পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে সক্রিয় ফাঁদ পেতে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্র
দেখতে সুন্দরী, পোশাকে স্মার্ট। সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। কোন পুরুষকে দেখলে ইশরায় কাছে ডাকেন। এরপর একান্তে কথা বলা, কিংবা কিছু সময় কাটানোর প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি হলে চড়ে বসেন আগে থেকে তৈরী অটোরিকশায়। গন্তব্যে যাওয়ার আগেই ওই অটোরিকশায় উঠে পড়েন তরুণীর কিছু পুরুষ সহযোগী। ফাঁদ পেতে ধরা ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হয় নির্জন কোনো বাড়ি কিংবা নিজেদের আস্তানায়।
সেখানে তাকে জিম্মি করে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। অনেকে মানসম্মানের ভয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে সরে পড়েন। সুন্দরী মহিলা দিয়ে ফাঁদ পেতে লোকজনকে জিম্মি করে টাকা আদায়কারী একটি চক্রের তিনজনকে গ্রেফতারের পর এমন অপরাধী চক্রের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। নগর পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, নগরীতে এমন বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করে প্রলোভন দেখিয়ে লোকজনকে ফাঁসিয়ে জিম্মি করে এই চক্রটি। তরুণীদের ইশারায় সাড়া দিয়ে অনেকেরই সর্বনাশ হয়েছে। বুধবার রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। তিনজন হলেন- মো. সজিব (২২), মো. সাকিব (২১) ও মো. সুমন (২০)।
গত ২৬ ডিসেম্বর নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ এলাকায় ফাঁদ পেতে এক ব্যক্তিকে অটোরিকশায় তুলে জিম্মি করে তারা। পরে বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা আদায় করে এই চক্রের সদস্যরা। ৩০ ডিসেম্বর নগরীর মুরাদপুর থেকে আরেক ব্যক্তিকে অপহরণ করে একই প্রক্রিয়ায় ২০ হাজার টাকা আদায় করে। উভয় ব্যক্তি পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে পুলিশ। পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেন, ওই বিকাশ নম্বর এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের সদস্যদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত বুধবার রাতে নগরীর পাঁচলাইশ, বায়েজিদ বোস্তামি ও চাঁন্দগাও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, বিভিন্ন এলাকায় নারী সদস্যদের কিছুটা নির্জন সড়কে দাঁড় করিয়ে তারা দূরে অটোরিকশা নিয়ে অপেক্ষায় থাকে। ওই নারী বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে অটোরিকশায় নিয়ে তোলে। এরপর চক্রের পুরুষ সদস্যরা তাকে জিম্মি করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টাকা আদায় করে।
পুলিশ জানায়, নারীদের টোপ হিসাবে ব্যবহার করে চক্রটি দীর্ঘদিন করে এই অপকর্ম করে আসছিল। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় ভুক্তভোগীরা আইনগত প্রতিকার চাননি। তবে সাহস করে এগিয়ে আসেন ওই দুই জন। তাদের একজন মো. মহসিন (৩৭)। তাকে হিলভিউ ২নং রোড এলাকা থেকে চক্রটি অপহরণ করে। পরে তাকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা দাবি করে। তিনি তাৎক্ষণিক বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পান। একই চক্র একই প্রক্রিয়ায় খোকা মারমাকে (৩২) গত ৩০ ডিসেম্বর মুরাদপুর থেকে অপহরণ করে জিম্মি করে। পরে বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা আদায় করে।
পুলিশ জানায়, চক্রটির মহিলা সদস্য একজনকে টার্গেট করে তাকে চোখের ইশারায় অথবা মোবাইলে কথা বলার নাম করে অসামাজিক মেলামেশার প্রস্তাব দেয়। এরপর অটোরিকশায় করে নির্জন স্থানে নিয়ে যেতে প্রলুব্দ করে। এরপর পথিমধ্যে তাদের অন্যান্য এক বা দুইজন সদস্য অটোরিকশায় উঠে ওই ব্যক্তিকে নির্জনস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে সবাই মিলে তাকে মারধর করে চাঁদা বা মুক্তিপণ দাবি করে। নগদ টাকা বেশি দিতে না পারলে মারধর করে এবং বিকাশ অথবা নগদের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। এক ফাঁকে ওই তরুণীর সাথে তার ছবি ধারণ করে রাখে। থানা পুলিশ করলে ওই ছবি পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এর আগে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদ পেতে লোকজনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ ও চাঁদা আদায়ের ঘটনায় বেশ কয়েকটি চক্র ধরা পড়েছে। তবে নগরীর রাস্তায় তরুণীর টোপ দিয়ে লোকজনকে জিম্মি করার ঘটনায় এই প্রথম কোন চক্রের সদস্যরা ধরা পড়ল। পুলিশ বলছে, ওই চক্রটির মতো নগরীতে আরও বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।