পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনগণ এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন, নির্যাতন, নিপীড়ন, স্বৈরশাসন থেকে মুক্তি চায়, পরিবর্তন চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, জনগণ এখন পরিবর্তন চায় এবং সেই পরিবর্তন কারা করছে? একটু ইতিহাস দেখেন বাকশালের হাত থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আবার এরশাদের সময়ে এদেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে স্বৈরতন্ত্র হয়েছিল। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে সংসদীয় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজকে বিএনপি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক সকল শক্তির দায়িত্ব এই সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা এবং জনগণ যে পরিবর্তন চায় সেই পরিবর্তনের সূচনা করা।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে বর্তমান সরকারকে বিদায় করতে হবে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা যেভাবে জীবন দিয়ে আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, সেই স্বাধীনতার মূলমন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই মুক্তিযোদ্ধাদের, এই বুদ্ধিজীবীদের সেই স্বপ্ন আমাদেরকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। সেটা বাস্তবায়ন করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এজন্য আমরা সারাদেশের মানুষ প্রস্তুত।
তিনি বলেন, আমরা শুরুতে ১০ দফা প্রণয়ন করেছি। আমরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে জনগণের যে সরকার হবে, সেই সরকারে যদি জনগণ বিএনপিকে, বেগম খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে নির্বাচিত করে তাহলে দেশ আমরা কীভাবে মেরামত করব তার রূপরেখা ইনশাল্লাহ অচিরেই জনগণ ও জাতির সামনে উপস্থাপন করব। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ‘মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীদের সাহস’ ধারণ করে ‘গণতন্ত্র মুক্ত’ করার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা বিভাগীয় সমাবেশে দেখেছি, জনগণ পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে যারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, অর্থনীতি ধবংস করেছে, বিচার বিভাগকে ধবংস করেছে, সমাজকে কলুষিত করেছে তারা এই রাষ্ট্রকে মেরামত করতে পারবে না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরেও আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। অথচ গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সাম্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পাকিস্তানি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে একাত্তরে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথম যারা ক্ষমতায় ছিল তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নষ্ট করেছে। সবার অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। রক্ষীবাহিনী গঠন করে ২০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। সেই আওয়ামী লীগ আবারও ১৪ বছর ধরে গায়ের জোরে দেশ শাসন করছে। ২০১৪ সালে বিনাভোটে সংসদ গঠন করেছে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতেই ডাকাতি করেছে। আবারও একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করছে তারা। বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে। আইনজীবী, সাংবাদিক রাজনীতিবিদ সবাইকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে বন্দি করেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করেছে। এই সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। তাদের অর্থ পাচার এত বেশি যে, দেশের অর্থনীতি এখন ধ্বংসের কিনারে। আজকে যারা গণতন্ত্র, অর্থনীতি, সুবিচার নষ্ট করেছে তাদেরকে দেশের জনগণ আর দেখতে চান না। সুতরাং সবার দায়িত্ব হচ্ছে এই স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা। তা না হলে কারো রেহাই নেই।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আগামীতে নিরপেক্ষ নির্বাচনের অধীনে বিএনপি সরকার গঠন করলে দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে সেই রূপরেখা আমরা ঘোষণা করব। আসুন সবাই বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রতিষ্ঠার শপথ নিই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, আসুন আমরা নতুনভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার শপথ করি। যেভাবে একাত্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছিলাম।
আলোচনাসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ও সাংবাদিক এম এ আজিজ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সকালে খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ড. মোশাররফ বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারব না। এই ফ্যাস্টিট সরকারের বিদায় ছাড়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে না। সে লক্ষ্যে এগিয়ে আসার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাই। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসেনর উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. রফিকুল ইসলাম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আমিনুল হক, কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।