পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোটি টাকার খাটে পরী নামের মূর্তি থাকায়
মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন মুসলিম ক্রেতারা
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসরের পূর্বাচলে ২য় আসরের ১৯তম দিনেও বিক্রিতে খুশি নন ব্যবসায়ীরা। পণ্যমুল্যে ছাড় দিয়েও ক্রেতা পাচ্ছেন কম। তবে বাড়তে শুরু করেছে ক্রেতা ও দর্শনার্থীর সংখ্যা। বরাবরের মতোই প্রায় সব পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ ছিল বেশি। যদিও দেশিয় ও নিত্য পণ্যের দিকে ছাড় পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন ক্রেতারা। ফার্নিচার দোকানে ও প্যাভিলিয়নে ভীড় থাকলেও বিক্রি করতে দেখা যায়নি। সাধারণ ক্রেতাদের আকর্ষণে থাকা ১৬ পরীর খাট হলেও তার দাম কোটি টাকা শুনে সটকে পড়ছেন তারা। এদিকে খাটটিতে পরী নামের মূর্তি থাকায় মুসলিম ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
গতকাল মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ফার্নিচারের দোকানে ভীড় থাকলেও বিক্রি নেই খুব একটা। মেলায় থাকা পারটেক্স গ্রæপের ব্যবস্থাপক অশোক কুমার বলেন, আমাদের মেলার স্টল নেয়ার উদ্দেশ্য হলো প্রচার। বিক্রিকে প্রাধান্য দেয়া হয় না। যা হয় তাতেই সন্তুষ্ট। তবে মেলা থেকে দেশি ও বিদেশি তৈরি আদেশ পাওয়া যায়। যা ব্যবসায়ীক উন্নতিতে ভ‚মিকা রাখে।
মেলার ঘুরতে মুড়াপাড়ার বাসিন্দা জান্নাতি আক্তার ঝিম বলেন, বিদেশি পণ্যের প্রায় সবকটা স্টলে অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছে। যা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তাই শুধুমাত্র কিছু গৃহস্থালি পণ্য ক্রয় করে চলে আসছি।
মেলার সার্বিক নিরাপত্তা পরিবেশ নিয়েও হিমসিম খাচ্ছে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যারা। গত ১৯ দিনে মেলা থেকে ২৫ জন পকেটমার ও ছিনতাইকারীকে আইনের আওতায় নেয়া হয়েছে। দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, মেলার পাশে ঢাকা বাইপাস সড়কের অবস্থান। আর এ সড়কের ৮ লেনে উন্নয়ন কাজ চলমান। ফলে মেলায় প্রবেশে যানজট ভোগান্তি রয়েছে। তবে নিরাপত্তার জন্য ৩ শতাধিক সিসি ক্যামেরা আর ৭ শতাধিক পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে শিশুদের খেলনা আর শিশুপার্কে ভীড় দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি। পাঁচাইখা এলাকার বাসিন্দা গৃহিনী ফারজানা আক্তার হাসনা বলেন, মেলায় সব পণ্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে। তবে শিশুরা খেলাধুলার জন্য একটি মিনি পার্ক পেয়েছে। যা ভালো লেগেছে।
মেলায় ঘুরতে আসা জাঙ্গীরের বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, মেলার নামী দামী কোম্পানির পণ্য বিক্রি হচ্ছে কম। তাদের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। তবে মেলায় থাকা কমদামের পণ্য বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে মানের আর দামের দিক থেকে পার্থক্য আছে।
মেলায় কথা হয়, হোমটেক্সের ব্যবস্থাপক মাহফুজ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেলার দর্শনার্থী প্রচুর কিন্তু বিক্রি কম। যা বিক্রি হচ্ছে তাতে মাস শেষে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের মতে, মানুষ অর্থনেতিক সঙ্কট ও ব্যয় সংকোচন করতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেশি কিনছেন। বিলাসবহুল বা কম প্রয়োজনীয় পণ্য অধিকাংশই কিনছেন না। আর বিদেশি পণ্যের দাম বেশি হাঁকায় ক্রেতারা শুধু দেখছেন কিন্তু কিনছেন না।
মেলা প্রাঙ্গণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মনিটরিং ছিল দেখার মতো। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার ক্ষুন্ন হয় এমন অপরাধে দÐ দেয়া হচ্ছে। মেলায় প্রতিদিন অভিযোগ প্রমাণিত হলে নানা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করেছে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা ইনকিলাবকে বলেন, বাণিজ্য মেলা চলাকালে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিদিন মেলায় প্রতিষ্ঠানগুলো মনিটরিং করছি। জনস্বার্থে এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। মেলার পরিচালক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় এবার প্রচুর দর্শনার্থী হচ্ছে। তবে ঢাকা বাইপাস সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য যাতায়াতে কিছুটা কষ্ট হলেও মেলা ঘুরতে পারায় লোকজন সন্তুষ্ট।
এবারের মেলায় মোট স্টল ৫০৬টি। এর মধ্যে ১২ দেশের ৩১টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য নিয়ে এসেছে। পাকিস্তান, ভারত, চীন, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোর স্টল রয়েছে মেলায়। বিদেশি স্টলগুলোয় নানা রকম ছোটখাটো পণ্য ভালোই বিক্রি হচ্ছে। মেলায় প্যাভেলিয়ন, প্রিমিয়ার প্যাভেলিয়ন, মিনি প্যাভেলিয়ন, সাধারণ স্টলে বিভিন্ন সৌন্দর্যবর্ধক সামগ্রী, ইলেকট্রনিকস পণ্য, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য ও জুতা, খেলার সামগ্রী, খেলনা, স্টেশনারি, জুয়েলারি, সিরামিকস পণ্য, মেলামাইন পণ্য, দেশি বস্ত্র, আসবাবপত্র, হস্তজাতসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।