Inqilab Logo

সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বুয়েট ছাত্র ফারদিনের মৃত্যু

র‌্যাব ও ডিবি বলছে আত্মহত্যা

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূরের মৃত্যু আত্মহত্যা বলে দাবি করেছে র‌্যাব। একইভাবে ডিবি জানিয়েছে, ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন। র‌্যাব শুরু থেকেই ঘটনার ছায়া তদন্ত করছে।
প্রায় এক মাসের তদন্তের পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে ঘটনার দিন ফারদিনের চনপাড়া যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ হওয়ার আগে ফারদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একা একাই ঘুরে বেরিয়েছেন। তদন্তের এ পর্যায়ে বোঝা যাচ্ছে, ফারদিন হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি। তিনি হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল বুধবার রাতে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ।

ডিবি প্রধান বলেন, ফারদিন তার বান্ধবী বুশরাকে রামপুরা নামিয়ে দেওয়ার পর ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন। তিনি কেরানীগঞ্জ ব্রিজের পাড়ে গেছেন। এ সময় তিনি অনেকের সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলেছেন। কিন্তু কোনো ব্যক্তিকে তার সঙ্গে আমরা দেখতে পাইনি।
পুরোটা রাত ফারদিন এলোমেলো ঘুরে বেরিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিস্টার্ব মাইন্ড না থাকলে কেউ এভাবে ঘুরে বেড়ায় না। রামপুরা থেকে কেরানীগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ থেকে জনসন রোড, জনসন রোড থেকে গুলিস্তান, গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী এরপর তার নিজের বাসা পার হয়ে চলে যান ডেমরা ব্রিজে।

তাকে কেউ ধরে নিয়ে গেছেন অথবা তিনি নিজে থেকেই চনপাড়া গেছেন এ ধরনের কোনো আলামত বা সিসিটিভি ফুটেজও আমরা পায়নি। ফারদিনের রেজাল্ট ধারাবাহিকভাবে খারাপ হচ্ছিল। প্রথম সেমিস্টারে ৩.১৫ তারপর কমতে কমতে ২.৬৭ হয়। যেটা বাসার লোকজন বা আত্মীয়-স্বজন কেউ জানতো না। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে স্পেন যাওয়ার জন্য তার ৬০ হাজার টাকা প্রয়োজন ছিল। যেটা জোগার করতে হিমশিম খাচ্ছিল, যদিও তার বন্ধুরা ৪০ হাজার টাকা দেয়। বুশরাও জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছিলেন ফারদিন হতাশায় ভুগছিলেন।

বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ, ফারদিনের মৃত্যুর রাতে তার ঢাকা শহরে ছোটাছুটি, ব্রিজের কাছ পর্যন্ত যাওয়া, তার হতাশা, মানসিক অবস্থা সবমিলিয়ে আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয়েছে এটা একটা ‘সুইসাইড কেস’। হারুন-অর-রশীদ বলেন, ব্রিজের মাঝামাঝি পর্যন্ত গিয়েছিলেন ফারদিন, সেখানেই ছিল তার সর্বশেষ অবস্থান। এরপর সেখান থেকে একটা পানির শব্দ হয়েছে। সেখান থেকেই আমরা মনে করছি এটা একটা সুইসাইড।

এদিকে র‌্যাব জানিয়েছে, ঘটনার রাত ২টা ১ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা হতে ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায় সিসি ফুটেজে। ঘটনার রাত ২.২০ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ^রোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায় ফারদিন। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় যে, রাত ২.২৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিল। ২.৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসে ফারদিন। রাত ২.৩৪.০৯ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে ফারদিন এবং রাত ২.৩৪.১৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেয়। ঝাঁপ দেয়ার পর রাত ০২.৩৪.২১ মিনিটে শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে ফারদিন। রাত ০২.৩৫.০৯ ঘটিকায় ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও রাত ০২.৫১ ঘটিকায় ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ