Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কনটেইনারে চলে যাচ্ছে আস্ত মানুষ!

বন্দর-ডিপোর সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ফিরে যাওয়া খালি কনটেইনারে আস্ত মানুষ চলে যাচ্ছে। সর্বশেষ মালয়েশিয়ার কেলাং সমুদ্রবন্দরে কনটেইনারের ভেতর থেকে এক বাংলাদেশি কিশোরকে উদ্ধার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে চট্টগ্রাম থেকে ওই কিশোর খালি কনটেইনারের ভেতর লুকিয়ে কেলাং বন্দরে পৌঁছায় গত ১৬ জানুয়ারি। এই ঘটনায় বন্দর-শিপিং খাতে রীতিমত তোলপাড় চলছে।

এর আগে গত ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালয়েশিয়া যাওয়া একটি খালি কনটেইনারে একজনের লাশ পাওয়া যায়। আগেও একইভাবে বন্দর থেকে কনটেইনারে করে সিঙ্গাপুর, ভারতে যাওয়ার অন্তত পাঁচটি ঘটনা ঘটে। একের পর এক এমন ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দর এবং বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে বন্দর ব্যবহারকারীদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এতে বিদেশে দেশের ভাবমর্যদাও ক্ষুণœ হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

কেলাং বন্দরে এক বাংলাদেশি কিশোরকে উদ্ধারের ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেই বন্দরের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক ইনকিলাবকে বলেন, তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর এ বিষয়ে বন্দর ব্যবস্থা নেবে। কিশোরটি বন্দর থেকে নাকি ডিপো থেকে কনটেইনারে উঠেছে তাও এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জাহাজটির মাঝখানে কোনো যাত্রাবিরতি ছিল না। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই যে এ ঘটনা ঘটেছে তা নিশ্চিত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

খালি কনটেইনারগুলো সাধারণত ডিপো থেকেই প্রাইম মুভার বা লরিতে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। প্রবেশের সময় বন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা সেই কনটেইনার তল্লাশি করে দেখেন এবং কাগজে সই দিয়ে বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেন। ডিপো থেকে লরিতে তোলার সময়ও ডিপোর গেইটে দুই দফা কনটেইনারে তল্লাশি চালানোর নিয়ম রয়েছে। এরপরও কিভাবে তাতে মানুষ ঢুকে পড়ে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

গত ১৪ অক্টোবর সীতাকুÐে বিএম ডিপো থেকে যাওয়া খালি কনটেইনারে মালয়েশিয়ায় একজনের লাশ পাওয়া যায়। এর আগে ২০১৬ সালে ভারতের বিশাখাপত্তনম বন্দরে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া একটি খালি কনটেইনারে মোহাম্মদ রোহান হোসেন (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুরগামী একটি জাহাজে কনটেইনার বোঝাই করার সময় বাবুল ত্রিপুরা নামের কেডিএস ডিপোর এক শ্রমিককে কনটেইনারের ভেতর থেকে উদ্ধার করেছিলেন বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা।

২০১১ সালে ঘুমানোর জন্য সহকর্মী আল আমীনকে নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে রাখা একটি খালি কনটেইনারে ঢুকেছিলেন দ্বীন ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। ওই বছরের ১ এপ্রিল তাদের নিয়েই হানসা কালেডো নামের একটি জাহাজ সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যায়। এর পাঁচদিন পর জাহাজটি সিঙ্গাপুর বন্দরে পৌঁছায়। কনটেইনারটি আরো পাঁচ দিন ওই বন্দরে পড়ে থাকার পর টার্মিনালের কর্মীরা আল আমীনের লাশ পান। আর দ্বীন ইসলামকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ