Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঝটিকা সফরে আজ আসছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশ্ব কূটনীতিতে আলোচনায় রোহিঙ্গা সমস্যা

| প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : মিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর সংঘটিত অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘ। রাখাইন রাজ্যের এই সমস্যা মোকাবেলায় সরকারী নীতির নিন্দাসহ তা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি তাদের। অপরদিকে, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো মারসুদি বিষয়টি নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রা’দ আল হুসেন এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে মিয়ানমার সরকার হালকাভাবে নিলে তা ওই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। সপ্তাহখানেক আগে বিরোধপূর্ণ আরাকান রাজ্য পরিদর্শনের জন্য ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেত্রী নোবেলজয়ী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিলো।
বিদেশি সাংবাদিক ও ত্রাণকর্মীদের বিরোধপূর্ণ এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে জেইদ বলেন, আরাকানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে সেখানে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকদের প্রবেশের আবেদন খারিজ করা হচ্ছে, যা নির্যাতিতদের জন্য অবমাননাকর এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের আবেদনও কেন মঞ্জুর হচ্ছে না প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতির শঙ্কা করেন।
কয়েকদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে রোহিঙ্গা গ্রাম  পোড়ানোর সাথে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ দেয়।
এদিকে রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে আজ সোমবার দুদিনের ঝটিকা সফরে ঢাকা আসছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেতনো এলপি মারসুদি। তিনি মিয়ানমার হয়ে ঢাকা আসবেন। বাংলাদেশ সফরকালে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী  এ এইচ এম মাহমুদ আলীর সঙ্গে আগামীকাল ২০ ডিসেম্বর বৈঠক করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, তার সফরটি তাৎপর্যপূর্ণ কারণ মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি আজ রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার জন্য এক বৈঠক ডেকেছেন। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওই বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে বাংলাদেশে আসবেন।
কি বিষয়ে আলোচনা করতে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝটিকা সফরে বাংলাদেশে আসছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি হতে পারে তারা মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনও বার্তা নিয়ে আসছে। অথবা তারা এ অঞ্চলের পরিস্থিতি বোঝার জন্য আসছে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান রোহিঙ্গা-সংকট নিয়ে আলোচনার জন্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক ডেকেছে মিয়ানমার। আজ ১৯ ডিসেম্বর ইয়াঙ্গুনে এ বৈঠক হবে। মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনীর অভিযানে গত দুই মাসে ২০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে ওই অঞ্চল থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। যাদের অনেকেই বাংলাদেশে ঢুকেছে।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছে, সেনারা তাদের স্বজনদের হত্যা করার পাশাপাশি নারী ও শিশুদের ধর্ষণ করছে, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশগুলো কূটনৈতিক চাপে ফেলেছে মিয়ানমারকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ বৈঠক ডেকেছেন সু চি।
এদিকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। মানবিক কারণে তাদের অনেককেই বাংলাদেশে স্থান দেয়া হলেও বিদ্যমান প্রায় ৫ লাখের মতো রোহিঙ্গার সঙ্গে নতুন করে আরও চাপ নেয়ার সামর্থ্য নেই বলে মনে করছে বাংলাদেশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ