পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মূলত শাসনতান্ত্রিক তথা সাংবিধানিক সংকট। এ সংকট এমন স্তরে উপনীত হয়েছে, এর সমাধান কেবল দলবদল বা সরকার বদলের প্রচলিত রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে সভার মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। গতকাল শুক্রবার ‘সংবিধান সংস্কার করবে কারা: জাতীয় সংসদ না কি সংবিধান (সংস্কার) সভা?’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে রাষ্ট্রচিন্তা।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের নানা মহলে এখন রাষ্ট্র ও সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে এক ধরনের ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এই সংস্কার হবে সেই প্রশ্নে অস্পষ্টতা কাটেনি। সংবিধান সংশোধনী একটি আইনি পরিভাষা যা ইতিমধ্যেই বিদ্যমান সংবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। অন্যদিকে সংবিধান সংস্কার একটি রাজনৈতিক পরিভাষা। এর সীমা আদালত দ্বারা নির্ধারিত নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে জনগণ দ্বারা নির্ধারিত। জনগণই ঠিক করবে সংবিধানের কোন অংশ কতটা সংস্কার করতে হবে।
রাষ্ট্রচিন্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য আর রাজী। নির্ধারিত আলোচকদের মধ্যে ছিলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের পরে ত্রয়োদশ সংশোধনী দেশকে সবচেয়ে বেশি অস্থিতিশীল করেছে। আমাদের নাগরিক সত্ত্বাকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে যে জমিদারি প্রথা বলবৎ আছে তা বদলানো জরুরি। কাজেই রাষ্ট্র হতে গেলে আমাদেরকে রাষ্ট্র নিয়ে চিন্তা করা শুরু করতেই হবে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, সংবিধানের সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে সংকটকে আরও ঘনীভূত করা হয়েছে। অবশ্যই সংবিধান সংস্কার করতে হবে। বর্তমান সংকট নিরসনে এর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে সংস্কার হবে, তা আরও ভাবতে হবে। আলোচনা করলে সংকট সমাধানের পথ বের হয়ে আসবে।
আবু সাঈদ খান বলেন, সংশোধনীর বেড়াজাল থেকে মুক্ত হওয়া প্রয়োজন। গণপরিষদ আর জাতীয় সংসদের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। বাহাত্তরের সংবিধানের অনেক স্পিরিটের আবেদন এখনও ফুরিয়ে যায়নি।
অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, এ মুহূর্তে জনগণকে মুক্তি দিতে হলে সংবিধান (সংস্কার) সভায় যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের আবেগ অনুভূতি ও মর্যাদাকে ধারণ করে এমন গণতান্ত্রিক শক্তিদের সমন্বয়ে সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামোর সংস্কার আশু জরুরি। অতীতে জনগণ রক্ত দিয়ে সংবিধান সংশোধন করেছিল। সেটা একটা বিভক্ত এবং বিতর্কিত রায়ে জনমতের বিপক্ষে বাতিল করা হয়েছে। কাজেই সংশোধনী দিয়ে বর্তমান সংকটের সমাধান হবে না। জনগণের পক্ষের, রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা নিশ্চিত করার সংবিধান চাইলে আমাদের সংবিধান (সংস্কার) সভাই করতে হবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামোগত পরিবর্তনে সংবিধান (সংস্কার) সভা গঠনের নির্বাচন করতে হবে। এটা গুটিকয়েক বোদ্ধাদের বিষয় নয়, সমগ্র জনগণের বিষয়। তাই আমরা বাংলাদেশের জনগণের সামনে এই বিতর্ক নিয়ে যেতে চাই। আমাদের আকাংক্ষা এ বিতর্ক জাতীয় পর্যায়ে বিস্তৃত হোক ও আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানসূত্র বের হয়ে আসুক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।