পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমেরিকা ও কানাডা খুনিদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির জনকের সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের ফেরতে দিতে বলি, তারা (আমেরিকা-কানাডা) দেয় না। মানবাধিকার লংঘনকারীর মানবাধিকার রক্ষা করছে তারা। গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘন করে না, সুরক্ষা দেয়। মানবাধিকার নিশ্চিত করে। শুধু বেঁচে থাকাই তো সুরক্ষা না। খাদ্যশস্য উৎপাদন করছি। মানুষকে বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি। করোনায় বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি। স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমি দেখি বিএনপির লোকেরা গুম ও খুন নিয়ে কথা বলে। এ দেশে গুমের কালচার শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। তখন যারা কারাগারে ছিল তাদের কাছে আমরা অনেকবার শুনেছি। একেক রাতে জিয়াউর রহমান শত শত সেনাবাহিনীর অফিসার, সৈনিক, বিমান বাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও হত্যা করেছেন, গুম করেছেন। শুধু তাই নয়। ফাঁসি দেওয়া, একসঙ্গে ১০ জন করে ফাঁসি দিয়েছেন তিনি। ফাঁসি দেওয়ার পর সেই লাশ তাদের আত্মীয় স্বজন তো পায়নি। সেই লাশ কোথায় নিয়ে মাটি চাপা দিয়েছেন এখন পর্যন্ত কেউ সেটা জানে না। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের এমন কোনো কারাগার নেই যেখানে ফাঁসি দেননি। ক্যান্টনমেন্টে ফায়ার স্কয়ারে নিয়ে ফায়ার করে লাশ গুম করেছেন। মৃতের পরিবার কোনো দিন লাশ দেখতে পারেনি, জানেও না কী ছিল তাদের অপরাধ। এমনও অবস্থা হয়েছিল, মামলা শুরুর আগেই বিচার শেষ! এমনও শোনা যায় যে, কাটা চামচ দিয়ে শসা খেতে খেতে ফাইল সই করেছিলেন জিয়া। কারণ প্রেসিডেন্টের সই ছাড়া তো কিছু হতো না। জিয়া ক্ষমতা দখল করে একই কায়দায় এদেশের মানুষকে বার বার হত্যা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক অফিসার, যারা জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে অস্ত্র তুলেছিল তাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে, সংবিধান লংঘন করে, আর্মি রুল লংঘন করে ক্ষমতায় এসেছিলেন জিয়া। পথ দেখিয়েছিল বেঈমান, মোনাফেক, খুনি মোশতাককে। আর সেই মোশতাকের যখন পতন হলো, আমরা দেখলাম জিয়াউর রহমান একদিন ঘোষণা দিয়ে বসলেন আজ থেকে তিনিই প্রেসিডেন্ট। সায়েম সাহেব ছিলেন প্রেসিডেন্ট, তার উপরে অস্ত্র ধরে প্রথমে চিফ মার্শালের পদটা কেড়ে নেন জিয়া। তারপর তাকে বলেন, আপনি আর প্রেসিডেন্ট নন, আপনি আর দেশ চালাতে পারবেন না। এ বলে নিজেই ক্ষমতা দখল করেন জিয়া।
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। শুধু বেঁচে থাকাই তো মানবাধিকার নয়। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা দিয়েছি। আমরা বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি, স্বল্পমূল্যে দিচ্ছি। বিনা পয়সায় করোনা টিকা দিয়েছি, ওষুধ দিয়েছি, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। আমরা মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করেছি। দেশের গড় আয়ু বাড়িয়েছি। মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়েছি। এমন কোনো নদী নেই যার ওপর ব্রিজ করিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান গণ্ডগোল লাগিয়ে রেখেছিলেন। আমরা সেখানে শান্তি চুক্তি করি। সেই শান্তিচুক্তিতেও বাধা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। সে দিন হরতালও করেছে। ১৮০০ লোক সেদিন আমার কাছে আত্মসমর্পণ করে। আমরা তাদের পুনর্বাসন করেছি। দেশবাসীর প্রতি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের সর্বনাশটা কী করলাম। খাদ্যের উৎপাদন বাড়ালে সর্বনাশ হয়ে গেল। তবে হতে পারে, যাদের আত্মসম্মানবোধ নেই তাদের কাছে। আমরা যখন দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ঘোষণা করি তখন বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো নয়। তাদের নীতি হলো বিদেশ থেকে ভিক্ষা আনা। আত্মসম্মানবোধ নিয়ে দেশ দাঁড়াক সেটা তারা চায় না। তিনি আরো বলেন, আমরা দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। আমরা যখন এই প্রকল্প হাতে নিই তখন এটা নিয়ে কত কথা। আজ তো এটার সুফল সবাই লাভ করছে।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, তিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে আজ দণ্ডিত। সেই মামলা কিন্তু আমরা দিইনি। দিয়েছে খালেদা জিয়ার প্রিয় মঈন উদ্দীন, ফখরুদ্দীন, ইয়াজউদ্দীনরা।
বিএনপি বুদ্ধিজীবিদের প্রতি কোনো সম্মান জানাতে জানে না দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বুদ্ধিজীবিদের প্রতি তাদের সম্মান আসবে কেমন করে, এইট পাস আর মেট্রিক পাস। আমরা জ্ঞানী-গুণীদের প্রতি সম্মান জানাই। তাদের পরিবারের প্রতি সম্মান জানাই। যারা বাংলাদেশকে বুদ্ধিজীবীশূন্য করেছিল তারা আজ ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার বিরূপ মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা কীভাবে পদ্মা সেতুতে চড়েন, তাদের কি লজ্জা হয় না?
আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।