পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর লালদীঘি ময়দানে নির্বাচনী জনসভায় চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ হাতে তুলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কথা রেখেছেন, সে অঙ্গিকার পূরণ করেছেন। সেই থেকে টানা ১৪ বছরে এই অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, একাধিক ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চার লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, সিটি আউটার রিং রোড, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ নানা মেগা প্রকল্পে বদলে গেছে চট্টগ্রাম। বদলে যাওয়া এই চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ডে আগামীকাল রোববার জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন তিনি আরো ছোট বড় ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
চট্টগ্রামকে ঘিরে তিন মেয়াদে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আর উন্নয়নের বদলে চট্টগ্রামবাসীর কাছে নৌকায় আবারও ভোট চাইবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এমন তথ্য জানিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, চট্টগ্রামবাসীকে উজাড় করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তার কাছে আর কিছু চাওয়ার নেই। এখন প্রধানমন্ত্রীকে দেয়ার পালা। চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে লাখে জনতা জনসভায় শরিক হবেন বলেও প্রত্যাশা নেতাদের। জনসভার প্রচারেও প্রাধান্য পাচ্ছে উন্নয়ন ইস্যু। বড় বড় বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ছবি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকার ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন দলের নেতারা। আগামী জাতীয় নির্বাচনের বাকি আরো অন্তত এক বছর। তবে যশোরের জনসভায় নৌকায় ভোট চেয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি জনতাকে ফের নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দলের নেতারা বলছেন, চট্টগ্রামের জনসভায়ও তিনি ভোট চাইবেন। সেই সাথে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের চিত্রও তুলে ধরবেন।
বিগত প্রায় দেড় দশকে চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতিতে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি প্রকল্প ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। নগরীতে চারটি ফ্লাইওভার হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে। সিটি আউটার রিং রোড, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিং রোড, মেরিনাস সড়কসহ নগরীর সড়ক অবকাঠামোয় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকায় পানিবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন হয়েছে। এখন ছয় লেন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সড়ক টানেল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ শেষ পর্যায়ে।
চট্টগ্রামের দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণও এগিয়ে যাচ্ছে। মীরসরাইতে দেশের সর্ববৃহৎ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। আনোয়ায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় পানি সঙ্কটের অবসান হয়েছে। ওয়াসার পয়ঃনিস্কাশন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ হয়েছে। বে-টার্মিনালের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেন করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রকল্পও এগিয়ে যাচ্ছে। মহানগরীতে মেট্রো রেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাছাই শুরু হচ্ছে। চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আরো কিছু নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দিতে পারেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, তিনি ওই দিন আরো ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। তিনি লালদীঘি মাঠে নির্মিত ৬ দফা মঞ্চসহ চট্টগ্রামের ১৮টি স্কুল ও কলেজ ভবনের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হবে আধুনিক জাতিসংঘ পার্ক এবং মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণসহ ৪টি প্রকল্পের। উদ্বোধন করা হবে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাগবোট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প ও ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প।
ওইদিন বিকাল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন। পলোগ্রাউন্ডে এর আগে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের মহাসমাবেশে শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছিলেন। তার ঠিক ১০ বছর ৯ মাস পর ৪ ডিসেম্বর আবার পলোগ্রাউন্ডে আসছেন শেখ হাসিনা। জনসভা সফলে সর্বাত্মক প্রস্তুতি চলছে। মহানগরীতে এখন উৎসবের আমেজ।
সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়া হচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। জনসভাকে সামনে রেখে গতকাল নগরীর জামালখানে সিনিয়র ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। জনসভায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, জনসভায় আমরা সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করছি না, আওয়ামী লীগ আগেও এটা করেনি। কিন্তু যেহেতু তিনি প্রধানমন্ত্রী, তাই উনি যেসব জনসভায় যান সেসব জায়গায় বরং আমাদের অসুবিধা হয়। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার একটি বিষয় আছে। যারাই সমাবেশে আসেন, সবাইকে নিরাপত্তার জন্য পরীক্ষা করে তারপর ঢোকানো হয়। অনেকে এই ঝামেলা এড়াতে ভেতরে ঢোকে না। আরও অনেক অসুবিধা আছে। গত ১২ অক্টোবর একই মাঠে বিভাগীয় সমাবেশ করে বিএনপি। আওয়ামী লীগের জনসভা বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি কি না জানতে চাইলে স্বপন বলেন, বিএনপি যে সমাবেশ করেছে সেটি ছিল বিভাগীয় মহাসমাবেশ। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের জনসভার কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির সমাবেশে তাদের দলের মহাসচিব পর্যায়ের লোকজন থাকেন। আর আমাদের জনসভায় থাকবেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান এবং উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।