Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেনের বাইরে পুতিনের ভিন্ন ধরনের বিজয়

পশ্চিমা ভণ্ডামি ও ফাঁপা প্রতিশ্রুতিতে ক্লান্ত আফ্রিকা

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের সাথে সাথে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বিশ্বকে একটি নতুন শাসন ব্যবস্থার ধারণা দিয়েছেন। আফ্রিকাতে রাশিয়া ইতিমধ্যেই সেটির পথ দেখিয়েছে। একটি ভিন্ন ধরনের রাশিয়ান বিজয় ইতিমধ্যেই স্বর্ণ এবং হীরা সমৃদ্ধ মধ্য আফ্রিকার রাজধানী বাঙ্গুইতে প্রদর্শিত হচ্ছে, যা বলে দিচ্ছে যে, উন্নয়নশীল বিশ্বের অন্যান্য জায়গার মতো পশ্চিমারা এই অঞ্চলের আনুগত্যও হারিয়ে ফেলেছে। ফলে, ২০১৪ সাল থেকে এই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশে শান্তি বজায় রাখার জন্য জাতিসংঘের ১৪ হাজার ৫শ’রও বেশি শান্তিরক্ষীদের চেয়ে রাশিয়ানদের আরও কার্যকর উপস্থিতিকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
এই যুগের জটিল চ্যালেঞ্জগুলির বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তথাকথিত গণতন্ত্র এবং ক্রমবর্ধমান স্বৈরাচারের মধ্যকার যুদ্ধটি একটি ব্যর্থতায় পরিণেত হয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধু, এমনকি এর কারণেও মধ্য আফ্রিকানরা পশ্চিমা মূল্যবোধের সত্যতা সম্পর্কে তীব্রভাবে সন্দিহান। অনেক মধ্য আফ্রিকান এই যুদ্ধের জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ করে না। ইউক্রেনের যুদ্ধের মতো করে আফ্রিকার যুদ্ধগুলি পশ্চিমা রাজধানীগুলিকে খুব ওবশি প্রভাবিত করেনি। ফলে, পশ্চিমা ভণ্ডামি এবং ফাঁপা প্রতিশ্রুতিতে ক্লান্ত হয়ে বহু লোক প্যারিসে তাদের প্রাক্তন উপনিবেশকারীদের বিরুদ্ধে পুতিনকে সমর্থন করতে ঝুঁকেছিল। মার্চে আফ্রিকার ৫৪ টি দেশের মধ্যে মাত্র ২৮টি ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নিন্দা করতে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছে।
১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে খুব অঞ্চলটি কমই স্থিতিশীল। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র দীর্ঘস্থায়ী অভ্যুত্থান এবং বিদ্রোহের একটি দেশ যা অরক্ষিত সীমানা এবং ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য সরকারী দপ্তরগুলির বিপর্যয়মূলক শাসনে ভুগছে। দীর্ঘ সময় ধরে একটি বিরতিহীন যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা মধ্য আফ্রিকার এক ডজনেরও বেশি সশস্ত্র গোষ্ঠী একটি বহুস্তরীয় সংঘাতের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে হাজার হাজার লোককে হত্যা করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২০১৪ সাল থেকে সেখানে ১শ’ ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বার্ষিক বাজেট সহ একটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী সেখানে নামানো হয়, যার মধ্যে রাশিয়ার শান্তিরক্ষীরাও ছিল। তাদের ধ্বংস বা ছত্রভঙ্গ করতে যারা রাশিয়ানরা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বাঙ্গুইয়ের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত আঞ্চলিক রাজধানী ব্রিয়ার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা অনারে বেন্দয়েত বলেছেন, ‹আমরা রাশিয়ানদের কল্যাণে শান্ত হয়েছি। তারা জবরদস্ত এবং তারা দক্ষ।’
২০৫০ সালের মধ্যে আফ্রিকা মানবজাতির এক চতুর্থাংশ ধারণ করবে। এখানে চীন বিশাল বিনিয়োগ, নির্মাণ এবং ঋণের মাধ্যমে তার প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছে। বাইডেন ‘ইউএস-আফ্রিকা লিডারস সামিট’ ডেকেছেন এবং ১৫শ’ কোটি ডলারের নতুন ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। কারণ অঞ্চলটি এখন পশ্চিমাদের ঔপনিবেশিকতার উত্তরাধিকারকে কাটিয়ে উঠতে সচেষ্ট। বিপরীতে, পুতিনের রাশিয়া কখনও সেতু বা শিল্প প্রতিষ্ঠান তৈরি করে না, তবে এটি নিরাপত্তা পরিষেবাগুলিতে অসাধারণভাবে দক্ষ। এটি তার কৌশল ও পেশী শক্তির মাধ্যমে বন্ধুত্বকে জয় করে, যা এখন মালি এবং সুদান সহ এক ডজনেরও বেশি আফ্রিকান দেশে প্রসারিত। সিরিয়ার মতো দেশগুলি যে ফলাফল চায়, রাশিয়া তার মিত্রদের জন্য তা নিশ্চিত করে। এর বিপরীতে রাশিয়ান মিত্ররা দেশটির প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ করে। সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ