আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ আগের অধিকাংশ সদস্যকে বহাল রেখেই নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে তাদের নাম ঘোষণা করেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। ভোটে পাস হওয়ার পর পৃথকভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। পরে বাকিদের নাম ঘোষণা করেন সভাপতি শেখ হাসিনা।

এ সম্মেলন থেকে টানা দশমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অপরদিকে টানা তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। কণ্ঠ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ হাসিনা নতুন কমিটিতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বিভিন্ন পদের দায়িত্ব প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন। বিদায়ী কমিটির সভাপতিমণ্ডলী থেকে বাদ পড়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ, রমেশ চন্দ্র সেন ও আবদুল মান্নান খান। সভাপতিমণ্ডলীতে নতুন যুক্ত হয়েছেন বিগত কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।

গত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়েছেন সাখাওয়াত হোসেন শফিক। নতুন কমিটিতে এ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন আগের কমিটির ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। একজন ছাড়া অন্যান্য সাংগঠনিক সম্পাদক পদে কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিগত কমিটির উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন নতুন কমিটিতে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। এছাড়া আগের কমিটির শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজকে দলের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য করা হয়েছে। ২২তম জাতীয় সম্মেলনে ঘোষিত নতুন কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, শ্রী পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, ড. কামরুল ইসলাম, ড. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন, সিমিন হোসেন রিমি।

চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আগে যারা ছিলেন তারাই বহাল আছেন। শেখ হাসিনা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ধারাবাহিকভাবে ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল-আলম হানিফ, আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মণির নাম ঘোষণা করা হয়।
নতুন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকরা হলেন, আহমদ হোসেন, বি. এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এস. এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আগের কমিটির এইচ. এন. আশিকুর রহমানকে।

সম্পাদকমণ্ডলীর আগের কমিটিতেও ছিলেন এবং নতুন কমিটিতে একই দায়িত্বে বহাল আছেন অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শ্রী অসীম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম এবং উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান। এদিকে শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-প্রচার সম্পাদক পদ আপাতত খালি থাকবে। এ দুটি পদের বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান শেখ হাসিনা। এছাড়া যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। সম্মেলনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। এগুলো পরে চূড়ান্ত করা হবে জানানো হয়।