পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়। পথের ক্লান্তি ভুলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানুষ ছুটছে সৈকত, পাহাড়, ঝরণা, পার্কে। দেশি-বিদেশি পর্যটকের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্পোরেট হাউস, ক্লাব ও পেশাজীবী সংগঠন মেতে উঠেছে বনভোজনে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে চলছে শিক্ষা সফর। জমজমাট হয়ে উঠেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য। হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রেস্ট হাউসগুলোতে এখন ঠাঁই নেই অবস্থা। তবে সড়ক-মহাসড়কে যানজট, অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া এবং অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে ভ্রমণপিপাসুদের।
বার্ষিক শেষ, স্কুল-কলেজ বন্ধ। এখনো শুরু হয়নি শীতের কামড়। রাজনৈতিক অস্থিরতাও নেই। সব মিলিয়ে ঘুরে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় এখন। আর এ সুযোগ হাতছাড়া করছেন না ভ্রমণপিপাসুরা। পরিবারের সদস্য কিংবা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ছুটছেন পর্যটন কেন্দ্রে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে বেড়াতে আসছেন পাহাড়, সাগর, ঝরণার জেলা চট্টগ্রামে। অতিথিদের বরণে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও আয়োজনের কমতি নেই। পর্যটক আকর্ষণে ঘোষণা করা হয়েছে নানা অফার। এসব অফার চলবে থার্টিফাস্ট নাইট পর্যন্ত।
চট্টগ্রামের অন্যতম পর্যটনস্পট পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এখন পুরোদমে জমজমাট। সিডিএর উদ্যোগে সৈকত সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। বর্ণিল সাজের সৈকতে প্রতিদিনই নামছে মানুষের ঢল। তীরে বসে উত্তাল ঢেউ আর সূর্যাস্ত দেখা, সাগরে গোসল কিংবা সৈকতে ঘোড়ার পিঠে ছুটে চলার লোভ সামলাতে পারছেন না কেউ। দ্রুতগতির স্পিডবোটে উত্তাল সাগরে ছুটে চলার ব্যবস্থাও আছে।
আদিগন্ত বিস্তৃত সৈকতে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, বহির্নোঙরে দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের বহর। লাল সূর্য অস্ত যাওয়ার সাথে সাথে এসব জাহাজের বর্ণিল আলো অন্যরকম এক আবহ সৃষ্টি করে সৈকতে। পতেঙ্গা সৈকতের পাশাপাশি নেভাল সৈকত, সিটি আউটার রিং রোড এবং বোট ক্লাবেও পর্যটকের ভিড়। বিশেষ করে নিরাপদ নেভাল সৈকতে অনেক রাত পর্যন্ত পর্যটকরা পরিবারের সদস্যের নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারছেন। সৈকতে পর্যটকদের জন্য রয়েছে সুস্বাদু সব খাবারের আয়োজন।
আনোয়ারার পারকি সৈকত, নগরীর কাট্টলী সৈকত, রাসমনি ঘাট এলাকায়ও পর্যটকের ভিড়। সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী ও বাঁশবাড়িয়া সৈকতে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়, ইকোপার্ক আর সুবিশাল সমুদ্র সীতাকুণ্ডকে করেছে অনন্য। মীরসরাইয়ের মহামায়া লেক, খৈয়াছড়া ঝর্ণাসহ উত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও মানুষের ভিড় জমছে। রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল এভিয়ারী পার্ক, ফটিকছড়ির বিভিন্ন চা বাগান, বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত, ইকোপার্কসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও উপচেপড়া ভিড়।
নগরীর আগ্রাবাদ-জাম্বুরি পার্ক, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, নেভাল জাদুঘর, জিয়া স্মৃতি জাদুঘর, বাদশা মিয়া সড়কের ওয়ার সেমিট্রি, কালুরঘাট এমিউজমেন্ট পার্ক, আমবাগানের শেখ রাসেল পার্ক, ডিসি হিল, বাটালি হিল, জিলাপির পাহাড়, ভাটিয়ারি গলফ ক্লাব এলাকা, সিআরবি সাত রাস্তার মাথা, ফিরিঙ্গি বাজার নেভাল-২, কর্ণফুলী সেতু ও বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সংযোগ সড়ক এলাকায়ও পর্যটকের ভিড় জমছে প্রতিদিন। বিনোদন কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি বারো আউলিয়ার চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোতেও পর্যটন আসছেন। ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, চন্দনপুরা জামে মসজিদ, বায়েজিদ বোস্তামি দরগা, হযরত আমানত শাহর (রহ.) মাজার, মিসকিন শাহ মসজিদ, ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবারসহ ইসলামী স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখছেন পর্যটকেরা।
পর্যটকে ঠাসা নগরীর অন্যতম বিনোদ কেন্দ্র ফয়’স লেক। পার্কের পাশাপাশি সী-ওয়ার্ল্ডে আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠছে সব বয়সের মানুষ। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঘন বন আর টিলায় ঘেরা স্বচ্ছ লেকের পানিতে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দে আত্মহারা অনেকে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়ও দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়।
কর্ণফুলী পার্কসহ নগরীর পার্কগুলোতেও শিশু-কিশোরদের পাশাপাশি সব বয়সের মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। পর্যটকের ভিড় বাড়লেও পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগে পড়ছেন অনেকে। সড়কে যানজট, ভাঙাচোরা সড়ক, আবার গণপরিবহন সঙ্কটে অনেকের আনন্দ ভ্রমণ মøান হয়ে যাচ্ছে। কোন কোন পর্যটন এলাকায় পচা-বাসি কিংবা মানহীন খাবার বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। তবে করোনার ধাক্কা কাটিয়ে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো জমে ওঠায় এ খাতে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রাণ ফিরে এসেছে। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধারা অব্যাহত থাকলে বিগত দিনের লোকসান কাটিয়ে উঠা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।