী বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। শুধু পাঠ্যপুস্তকে বিতর্কিত তত্ত¡ কপি পেস্টও ভুল তথ্য নয় । ইহুদিদের ও হিন্দুত্ববাদের অনুসারী বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নাস্তিক, মুরতাদ, ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের দ্বারা পাঠ্যসূচি রচনা করে সরকারের ভাব-মর্যাদা ক্ষণœœ করা হয়েছে। নেতৃদ্বয় বলেন, নতুন শিক্ষা সিলেবাসে ইসলাম ও ধর্মীয় মূল্যবোধে ওপর আঘাত হানা হয়েছে। তারা ইসলামবিরোধী শিক্ষা সিলেবাস বাতিল করে সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেয়ার জোর দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।