Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি অফিসে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালানো হয়েছে আজ যাবে ১৬ দল

বিএনপি কার্যালয় পরিদর্শনে গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম


নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা, লুটপাট ও তছনছ করা হয়েছে সেটাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বলে অভিহিত করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ যেভাবে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে তা ভয়াবহ। মানুষকে উসকানি দিয়ে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গতকাল সোমবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা অবিলম্বে খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

জাতীয় গণফ্রন্টের টিপু বিশ্বাস বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন অনিবার্য। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব বন্দি নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে গণসমাবেশ শেষ করেছে।এ জন্য তাদের ধন্যবাদ। আজকে পুলিশ হলো ডাকাত। তারা যা করেছে এটা নজিরবিহীন। জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা হলো। এটা কোনো সভ্য দেশে ভাবা যায়? এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিএনপির অফিসে যারা হামলা ও তছনছ করেছে তাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিএনপির প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে সরকারের প্রতি আহ্বান আপনার নিজেরাও দুঃখ প্রকাশ করুন। তাই না হলে গণজাগরণের মধ্য দিয়েই আপনাদের বিদায় হবে।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমরা সংহতি জানাতে এসেছি। যা দেখলাম, ‘৭১-এর তাণ্ডবলীলাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই সরকারের পতন ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি আসবে না। খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাসসহ সব বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করছি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেভাবে হামলা চালিয়ে লণ্ডভণ্ড করা হয়েছে সেটা একেবারেই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। তারা জিয়ার ম্যুরাল ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করছে তা ভয়াবহ। তারা দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আসলে সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংসদে আছেন তাদেরও পদত্যাগ করার আহ্বান জানাই। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ ঘটাতে হবে। তা না হলে সবার ওপর আঘাত আসবে।

এসময় বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আ ক ম মোজাম্মেল হক, মৎস্যজীবী দলের মোঃ আব্দুর রহিম প্রমুখ।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের পর সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে পুলিশী অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শনে যান গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের শীর্ষ নেতারা। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, কেন্দ্রীয় নেতা আকরামুল হাসান ও আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারি বাম ঐক্যের নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানান।

গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন অর রশিদ চৌধুরী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ এবং প্রগতিশীল ডেমোক্রেটিক পার্টির হারুন আল রশিদ খান। বাম ঐক্যের নেতারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশী তান্ডবের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, ক্ষমতাসীন ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করতে হবে। এই আন্দোলনে সবাইকে শরিক হয়ে অগণতান্ত্রিক সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে।

আজ যাবে ১৬ দল: গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশে তল্লাশিতে লণ্ডভণ্ড বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শনে আজ ১৬টি রাজনৈতিক দলের নেতারা নয়াপল্টনে যাবেন। এর মধ্যে দুপুর ১২টায় যাবেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপি মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী মোহাম্মদ আবু তাহের।

বেলা ১টায় যাবেন এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফুর রহমান, ইসলামী ঐক্য জোট চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব, ন্যাপ-ভাসানী চেয়ারম্যান এডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুউদ্দিন আহমদ মনি, মুসলিম লীগ মহাসচিব এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, পিপলস লীগের মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জমিয়তে ওলামা ইসলাম মহাসচিব মহিউদ্দিন একরাম, ইসলামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল কাশেম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এম এন শাওন সাদেকী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ