পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অনেক উন্নত দেশ অর্থনৈতিকভাবে বিপদে এবং সমস্যার সম্মুখীন, তাদের রিজার্ভ কমছে। সে অবস্থায় আমরা বলতে পারি যে বাংলাদেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে পেরেছি। গতকাল মিরপুর সেনানিবাসের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২২ ও ‘আমর্ড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স’ এর গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হচ্ছে যখনই দেশ একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায় তখন সকলের কাছে (স্বার্থান্বেষী মহল) এটা পছন্দ হয়না, এটা হলো বাস্তবতা। জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ গড়ে তুলে প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর কোভিডের আগে আওয়ামী লীগ তুলেছিল ৮ শতাংশের ওপরে। কিন্তু কোভিড-১৯ ও এর পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে স্যাংশনে অনেক উন্নত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও বিপযস্ত হয়ে পড়েছে। বিশ^ব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ধনী দেশগুলোও আজকে বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি সাশ্রয়ের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাদের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে, রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। এই অবস্থায়ও বাংলাদেশকে এখনো আমরা স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে সক্ষম হয়েছি।
এ সময় নানা কথা বলে ভয়-ভীতি ছড়ানোর অপচেষ্টায় কান না দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধকালীন এই সংকটে অনেক ধনী দেশ জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরাও নানা পদক্ষেপ নিই। অথচ জ্বালানি নিয়ে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে মানুষকে পক্ষে টানা হচ্ছে।
দেশের অতীত ও বর্তমান রিজার্ভের তুলনামুলক চিত্র তুলে দরে শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে একুশ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় রিজার্ভ পেয়েছিল মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তখন তার সরকার সেই রিজার্ভ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার যখন সরকার গঠন করে তখন রিজার্ভ পায় ৫ বিলিয়ন ডলার যেটাকে টানা সরকারে থাকায় তাঁরা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হন।
তিনি বলেন, করোনার সময় যাতায়াত ও আমদানি বন্ধ ছিল। এ জন্য রিজার্ভ জমে যায়। পরে সব চ্যানেল খুলে গেলে আমাদের আমাদানিতে রিজার্ভ ব্যয় করতে হয়েছে। ভ্যাকসিন কেনা, টিকা গবেষণায় অর্থ দেয়াসহ করোনা চিকিৎসা সরঞ্জম ক্রয় করতে আমাদের অনেক টাকা লেগেছে। এগুলোর জন্য আমাদের ডলার খরচ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিলাসিতা পরিহার করে সকলকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান জানান। কারণ বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছে। বিশ্বটা এখন গ্লোবাল ভিলেজ এবং একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। সেটা মাথায় রেখেই তিনি সকলকে সাশ্রয়ী হবার অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ ও সম্পদ আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলবো না, নিজেরা ফসল উৎপাদন করবো এবং নিজেদের দেশকে গড়ে তুলবো। এই আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে চলতে পারলেই ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, কেউ রুখতে পারবেনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম। তখনো অনেকে মুচকি হেসেছিল। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ সারা বিশ্বের কাছে একটা দৃষ্টান্ত। গ্রামে বসে ছেলে-মেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ডলার আয় করে। এই সুযোগ আমরা করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমার ও আমার পরিবারের সবার বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক অপবাদ দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু প্রমাণ হয়েছে, এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নিজের অর্থে পদ্মা সেতু করবো। তখন অনেকে বলেছে, এটা কখনো সম্ভব নয়। অনেক দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে যখন আলোচনা করেছি, তখন বলেছে, এটা সম্ভব নয়। অসম্ভবকে সম্ভব করাই বাঙালির চরিত্র। এটা আমরা করতে পারবো। এটা আমরা করেছি।
যে কোন দুর্যোগে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়ায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা এজন্য দেশে যেমন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে তেমনি বিদেশের শান্তি রক্ষা মিশনে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, এটা সবসময় মনে রাখতে হবে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছে। কাজেই আমাদের দেশের মান মর্যাদা সবসময় সমুন্নত রাখা এবং তাদের পাশে থাকা ও সহযোগিতা করা সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে সনদপ্রাপ্তদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি কোর্স পরিচালনাকারি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী পরে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স, ডিএসসিএসসিতে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) এবং ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) গভর্নিং বডির ১৯তম যৌথ সভায় যোগ দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।