Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

যে কারণে মেট্রোরেলের টিকেট মেশিনে বিভ্রাট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:০২ পিএম

সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে ঢাকার মেট্রো ট্রেন চলাচলের শুরুতেই স্টেশনের স্বয়ংক্রিয় টিকেট মেশিন অচল হয়ে পড়ায় কাউন্টারে তৈরি হয়েছে প্রচণ্ড ভিড়।অনেকেই বড় নোট ঢুকিয়েছে, কিন্তু ভাড়ার নির্ধারিত টাকা নেওয়ার পর ফেরত দেওয়ার মত পর্যাপ্ত টাকা মেশিনের ভেতরে নেই, এ কারণে সমস্যা হচ্ছে।

স্টেশনের মূল গেইটের বাইরেও বহুদূর ছাড়িয়েছে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের লাইন। শুরুতেই এমন বিভ্রাটে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছেন তাদের অনেকে। আগারগাঁও স্টেশনে মেট্রোরেল প্রকল্পের এক কর্মকর্তা বলছেন, বড় নোট দিয়ে মেশিনে টিকেট কাটার সময় বাকি টাকা ফেরত দিতে পারছে না মেশিন, কারণ ভেতরে পর্যাপ্ত টাকা রাখা হয়নি। সমস্যা হচ্ছে সে কারণেই। আগারগাঁওয়ে স্টেশনে টিকিট বিক্রয় মেশিন কাজ না করায় সকালে মেজাজ হারাতে দেখা যায় ডিএমটিসিএল'র জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) ইফতেখার হোসেনকে। যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে উচ্চকণ্ঠে বকাঝকা করছিলেন তিনি।

ওই কর্মকর্তাকে ইফতেখার হোসেন বলছিলেন, “আমরা এক মাস ধরে বলছি অপারেশনে যাব, কিন্তু আপনারা কী করলেন, এখন প্রেশার চারদিকে। মেশিনগুলো অচল হয়েছে কেন? কী করেন?” জবাবে ওই কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, “লোড পর্যাপ্ত নেই, বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। আমরা কী করব?” এক পর্যায়ে ইফতেখার হোসেন উত্তেজিত হয়ে ‘ফালতু কথা, ফালতু কথা’ বলে দ্রুত ভেতরে চলে যান।

যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার ওই কর্মকর্তা ডেপুটেশনে আছেন মেট্রোরেল প্রকল্পে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, টাকা লোড না থাকার কারণে মেশিনগুলোতে ঝামেলা হচ্ছে। অনেকেই বড় নোট ঢুকিয়েছে, কিন্তু ভাড়ার নির্ধারিত টাকা নেওয়ার পর বাকি টাকা ফেরত দেওয়ার মত পর্যাপ্ত টাকা মেশিনের ভেতরে নেই, এ কারণে সমস্যা হচ্ছে। আগারগাঁওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে তিনটি এবং উত্তর প্রান্তে তিনটি অটোমেটেড টিকেট মেশিন রয়েছে। এগুলোর পাশেই রয়েছে একটি করে কাউন্টার। সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে হাতে টিকেট কেনা যায়। মেশিন কাজ না করায় ভিড় লেগে গেছে সেই কাউন্টারে।

স্টেশনের ভেতরে মো. শামীম নামের এক যাত্রী বলেন, “২০ মিনিট ধরে আমি কাউন্টারে দাঁড়িয়ে আছি, উনারা টিকেট দিতে পারছেন না। মেশিনগুলো নষ্ট।” সকালে আগারগাঁও স্টেশনে এক যাত্রী জানালেন, অটোমেটেড মেশিনে ৬০ টাকা দেওয়ার পর আর টিকিট আসেনি। ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর তাকে কাউন্টার থেকে হাতে হাতে টিকিট দেওয়া হয়। স্টেশন কন্ট্রোলার সোহেল রানা বলেন, “টিকেট কাটতে সাময়িকভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।”

সকাল ৮টায় আগারগাঁও স্টেশনের গেইট খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তা প্রায় আধাঘণ্টা পর খুলে দেওয়া হয়েছে। তার দুই-তিনঘণ্টা আগে থেকেই গেইটের বাইরে লম্বা সারিতে অপেক্ষমাণ ছিলেন শতাধিক উৎসুক যাত্রী। স্টেশনের গেইট খুলে দেওয়ার সময় ঘনিয়ে আসলে যাত্রীদের চাপ আরও বেড়ে যায়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দেরিতে গেইট খোলার কথা জানিয়ে আগারগাঁও স্টেশন ম্যানেজার সোহেল রানা বলেন, তিনটি মেশিন নষ্ট হয়েছে। সাধারণ যাত্রীদের চাপ ম্যানুয়াল কাউন্টারগুলোতেও বেড়েছে। এজন্য তারা প্লাটফর্মে যাত্রীদের ঢোকানোর সময় নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

সোহেল বলেন, “আমাদের প্রকৌশলীরা কাজ করছেন, কিছুক্ষণের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।” স্টেশনের গেইটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন ইমাম হোসেন ও আব্দুর রহমানের মত শতাধিক যাত্রী; নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে তাদের অনেকের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। শুরুর দিকে ভেতরে যাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। পরে লাইনে থাকা যাত্রীদের ৮-১০জন করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ