পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ঘোষণা দিয়ে পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন; সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেয়ে শেখ হাসিনা ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের দশম বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়লেন। বিশ্বে কোনো রাজনৈতিক দলের নিয়মতান্ত্রিক ভাবে সম্মেলনের মধ্যেমে ১০ বার সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে কিনা জানা যায়নি। তবে দেশের রাজনীতিতে এটা রেকর্ড। ভবিষ্যতে এই রেকর্ড ভাঙ্গা দূরহ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের (প্রতিষ্ঠার সময় আওয়ামী মুসলিম লীগ) নাম বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতাসহ গত ৭৪ বছরে সব আন্দোলন-সংগ্রাম, অর্জন, আর ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে জড়িয়ে রয়েছে। দেশের শোষিত, বঞ্চিত আর খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে দলটির হাত ধরে ৭ দশকের বেশি সময়ে অসংখ্য নেতা তৈরি হয়েছেন। গ্রামাঞ্চল তথা তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসা এসব নেতাকে ধীরে ধীরে দল পরিচালনায় অন্তর্ভুক্ত করে আওয়ামী লীগও সফল হয়েছে। গতকাল শনিবারের সম্মেলনসহ দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৭৩ বছরে ২২টি জাতীয় সম্মেলন হয়েছে। আর হয়েছে ৭টি বিশেষ সম্মেলন। এ সম্মেলনগুলোতে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ দেশবরেণ্য অনেক নেতাই এ দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ ১০ বার দলের সভাপতির দায়িত্ব পেলেন। এর আগে মওলানা ভাসানী ৪ বার ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩ বার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
’৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় শেখ হাসিনা ছোটবোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বিদেশে ছিলেন। দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বিরোধ ও মতভেদের মধ্যে ১৯৮১ সালে ১৩তম জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্বে আনা হয় তাকে। ১৯৮১ সালের ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ছিল ৩ হাজার ৮৮৪ জন। সভায় শেখ হাসিনা সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে টানা সভাপতির পদে নির্বাচিত হয়ে আসছেন শেখ হাসিনা।
মূলত আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার দিক থেকে পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে ছাড়িয়ে গেছেন কন্যা শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর থেকে শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্যসহ সব পদ মিলিয়ে ২৬ বছর দলের রাজনীতিতে ছিলেন। অতপর আওয়ামী লীগের বিলুপিত ঘটিয়ে তিনি বাকশাল গঠন করেন। অপরদিকে সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা ৪১ বছর ধরেই দায়িত্ব পালন করছেন।
আওয়ামী লীগের সদ্যবিলুপ্ত কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ওই কমিটিতে শেখ হাসিনাই সব থেকে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এই কমিটিতে তার থেকে সিনিয়র ছিলেন কেবল মরহুম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। গত জুলাইয়ে তিনি মারা মারা যান। এছাড়া দু-একজন রাজনীতিতে শেখ হাসিনার থেকে সিনিয়র হলেও অতীতে তাদের অন্য দলে রাজনীতির অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও শেখ হাসিনার থেকে দু’একজন সিনিয়র হলেও কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা মিলেছে তার পরেই। শেখ হাসিনার হাত ধরেই তারা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা হয়েছেন।
আওয়ামী লীগে বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর সভাপতি পেয়েছেন ৬ জন। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ৪ বার সভাপতি হন। অবশ্য ১৯৫৭ সালে সভাপতি হওয়ার পর কিছুদিন পরই তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে ন্যাপ গঠন করেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩ বার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ একবার দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ভাসানী দল ত্যাগ করলে তর্কবাগীশ ওই সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এর বাইরে মিজানুর রহমান চৌধুরী পৃথক আওয়ামী লীগ গঠন করলে একবার আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হিসেবে দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।