পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে এ শ্রদ্ধা জানান তিনি।
পরে ফাতেহাপাঠ ও ১৯৭৫’র ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ভবনে চলে যান।
এর আগে সকাল ৮টা ১১ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ছোট বোন শেখ রেহানা নিয়ে সড়ক পথে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। বেলা ১০টা ৫৫ মিনিটে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে এসে পৌঁছান।
২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে ১০ম বারের মতো সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী দু’দিনের ব্যক্তিগত সফরে টুঙ্গিপাড়ায় এলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় কিছু সময় অবস্থান করেন। পরে তিনি সড়ক পথে খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে পৌঁছে দীঘলিয়ার নগরঘাট এলাকায় প্রধানমন্ত্রী তার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে পাকিস্তান আমলে ক্রয় করা ১৪০ শতাংশ জমির উপর নির্মিত দু’টি গোডাউন পরিদর্শন করেন।
এদিকে খুলনার ভৈরব পাড়ে দিঘলিয়ায় মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতি বিজড়িত জমি ও পাট গোডাউন ঘুরে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বোন শেখ রেহেনাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যক্তিগত সফরে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে গোপালগঞ্জ থেকে সড়কপথে খুলনার দিঘলিয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। নগরঘাট ফেরি পার হয়ে বিকাল ৪টায় তাঁর মায়ের নামে কেনা জমি ও পাট গোডাউনে যান। সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে জায়গাটি ঘুরে দেখেন।
দিঘলিয়া থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী খুলনা নগরীর শেরে বাংলা সড়কে অবস্থিত প্রয়াত চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বঙ্গবন্ধু খুলনায় এলে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন। স্থানীয়ভাবে বাড়িটি শেখ বাড়ি নামে পরিচিত। এই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। এরপর সড়ক পথে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে খুলনা ত্যাগ করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে দুপুর থেকেই খুলনা শহর বাইপাস ও দৌলতপুর, ফুলবাড়িগেটে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহর খুলনায় প্রবেশ করলে নেতাকর্মীরা ¯েøাগান দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সড়কে লাগানো হয় অসংখ্য তোরণ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে খুলনায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রূপসা সেতু থেকে শুরু করে খুলনা শহর বাইপাস, দিঘলিয়া ও শেখপাড়ার চাচার বাড়ি এলাকায় মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সদস্য। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভৈরব ও রূপসা নদী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে দিঘলিয়ার ভৈরব নদের কোলঘেষে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক জমিতে পাট গোডাউন ও এক কক্ষ বিশিষ্ট ঘরসহ জমি কেনেন। বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসের এ জমি দেখাশোনা করতেন। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী এ জমির মালিক হলেও জমিটির কথা জানতেন না তিনি। ২০০৭ সালে তিনি তার আইনজীবীর মাধ্যমে এ জমির খোঁজ পান।
খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এই জমি দেখাশোনা করে থাকেন। ২০২০ সালের দিকে প্রধানমন্ত্রীর জমিতে থাকা পুরাতন পাট গোডাউনটি ভেঙে সেখানে নতুন করে গোডাউন ও একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। গোডাউনটি একজন পাট ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। গোডাউন সংলগ্ন পাকা রাস্তার নামকরণ হয়েছে শেখ রাসেলের নামে। এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী এই স্থান পরিদর্শন করলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি চতুর্থবারের মতো তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
এছাড়া, আজ ৭ জানুয়ারি শনিবার টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নবগঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটি, সভাপতি মন্ডলী ও কার্যনির্বাহী কমিটির এক যৌথ সভায় মিলিত হবেন। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন তিনি। এছাড়া গোপালগঞ্জে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন শেষে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।