পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘদিন থেকে নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের সম্ভাবনাময় আবাসন খাত। সে অবস্থা থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে খাতটি। দীর্ঘদিন বিক্রি থমকে থাকার পর জমে উঠেছে শীতকালীন আবাসন মেলা। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত সবার স্বপ্ন নিজের একটা বাড়ি। আর স্বপ্ন বাস্তবায়নে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলছে রিহ্যাব ফেয়ার-২০২২। মেলার তৃতীয় দিনে গতকাল সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় জমজমাট হয়ে উঠেছে মেলাপ্রাঙ্গণ। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ফ্ল্যাট ও প্লটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরছে ক্রেতাদের কাছে। অন্যদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও মেলায় ছোট ফ্ল্যাটের চাহিদা বেশি। সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় অনেকেই এসেছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। আবার কেউ কেউ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে। এক ছাদের নিচে গৃহঋণসহ নির্মাণ সামগ্রীর সমাহার থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় করতে প্রতিবছরের মতো এবারও ক্রেতারা ছোট ফ্ল্যাটের খোঁজ করছেন বেশি। আগতদের অনেকেই ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা প্লট দেখছেন, কেউ কেউ মেলাতেই বুকিং সম্পন্ন করছেন।
মেলায় কথা হয় মিলন খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, অনেক আগেই পরিকল্পনা ছিল এই নগরীতে আবাসনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু ব্যস্ততা আর অর্থের স্বল্পতার কারণে এতদিনে হয়ে উঠেনি। নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে এবার ফ্ল্যাটের স্বপ্ন দেখছি। এজন্য মেলাতে এসেছি, ঘুরে ঘুরে দেখছি। মোহাম্মদপুর এলাকার কোনো ফ্ল্যাট সাধ্যের মধ্যে হলেই বুকিং দেবো।
যাত্রাবাড়ী থেকে আবাসন মেলায় এসেছেন তানিয়া বেগম। তিনি বলেন, ছোট বা মাঝারি আকারের ফ্ল্যাট খুঁজছি। গত দুই দিন অফিস থাকায় মেলায় আসতে পারিনি। ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় এসেছি। উত্তরাতে কয়েটি কোম্পানির প্রজেক্ট মানানসই দেখলাম। কিছুটা সময় নিচ্ছি, প্রয়োজনে কাল আবারও দেখব। তবে পরিবার নিয়ে যেহেতু এসেছি আশা করছি পছন্দের মতো কোনো একটি ফ্ল্যাটের জন্য বুকিং দিতে পারব। প্রতিটি নাগরিকের স্বপ্ন সুন্দর জায়গায় একটি নিজস্ব বাসস্থান। সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে অনেক নাগরিক খোঁজ করেছেন ছোট ফ্ল্যাটের। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ছাড় দিচ্ছে মেলায় অংশ নেয়া ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেক কোম্পানি দিচ্ছেন নানা ধরনের উপহার।
এদিকে রাজধানীর নিকেতন, মোহাম্মদপুর, মগবাজার ও পল্টনে পাঁচটি কন্ডোমিনিয়াম প্রকল্প থেকে মেলায় বিক্রির জন্য ৩৫টি প্রকল্প এনেছে শীর্ষ আবাসন কোম্পানি আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন।-এর মধ্যে ১৫টি আবাসিক প্রকল্পে ৩০০টির বেশি অ্যাপার্টমেন্ট ও ২০টি বাণিজ্যিক প্রকল্পে পাঁচ লাখ বর্গফুটের মতো জায়গা বিক্রির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের ব্যবসায় উন্নয়ন বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে গ্রাহকদের একটি বড় অংশ চান এক ভবনেই যেন সব সুবিধা থাকে। এ কারণে উন্নত জীবনযাপনের উপযোগী করে প্রকল্প নিতে হচ্ছে আমাদের। তবে সব শ্রেণির গ্রাহকের সামর্থ্যরে কথা বিবেচনা করেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছেন বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে মেলায় আবাসনের জমি বিক্রির বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছে আমিন মোহাম্মদ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মেলায় প্রতিটি জমি প্রকল্পের বুকিংয়ে গ্রাহকেরা কিস্তিসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন্স) মোহাম্মদ তানভীরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিক্রি বেশ ভালো। একই সঙ্গে ভালো মানের ক্রেতারা বেশি এসেছেন। তবে বেশিরভাগেরই মধ্যম মানের ফ্ল্যাটে আগ্রহ। তিনি বলেন, ক্রেতারা মেলায় এসে আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছেন। তারা যে ঠিকানা দিচ্ছেন সেটা ধরেই পরে আমাদের কর্মকর্তারা যোগাযোগ করবেন। ক্রেতারা সাইট ভিজিট করবেন। পছন্দ হলে তারপর দরদাম এবং ক্রয় কার্যক্রম।
আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহ-সভাপতি ও মেলা বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, এবারের মেলায় ক্রেতার জন্য নানা অফার নিয়ে এসেছে আবাসন কোম্পানিগুলো। আগামীতে এত কম দামে আর ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট দিতে পারবে না কোম্পানিগুলো। কারণ ড্যাপ সমস্যা আর নির্মাণ সামগ্রীর ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে আগামীতে ফ্ল্যাটের দাম বাড়বে।
মেলা বাস্তবায়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও রিহ্যাব সহ-সভাপতি (প্রথম) কামাল মাহমুদ বলেন, এবারের মেলায় আবাসন খাতের কোম্পানিগুলো ছোট ও মাঝারিসহ সব ধরনের ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট ও ফ্লট নিয়ে এসেছে। তুলনামূলক দামও কম। এবারের মেলা মানে ক্রেতার সামনে কম দামে ফ্ল্যাট কেনার দারুণ সুযোগ। সাধ্যের মধ্যে ভালো মানের ফ্ল্যাট দিতে কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ছাড় দিচ্ছে। মেলায় অংশ নেয়া ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো বুকিংয়ের সঙ্গে রেখেছে নানা উপহার। তাই সাধারণ ক্রেতাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে; সাধ্যের মধ্যে পছন্দের ফ্ল্যাট খুঁজে নিতে মেলায় চলে আসুন। এদিকে মেলায় কম সুদে হাউজ লোন সহায়তা দিচ্ছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে ২১ ডিসেম্বর শুরু হওয়া রিহ্যাব ফেয়ার শেষ হবে আগামীকাল রোববার দুপুর ২টায়। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান থাকার কারণে ২৫ ডিসেম্বর রাত ৯টার পরিবর্তে দুপর ২টায় মেলা সমাপ্তি হবে। এবারের মেলায় মোট ১৮১টি স্টল রয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। তবে মেলার শেষদিন রোববার মেলা চলবে বেলা ২টা পর্যন্ত। এবারের মেলায় দুই ধরনের টিকিট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি, অন্যটি মাল্টিপল এন্ট্রি। সিঙ্গেল টিকিটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। এন্ট্রি টিকিটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুঃস্থদের সাহায্যে ব্যয় করা হবে। এবছর প্রতিদিন র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। র্যাফেল ড্রতে এলইডি টিভি, ওয়াশিং মেশিন এবং ফ্রিজ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।