অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও রাষ্ট্র মেরামতে জাতীয় ঐকমত্যের দাবিতে ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এবি পার্টি।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয় নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।
লিখিত বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘সংবিধানে যাই থাকুক না কেন নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জন্য ১৯৯০ সালে কোনো প্রতিবন্ধকতা মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়নি। সেখানে প্রধান বিবেচ্য বিষয় ছিল জনতার আকাঙ্ক্ষা। অতএব কোনো দ্বিধা ছাড়াই এই দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব এবং অতীত আন্দোলনের পথ ও কৌশল অনুসরণ করে নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই জনগণের বিজয় অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।’
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘
বিএনপি এই দাবিতে যে যুগপৎ আন্দেলনের ডাক দিয়েছে তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে যেহেতু যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে এবি পার্টির সাথে
বিএনপির কোনো আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় হয়নি সেহেতু এবি পার্টি তার নিজস্ব নীতি ও পরিকল্পনার আলোকে অতীতের মত স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। এ লক্ষ্যে আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় এবি পার্টি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অন্তর্বর্তীকালীন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্র মেরামতে জাতীয় ঐকমত্যর দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছে।’
বিএনপির সাথে কি অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে কিংবা আলোচনে হবে- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় হয়নি। তবে আমরা তাদের যুগপৎ আন্দোলনকে স্বাগত জানাই। আর এই আন্দোলনের সাথে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশের মানুষের মৌলিক দাবি দুটি। একটি হলো স্বৈরশাসন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে এই সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সেই সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। প্রয়োজনে এই নির্বাচন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। দ্বিতীয়টি হলো- বাংলাদেশ রাষ্ট্র মেরামত করার জন্য একটি ঐকমত্যের রূপরেখা, যা হবে সকল দলের সম্মতিতে একটি জাতীয় অঙ্গীকার। যে অঙ্গীকার হবে অলঙ্ঘনীয়। কারণ অতীতেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা প্রতিশ্রুতি ভুলে আবার স্বৈরতান্ত্রিকতায় ফিরে গেছে। নব্বইয়ের তিন জোটের প্রণীত রূপরেখা পরবর্তী সরকার লঙ্ঘন করে জাতির সাথে প্রতারণা করেছে। অতএব এবার আর কাউকে সে সুযোগ দেওয়া যাবেনা। রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা স্পষ্ট করেই জনগণের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।’
মঞ্জু বলেন, ‘প্রশাসন যন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে এ ধরনের নিবর্তনমূলক মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় প্রতিবাদ এবং ধিক্কার জানিয়ে এসেছি।
বিএনপির সাথে আমাদের রাজনৈতিক মত-পার্থক্য থাকলেও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের দায় থেকে আমরা
বিএনপির আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ও তাদের উপস্থাপিত ১০দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছি। যুগপৎ আন্দোলনের ডাক দিয়ে
বিএনপি গত ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে রূপরেখা দিয়েছে- আমরা তাকেও স্বাগত জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির আহবায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, গোলাম ফারুক, আনিছুর রহমান কচি প্রমুখ।