Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির লক্ষ্যে বেঞ্চ গঠন

হলিআর্টিসান হামলা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম

আলোচিত হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলা মামলার আপিল এবং ডেথ রেফারেন্স শুনানি হবে বিচারপতি সহিদুল করিম নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে। বেঞ্চটির অপর সদস্য হলেন বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ বেঞ্চ গঠন করেন। মামলাটি শুনানির জন্য ইতিমধ্যেই রেকর্ডপত্র বেঞ্চটিতে পাঠানো হয়েছে। আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার ও স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করা হলেও করোনা মহামারির কারণে এই মামলার শুনানির উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এর আগে বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই চাঞ্চল্যকর মামলার ডেথ রেফারেন্সের শুনানি চলতি বছরই হাইকোর্টে শুরু করা সম্ভব। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি প্রধান বিচারপতির নির্ধারণ করে দেয়া বেঞ্চে শুনানির জন্য উঠতে পারে। তিনি বলেন, হুিুলআর্টিসানে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় করা মামলায় সাত জঙ্গির ফাঁসির রায় হয়। ওই রায়কে আমরা সমর্থন করে আদালতে বক্তব্য রাখবো। কারণ রায়টি সঠিক রায়, জঙ্গিদের যে সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয়েছে সেটা সঠিকভাবেই দিয়েছেন বিচারিক আদালত।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতের বিভীষিকা সেই হামলা ও হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০১৯ সালের নভেম্বরে বিচারিক আদালতে ৭ জনকে মৃত্যুদÐাদেশ দেয়া হয়। রায়ের পর অতিক্রান্ত হয়েছে ৫ বছর। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার নিষ্পত্তি থমকে ছিলো। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার গুলশনানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ঘটেছিল নারকীয় জঙ্গি হামলা। জঙ্গিরা দেশী-বিদেশী নাগরিকসহ ২৩ জনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালির নাগরিক, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয় এবং একজন বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক। বাকি ২ জন ইশরাত আকন্দ ও ফারাজ আইয়াজ হোসেন বাংলাদেশী নাগরিক। হামলা প্রতিরোধে গিয়ে বোমার আঘাতে নিহত হন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন হামলাকারী ৬ জন। একজন ধরা পড়েন।

এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। এই মামলার তদন্ত চলাকালে একের পর এক অভিযানে ধরা পড়েন একাধিক জঙ্গি সদস্য। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই চার্জশিট দেন। একই বছর ২৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করেন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: মজিবুর রহমান। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর তিনি রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ এবং মামুনুর রশিদ রিপন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। মৃত্যুদÐপ্রাপ্তদের জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদÐও করা হয়।

এ মামলার বিচার চলাকালে ৮ আসামির ৬ জন কারাগারে ছিলেন। বিচার চলাকালে বাকি দুজন গ্রেফতার হন। আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(অ), ৭,৮,৯,১১,১২ ও ১৩ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়। মোট ২১১ জন সাক্ষীর ১১৩ জন সাক্ষ্য দেন।

২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত ৭ আসামির ডেথ রেফারেন্স ও মামলার যাবতীয় নথি হাইকোর্টে আসে। তৎকালিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুক প্রস্তুতের নির্দেশ দেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ