পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুষ্টিয়া থেকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার উপজেলা মোড়ে অবস্থিত ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা অবহেলায় এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তি হলেন খুলনার নিউমার্কেট এলাকার জহুরুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুন। তাঁরা কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ভাদালিয়ার স্বস্তিপুরে ভাড়া বাড়িতে থাকেন।
২০২০ সালের ১ আগস্ট তানিয়া খাতুন নামে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়। এছাড়াও এই হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর বহু ইতিহাস রয়েছে। রয়েছে কোর্টে চলমান মামলাও।
জানা যায়, গত শুক্রবার রিমার প্রসব বেদনা উঠলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড
ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করান তাঁর স্বামী জহুরুল ইসলাম। ভর্তির পরে আল্ট্রাসনো করে চিকিৎসক জানান গর্ভাবস্থায় সন্তান মারা গেছে। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই বাচ্চা প্রসব করানো যাবে। এরপর একজন ২ বার দুটি ট্যাবলেট ঔষধ খাওয়ায়। এরপর থেকেই শুরু হয় প্রচন্ড পেট ব্যথা। ব্যথার যন্ত্রণা নিয়ে সারারাত অতিক্রান্ত হলেও সেখানকার কোনো চিকিৎসক, নার্স বা আয়াও আসেনি রোগীর কাছে। গত শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টার দিকে রোগীর স্বজনের চাপে একজন আয়া এসে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে মৃত সন্তান প্রসব করায়। মৃত সন্তানের চোয়াল কাটা ছিলো। এসময় ওই আয়ার সাথে শুধুমাত্র একটা বাচ্চা ছাড়া আর কেউ ছিলো না। নরমাল ডেলিভারি করানোর সময় ওই আয়া প্রসূতি মায়ের টিয়ার ছিড়ে ফেলে। ফলে শুরু হয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। এমতাবস্থায় কোনো চিকিৎসক না থাকায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই প্রসূতি মা। তখন তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল মালিকের স্ত্রী পারভীন এসে ক্ষতস্থানে সেলাই দিয়ে দ্রুততর সময়ে মৃত অবস্থায় রিমাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামিয়া হাসপাতালের একজন রিসিপশনিস্ট জানান, রিমা নামের ওই রোগী আমাদের এখানে ভর্তি হয়েছিল। সেসময় আমাদের এখানে ডাক্তার ছিলো না। আমাদের এখানকার নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক হিসাবে ডা. ফয়সাল আরেফিন আছেন। এছাড়া আর স্থায়ী কোনো ডাক্তার নেই। বিভিন্ন ডাক্তার এসে অপারেশন করে চলে যায়।
এবিষয়ে নিহত রিমার স্বামী জহুরুল ইসলাম বলেন, গতকাল আমার স্ত্রীকে ওই হাসপাতালে খাইয়ে দিয়ে এসেছি। ভালো মানুষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায়ই আমার স্ত্রী মারা গেছে। আমার সাথে ৮ হাজার টাকা কন্ট্রাক্ট ছিলো। মারা যাওয়ার পরেও তারা জোর করে ৫ হাজার টাকা নিয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে ইসলামিয়া হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে, এম মশিউর রহমান নিজামের সাথে যোগাযোগ করতে হাসপাতালে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ইসলামিয়া হাসপাতালের কথিত সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আরেফিন বলেন,আমি গতকাল সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলাম। এই রোগী সম্পর্কে আমি শুনেছি। আমি এখানকার নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক। তবে সিভিল সার্জনের নিকট আমার নিয়োগপত্র দেওয়া আছে কি-না জানি না। এছাড়াও আমি কুষ্টিয়া, খোকসার বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করি।
এব্যাপারে পরিচালকের ভাই পরিচয় দিয়ে রিপন নামে একজন সংবাদ প্রকাশ না করতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন লোভনীয় প্রলোভন দেখান।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ শুনেছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে পরিদর্শনে যাবো। তারপর আপনাদের জানানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।