Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারত থেকে আমদানি করা চূর্ণ পাথর খালাস দিচ্ছে না কাস্টমস

প্রতিদিন ৩৬ হাজার টাকা বন্দর মাশুল চার্জ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানিকৃত দুই হাজার ৭০০ মেট্রিক টন ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথর গত একমাস ধরে খালাস দিচ্ছে না আখাউড়া স্থলবন্দরের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আমদারিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, এর ফলে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। বন্দর কর্তৃপক্ষকেই প্রতিদিন বন্দর মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে তাদের। এ জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন তারা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এ জন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।

এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টার প্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার নির্মিত চার লেন মহাসড়ক উন্নত করণে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন নির্মাণ কাজে ব্যবহারের জন্য আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারত থেকে চূর্ণ পাথর আমদানি করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর থেকে চারটি দাপে ২ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন চূর্ণ পাথর ভারতীয় ট্রাকে করে আখাউড়া বন্দরে আনলোড করা হয়। ভারতীয় নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠান এফকন ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স লিমিটেড কর্তৃপক্ষ পাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে বাংলাদেশে আখাউড়া স্থলবন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্টের দায়িত্বে আছে মেসার্স খলিফা এন্টার প্রাইজ নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান।

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, অনেক ব্যবসায়ী এই বন্দর দিয়ে পাথর আমদানি করার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন। আমি মনে করি এই বন্দরের যে অচল অবস্থা তা পাথর আমদানির মাধ্যমে চাঙ্গা হয়ে উঠার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু এই বন্দরে পাথরের চালানটি আটকিয়ে যাওয়ার কারণে সকল ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই এই জটিলতা সরকার দ্রুত সমাধান করে এই বন্দরের কর্ম চাঞ্চলতা ফিরে আসুক।

সিএন্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিনিধি মো. মোজাম্মেল হক জানান, আমরা প্রথমে যখন ৭০০ মেট্রিক টন গুঁড়া পাথর আমদানি করি তখন কাস্টমস সুপারের কাছে ছাড়পত্র আনার জন্য গেলে তিনি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনারের সাথে আলোচনা করার জন্য বলেন। পরবর্তীতে আমরা ডেপুটি কমিশনার সাথে কথা বললে তিনি ছাড়পত্র জন্য একটি লিখিত আবেদন করার জন্য বলেন। এ সময় তিনি দুই হাজার ৭০০ মেট্রিক টনের পুরো চালানটি নিয়ে আসার জন্য আমাদেরকে বলেন। আমরা তার কথামত পুরো চালানের পাথর স্থলবন্দরে নিয়ে আসার পর তিনি আমাদেরকে জানান এই পণ্যটি এই বন্দর দিয়ে আমদানির যোগ্য নয়। আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যদি এই গুঁড়া পাথর আমদানি না থাকে তাহলে চার ধাপে বিল অফ এন্ড্রি কেন করল কাস্টমস। তাছাড়া কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আইসি কপিতেও স্বাক্ষর করে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে কপি কেন পাঠিয়েছে। এতে করে আমাদের ব্যবসায়ীরা অনেক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।

আখাউড়া কাস্টমস রাজস্ব (স্থল শুল্ক) কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমদানিকৃত পাথর চূর্ণ পাথর দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে অনুমোদন থাকলেও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পারমিট নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবিহিত করলে চার সদস্যের কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে প্রতিবেদনও পাঠানো হয়েছে। মোটামুটি আমরা বিষয়টি গুছিয়ে নিয়ে এসেছি। আশা করছি খুব দ্রুত সমাধান হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ