Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অব্যবস্থাপনায় যানজট

চট্টগ্রামে মিলছে না উন্নয়নের সুফল ব্যাহত আমদানি রফতানি কার্যক্রম

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না। নানা উদ্যোগেও কমেছে না যানজট। অব্যবস্থাপনা আর বিশৃঙ্খলায় যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে। এর ফলে উন্নয়নের সুফল মিলছে না। যানজটে আটকে নাকাল হতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। বিঘ্নিত সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য। জটে আটকা পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। অপচয় হচ্ছে জ্বালানি তেলের। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বন্দর নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে বিগত দশ বছরে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। হয়েছে ফ্লাইওভার, সম্প্রসারণ করা হয়েছে কয়েকটি সড়ক। তবে অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীতা এবং এই কারণে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার কারণে হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাচ্ছে না।
টানা তিন দিন সরকারি ছুটির পর গতকাল সোমবার কর্ম দিবসের শুরুতে নগরীতে তীব্র যানজট শুরু হয়। বিশেষ করে নগরীর প্রধান সড়কের কাটগড় থেকে সিইপিজেড, বারিক বিল্ডিং, আগ্রাবাদ, দেওয়ান হাট থেকে মুরাদপুর, বহদ্দারহাট পর্যন্ত তীব্র জট দেখা যায়। এছাড়া পোর্ট কানেকটিং রোড, জাকির হোসেন সড়ক, বায়েজিদ সড়ক, বহদ্দারহাট থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা সিএন্ডবি হয়ে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়কেও ছিল যানজট। মাঝিরঘাট সড়ক হয়ে কদমতলি, আইস ফ্যাক্টরি রোড হয়ে নিউ মার্কেট, আন্দরকিল্লা, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ এলাকায় যানজট আর বিশৃঙ্খলা ছিল দিনভর। নগরীর প্রবেশ পথ একে খান মোড়, কর্ণফুলী সেতুর উত্তর প্রান্ত, কালুরঘাট এবং অক্সিজেন মোড় এলাকায় যানজট এবং বিশৃঙ্খলা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। সবকটি প্রবেশ পথে অঘোষিত টার্মিনাল। এর ফলে মহানগরীতে প্রবেশ ও বের হতে যানবাহনগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। এর প্রভাবে আশপাশের এলাকায় সড়ক থেকে অলিগলি পর্যন্ত জটলা লেগেই আছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, অপরিকল্পিত এবং সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি, যানবাহনের তুলনায় অপ্রতুল সড়ক, সড়ক ফুটপাত বেদখল, অবৈধ রিকশা ও ব্যাটারিচালিত টমটমসহ ছোট যানবাহনের ঢল এবং ট্রাফিক আইন মেনে না চলার প্রবণতা যানজট অসহনীয় হয়ে পড়েছে। নগরীর প্রধান সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে প্রায় চার বছর ধরে। এখন নগরীর টাইগার পাস মোড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এর ফলে আগ্রাবাদ থেকে দেওয়ান হাট মোড় হয়ে লালখান বাজার পর্যন্ত রাতে দিনে যানজট হচ্ছে। এর প্রভাবে টাইগার পাস হয়ে আমবাগান থেকে পাহাড়তলী পর্যন্ত এবং কদমতলি থেকে স্টেশন রোডে যানজট হচ্ছে। অথচ এই এলাকায় দুটি ফ্লাইওভার আছে। আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট হলেও প্রায় ফাঁকা থাকছে কদমতলী ফ্লাইওভার। একই চিত্র দেওয়ানহাট ফ্লাইওভারের। হাতে গোনা কিছু যানবাহন চলাচল করে এই দুটি ফ্লাইওভারে। চৌমুহনী থেকে কদমতলী পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ করা হয়েছে অনেক আগে। সে সড়কটি এখন অনেকটা বেদখল। অথচ দেওয়ান হাট থেকে টাইগার পাসের যানজট এড়াতে এই সড়কটি বিকল্প হতে পারে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পোর্ট কানেকটিং রোড সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এরপর থেকে সড়কটি অঘোষিত টার্মিনাল হিসেবে ভারী যানবাহনের দখলে চলে গেছে। বন্দর নিমতলা থেকে বড় পোল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে হাজার হাজার ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান, লরি রাখা হয়। পুলিশের অভিযানে সরে গেলেও ফের সড়কে ফিরে আসে। নগরীতে স্থায়ী কোন টার্মিনাল না থাকায় সড়কে টার্মিনাল গড়ে উঠেছে। নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় সব সড়ক এখন আমদানি রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের দখলে। সেখানে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি কনটেইনার ডিপো। ডিপোর আশপাশের সড়কে রাখা হয় ভারী যানবাহন। সিটি সার্ভিসের বাস মিনি বাস রাখা হয় পতেঙ্গা ও কাটগড় এলাকার বিভিন্ন সড়কে। এতে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ