পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আফ্রিকার কেনিয়াতে পৃথিবীর উচ্চত্তম পর্বত কিলিমাঞ্জারোর পাদদেশের কাছে অ্যাম্বোসেলি জাতীয় উদ্যানটি ১শ’ ৫১ বর্গমাইল বিস্তৃত সমভূমি, জলাভূমি, নদী এবং একটি মৌসুমী হ্রদ অঞ্চল। শিশুদের গল্পের বইয়ের মতো বৈচিত্র্যময় গেজেল, উটপাখি, ফ্ল্যামিঙ্গো, সিংহ, মহিষ এবং জলহস্তীতে সমৃদ্ধ এ ভূস্বর্গকে একটি মরুভূমিতে পরিণত করে দিয়েছে সুদীর্ঘ খরা। খরার তৃতীয় বছরের মুখে থাকা অঞ্চলটির দিগন্তজুড়ে এখন শুষ্ক ধুলা আস্তর এবং বাতাসে পঁচা প্রাণীদেহের দুর্গন্ধ। এ বছর এই অঞ্চলে হাজার হাজার প্রাণী মারা গেছে। আফ্রিকার এ অঞ্চলে শুধু বণ্যপ্রাণীরাই বিপর্যয়ে পড়েনি, এদের সাথে রয়েছে গবাদি পশু এবং মানুষও এবং এটি ঘটেছে পানিশূন্যতার পাশাপাশি চারণভূমি এবং সবুজ ঝোপঝাড়ের অভাবের কারণে। আফ্রিকার এ অঞ্চলে যা ঘটছে, তা আবহাওয়া পরিবর্তন সৃষ্ট খরার পরিণতি। বন্যজগত গাইড মারেম্বে বলেন, ‘তারা শোকে মুহ্যমান। তারা মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে।’ বৃষ্টির অভাব ও দাবদাহ বৃদ্ধির কারণে মানুষ ও বন্যপ্রাণীরা ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছে। যেহেতু আরো বেশি লোক এ অঞ্চলে জড়ো হয়েছে, তারা তাদের নিজস্ব খাদ্য সরবরাহ রক্ষা করতে তাদের সম্পত্তি, ফসল এবং পশুপাখিকে শিকারী এবং বণ্যপ্রাণীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য তাদের খামার এবং বসতবাড়িগুলোতে বেড়া দিয়ে ঘিরেছে। কিন্তু এটি প্রাচীন বুনোপথ বা জলাগুলোর মুখ বন্ধ করে দিয়েছে, যেগুলো বণ্যপ্রাণীরা কয়েক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করেছে এবং এটি তাদের চারণভূমির ক্ষেত্রকে সঙ্কুচিত করে দিয়েছে। ফলে অঞ্চলটি একটি বিচ্ছিন্ন ভূমিতে পরিণত হয়েছে, যেটি খরার কারণে আর কারোর জন্য খাবারের সংস্থান করে দিতে পারে না।
হোহেনহেইম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র পরিসংখ্যানবিদ এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. জোসেফ ও. ওগুতু বলেন, ‘তারা খাবার বা পানি পাচ্ছে না। খরা অনেক প্রাণীকে সেই গ্রামগুলোর কাছাকাছি যেতে বাধ্য করছে যেখানে মানুষ বাস করছে এবং অনেক প্রাণীকে মেরে ফেলা হয়েছে’। সঙ্কুচিত হওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে মানুষ এবং বণ্যপ্রাণীদের সঙ্ঘাতের এ মিশ্রণের সাথে যোগ হয়েছে কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধ সৃষ্ট সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক মন্দা, যা পুরো অঞ্চলটিকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। মৃতপ্রায় গবাদিপশুগুলোর পড়তি বাজার দর, আশঙ্কাজনকভাবে কমে আসা শস্যের ফলন এবং কাজের সুযোগগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, বেআইনি পশু চোরাচালান এ অঞ্চলের মানুষের ওপর আরেকটি চাপ সৃষ্টি করেছে। ওগুতু বলেন, ‘মানুষ মরিয়া হয়ে ওঠে, তাই তারা বন্যপ্রাণী হত্যার পথ বেছে নেয়। পরিবর্তিত আবহাওয়া কেবল খাদ্য নিরাপত্তাকেই প্রভাবিত করছে না, এটি আরও বাস্তুচ্যুতি ও সঙ্ঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি খুবই ভয়ানক।’
চারণভূমি ও জলাভূমি নিয়ে পশুপালক এবং কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা কয়েক বছর ধরে এখানে প্রবল হয়ে উঠেছে, কিন্তু খরা ইতোমধ্যে এ অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এটি আরো খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। যুক্তরাজ্যের পরামর্শ সংস্থা চ্যাথাম হাউসের পরিবেশ ও সমাজ কার্যক্রমের প্রধান টিম বেন্টন বলেছেন, ‘খরা সমগ্র অঞ্চলকে খাদ্য ঘাটতি এবং সামাজিক অস্থিরতার দিকে পরিচালিত করছে, শেষ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যকে নতুন আকার দিচ্ছে এবং ইউরোপ জুড়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। সম্ভবত এটি ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রেও অবদান রেখেছে। এটি একটি আবহাওয়া-প্ররোচিত খাদ্য-মূল্য বৃদ্ধি ছিল।’ তিনি বলেন, ‘এটি এ ধরনের জিনিসগুলোর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবকে চিত্রিত করে। বর্তমান সঙ্কট আরো বেশি ঘনিভূত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’ সূত্র : ইন্সাইড ক্লাইমেট নিউজ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।