Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গুণে ভরা আলমন্ড খান কোলেস্টেরল কমান

| প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : আলমন্ডকে বাদামের রাজা বলা হয়। সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও স্ন্যাক গুণসম্পন্ন এই খাদ্যে রয়েছে পচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ফাইবার, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফলিক এসিড, ভিটামিন ডি ও  ই , খনিজ, প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট বা চর্বি। এগুলো দেহের জন্য খুবই উপকারী ও প্রয়োজনীয় উপাদান। খাদ্য তালিকায় কেন আলমন্ড রাখবেন সেসম্পর্কে এখানে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হলো।
কোলেস্টেরল : নিয়মিত আলমন্ড  খেলে উচ্চমাত্রার লিপোপ্রোটিন (হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন সংক্ষেপে এইচডিএল) বা ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় এবং লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল) বা খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস পায়। আলমন্ডে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড বা এককভাবে সুসিক্ত ও স্বাস্থ্য সহায়ক ফ্যাট রয়েছে। তাই প্রতিদিন ৭ গ্রাম আলমন্ড খেলে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত এলডিএল কোলেস্টেরল হ্রাস পায়।
হাড়ের স্বাস্থ্য :
আলমন্ড চমৎকার ¯œ্যাক পণ্য হিসেবে দীর্ঘদিন সুপরিচিত। আগেই বলা হয়েছে, এতে রয়েছে পচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস। এই পুষ্টিগুণবিশিষ্ট উপাদানগুলো হাড় তৈরি ও অস্থি রক্ষায় এবং দাঁত সুস্থ ও সুদৃঢ় রাখতে অতি আবশ্যক। এগুলোর ঘাটতি হলে অস্টিওপোরোসিস (হাড় রোগাক্রান্ত হয়ে ছিদ্র ছিদ্র হয়ে পড়ে এবং ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। অপরদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলমন্ড খেলে হাড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
ত্বকের যতœ :
ত্বক সুরক্ষায় ভিটামিন ই অত্যন্ত জরুরি। আলমন্ডে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই রয়েছে, যা এন্টি-অক্সিডেন্টের কাজ করে। এর ফলে সূর্যকিরণে কোষের ক্ষতি রোধ হয় এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। আলমন্ড মিল্কে রয়েছে ত্বকের আর্দ্রতা ও কোমলতার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচুর ভিটামিন ও প্রোটিন। আলমন্ড বাটা নিয়মিত লাগালে বলিরেখার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আলমন্ডের তেল ত্বককে মসৃণ করতে ব্যবহৃত হয়। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও হারানো জৌলুস ফিরিয়ে আনে । এই তেল ত্বকের গভীরে গিয়ে পুষ্টি যোগায়, ত্বকের শুষ্কভাব দূর করে, ত্বকের চুলকানি, র‌্যাশ ও ফোলা ভাব কমায় এবং চোখের নীচের কালি বা ডার্ক সার্কেল হালকা করে। এই তেল সব ধরণের ত্বকের জন্য উপযোগী।
মাথার চুলের মহৌষধ :
আলমন্ডে পর্যাপ্ত ভিটামিন-ডি ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে বলে এটি বিভিন্ন কসমেটিকে ব্যবহৃত হয়। দেহে ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে চুল পড়ে যায়। আলমন্ডকে চুলের জন্য মহা উপকারী মনে করা হয়। মথার খুলি আর্দ্র রাখতে এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে ও চুল পড়া রোধে সপ্তাহে অন্তত একবার আলমন্ডের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। মাথার ত্বকে আলমন্ডের তেল ম্যাসাজ করলে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। চুল সুন্দর, সিল্কী ও মজবুত হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ :
আলমন্ডের ফাইবার দুটি প্রধান ভোজনের মধ্যবর্তী সময়ে পেটকে ভরাট রাখতে সাহায্য করে। এই বাদামের মধ্যে থাকা অদ্রবণীয় ফাইবারগুলো অন্ত্রে এক ধরণের জেল তৈরি করে যা দীর্ঘ সময় দেহকে পরিতৃপ্ত রাখে। ফলে অল্প মাত্রায় আলমন্ড খেলেও ওজন হ্রাস পায়।
প্রসূতিকালেও আলমন্ড কার্যকরী :
আলমন্ডে প্রচুর ফলিক এসিড রয়েছে। এই উপাদানটি নবজাতকের জন্ম সমস্যা হ্রাসে সহায়ক। এটি টিস্যু গঠন ও কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য :
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আলমন্ড ফাইবার যথেষ্ট উপকারি। আলমন্ড খাওয়ার সময় পানি খেতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কেননা এতে হজম প্রক্রিয়া দ্রুত হয়। তবে খুব বেশি পরিমাণ আলমন্ড খেতে হবে না। অন্ত্রের আন্দোলন স্বাভাবিক রাখতে ৪/৫টি আলমন্ডই যথেষ্ট।
ডায়াবেটিস :
খাওয়ার পরে শর্করা ও প্রতিক্রিয়াশীল ইনসুলিনের মাত্রাবৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে আলমন্ড যথেষ্ট উপকারি একটি খাদ্য। এটি গ্লুকোজ তৈরির গোটা প্রক্রিয়াকে বহুলাংশে সাবলীল ও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। আলমন্ডের ফাইবার শরীরের কার্বেহাইড্রেট শোষণের গতি কমায়। ফলে ডায়াবেটিসের প্রতিরোধে এর জুড়ি নেই।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি :
আলমন্ড দেহে ক্ষারত্বের মাত্রা ঠিক রাখতে সহায়তা করে। এর ফলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এই বাদামে বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকূল স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিহত করে রোগ পতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এতে কোলন ক্যান্সারের আশঙ্কা কমে। কেমোথেরপি চলাকালে আলমন্ড মিল্ক খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ