পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : যাদের নিজের ধর্মের ওপর আস্থা নেই এবং ধর্ম পালনের ভান করে তারাই ধর্মের নামে সংঘাত সৃষ্টি করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বড়দিন উদযাপন উপলক্ষে এবং বাংলাদেশের প্রথম কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও কে নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সত্যিকারে যাদের নিজের ধর্মের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস আছে তারা অন্যায় পদক্ষেপ নিতে পারে না। আসলে যারা ধর্ম পালনের ভান করে তারাই ধর্মের নামে সংঘাত সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, আমি নিজের ধর্ম যথাযথভাবে পালন করি। আমার ধর্মের ওপর আমার বিশ্বাস ও আস্থা আছে। তাই আমি অন্য ধর্মকে সমানভাবে সম্মান করি। আমি যদি বিশ্বাস করি এই বিশ্বটাকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। তাহলে এই পৃথিবীর সব কিছু মহান রাব্বুল আলামিনের সৃষ্টি। এখানে কোনো সংঘাত, দ্বন্দ্ব, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ কোনো কিছুরই স্থান নাই। মানবতাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা এনেছে। কাজেই এ মাটিতে প্রত্যেকটা মানুষ তার অধিকার নিয়েই বসবাস করবে।
বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার-যার উৎসব সবার। বাংলাদেশের মানুষের সেই উদারতা আছে। বাংলাদেশের মানুষ উদার, অনেক বেশি সহনশীল। বাংলাদেশের মানুষ অন্যকে সম্মান করতে জানে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর থেকে সাম্প্রদায়িতকতাকে উস্কে দিয়ে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা শুরু হয়েছিলো মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ আবার জেগে ওঠেছে।
বঙ্গবন্ধুর উদ্বৃতি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম পবিত্র জিনিস। ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করতে পারবে না। যার-যার ধর্মকে সম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে যেতে আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় বিছিন্নভাবে কয়েকজন ধর্ম গুরুকে হত্যার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মাঝে মধ্যে ছোটখাট ঘটনা ঘটে। অন্য ধর্মের মানুষ, এমনকি মুসলমানদের বেছে-বেছে হত্যা করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে।
বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময়কার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক উচ্চাবিলাস চরিতার্থ করার জন্য জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে-পুড়িয়ে মারতে পারে। এমন আন্দোলন করেই নাকি, তারা সরকার উৎখাত করবে।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে মানুষের সেবায় কাজ করছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি মনে করি, আমি জনগণের সেবক। মানুষের সেবা করে যাবো।
প্যাট্রিক ডি’ রোজারিওকে পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশের কার্ডিনাল নির্বাচিত করা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বলে কথা না। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে এটা আমাদের জন্য গর্বের, আমাদের জন্য আনন্দের। সারা বিশ্বে ১২১ জন কার্ডিনালের মধ্যে বাংলাদেশের একজনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যিনি পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন, আবার প্রার্থীও হতে পারবেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী বড়দিন উপলক্ষে কেক কাটেন। বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গোমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মতিউর রহমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ময়মনসিংহ ১ আসনের সাংসদ জুয়েল আরেং, মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ মহারাজ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব প্রনব কুমার বড়ুয়া, দ্য খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট বাবু মার্কুজ গোমেজ এবং দ্য মেট্রোপলিটান খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান অগাস্টিন পিউরিফিকেশন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ গেয়ে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানানো হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুল তুলে দেন বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গোমেজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।